ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়া “হ্যাপি” ভিডিওটির একটি সংস্করণ তৈরি করার কারণে ছয়জন ইরানিকে কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। এ ঘটনার ঠিক এক মাস পর বিশ্বকাপে ইরানের জাতীয় দলকে সমর্থন জানিয়ে বাজনা বহুল একটি মিউজিক ভিডিও তৈরি করার কাজে জড়িত থাকার দায়ে ইরানে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আজম ব্যান্ড মিউজিক ভিডিওটি প্রযোজনা করেছে। এক ডজনেরও বেশি দেশে বসবাসরত ইরানিদেরকে এই গানের বিভিন্ন অংশে নাচতে এবং গাইতে দেখা গেছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই গানের দুইজন অভিনেতা এবং পরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ইরানি পুলিশ ভিডিওটিকে “অশ্লীল” বলে মনে করছে।
১০ জুন, ২০১৪ তারিখে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে “গোল ইরান” শিরোনামে ভিডিওটি প্রকাশিত হয়। ইতোমধ্যে ইউটিউবে এই ভিডিওটি প্রায় ৩০ হাজার বার দেখা হয়েছে। এজেন্সে ফ্রান্স-প্রেস প্রতিবেদনে বলেছে, ইরানের স্যাটেলাইট চ্যানেলে ভিডিওটি সম্প্রচার করা হয়েছে। অবৈধ ডিশ সংযোগের মাধ্যমেই কেবল এই চ্যানেল দেখা যায়, তা সত্ত্বেও ভিডিওটি বেশ বিস্তার লাভ করেছে।
ফার্সী ভাষায় গোল শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় ফুল। ফলে গানটির দুই ধরনের অর্থ হয়ে যায়ঃ
গোল কি, এটি ভালোবাসা এবং আশার ফল
গোল কি, এটি লাল, সবুজ এবং সাদা [ইরানের জাতীয় পতাকার রং]
গোল তাই, যা ইরানের হৃদয় থেকে উৎসরিত হয়
আমাদের হৃদয় চায় ইরানি গোল
এগিয়ে যাও, এগিয়ে যাও, আমরা একটি গোল চাই
…দীর্ঘজীবি ইরানের নামে গোল চাই
২৫ জুন তারিখে বসনিয়া হার্জেগোভিনার সাথে ৩-১ গোলে পরাজিত হওয়ায় ইরান বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে যায়।
এই টুর্নামেন্টের আগের খেলায় আর্জেন্টিনার কাছে পরাজিত হয়েও ইরানিরা জনস্রোতের মতো রাজপথে নেমে উদযাপন করেছে। ২১ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত এ খেলায় ইরান আর্জেন্টিনাকে ৯০ মিনিট কোন গোল দিতে দেয়নি। সুপারস্টার লিওনেল মেসি শেষ মিনিটে একটি গোল দেয়ার আগ পর্যন্ত ইরানি খেলোয়াড়েরা তাদের আটকে রেখেছে। অনেক ইরানি মনে করেন, এটি তাদের জাতীয় দলের পক্ষে একটি অভাবনীয় অর্জন।
লন্ডনে অবস্থিত ইরানের বিরোধীদলীয় টেলিভিশন চ্যানেল রাহা টিভি’র প্রতিষ্ঠাতা, আমির জাহনাশাই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টুইট করেছেনঃ
امروز همه ملت #ایران پشتیبان تیم ملی #فوتبال است. این روحیه همبستگی ملی در #ورزش را باید در همه زمینهها فراگیر کنیم. pic.twitter.com/z57ZVSVvSw
— Amir Jahanshahi (@Jahanchahi), June 21, 2014
সমগ্র ইরানি জাতি আজ আমাদের ফুটবল দলকে সমর্থন করছে। এ ধরণের সংহতি সকল ক্ষেত্রে থাকা উচিৎ।
ব্লগার নামাজাফারি এই আনন্দ উদযাপনের মাঝেও কিছুটা নিরানন্দ ঢুকিয়ে দিয়েছেনঃ
یک باخت شیرین! به امید اینکه در ورزشگاه آزادی ایران نیز زنان و مردان در کنار هم به تماشای #والیبال و #فوتبال بنشینند pic.twitter.com/3UpomFZl74
— namajafari (@namajafari) June 21, 2014
মিষ্টি পরাজয়। আশা করি একদিন ইরানি নারীরা ইরানি পুরুষদের পাশে বসে খেলা দেখতে পারবে।