- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

বিশ্বকাপে বাংলাদেশও আছে- মেড ইন বাংলাদেশ লেবেল নিয়ে!

বিষয়বস্তু: বাংলাদেশ, খেলাধুলা, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রচারণা
৪০ লাখ বাংলাদেশি তৈরি পোশাকশিল্পে কাজ করেন। আর এ খাত থেকেই দেশের সবচে’ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। এ শিল্পের ৮০% কর্মীই নারী। ছবি তুলেছেন শফিকুল আলম। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (২২/৬/২০১৪) [1]

৪০ লাখ বাংলাদেশি তৈরি পোশাকশিল্পে কাজ করেন। আর এ খাত থেকেই দেশের সবচে’ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। এ শিল্পের ৮০% কর্মীই নারী। ছবি তুলেছেন শফিকুল আলম। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (২২/৬/২০১৪)

বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান পেছনের সারিতে। তবে বিশ্বকাপ আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন না করলেও বাংলাদেশ বিশ্বকাপ আসরে রয়েছে- মেড ইন বাংলাদেশ [2]ট্যাগ নিয়ে। কেন না, বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের গায়ে রয়েছে বাংলাদেশের তৈরি জার্সি।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ’র তথ্যমতে [3], বাংলাদেশের ১৮০টি তৈরি পোশাক কারখানায় খেলোয়ার ও ফ্যানদের জন্য ১৬টি দেশের খেলোয়াড়দের জার্সি বানিয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইতালি, ইরান, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, চিলি এবং জার্মানি। এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশী [4] খেলোয়ারদের পোশাক রপ্তানি করেছে। উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ ফুটবলের জার্সি তৈরি করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় বেশ ভালোই বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্রাজিলের জাতীয় দলের জার্সি বানিয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্রাজিলের ফুটবল সংস্থা ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন রানা প্লাজা [5] এবং তাজরীন গার্মেন্টের [6] ঘটনা স্মরণ করে “মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ জার্সির নিচের অংশে [7]রাখার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনায় ১,১০০ জনের বেশি এবং তাজরীনে আগুনে পুড়ে ১০০ জনের বেশি তৈরি পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

ফুটবল বিষয়ক সংবাদ ওয়েবসাইট সাইড ট্যাকলে বাংলাদেশের এই কাজের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে কারিমা হক [8] লিখেছেন:

We […] commend and salute the thousands of pairs of hands that has made this praiseworthy feat possible. They have, and they will, make Bangladesh proud in the foreseeable future.

যেসব হাজার হাজার পোশাকশ্রমিক এই কাজটি সম্পন্ন করেছেন আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই। তারা বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন, আশা করি ভবিষ্যতেও করবেন।

লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের কড়া সমর্থক তানভীর আহমেদ [9] ব্রাজিলের ফুটবল জার্সিতে মেড ইন বাংলাদেশ ট্যাগ দেখে গর্ব বোধ করার কথা উল্লেখ করে টুইট [10] করেছেন

যখন আমি জানলাম, এ বছর ব্রাজিলের সব জার্সি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, তখন গর্বে আমার বুক ভরে গেল। আমি সত্যিই গর্বিত।

১৬ কোটি মানুষের দেশটিতে ফুটবল ব্যাপক জনপ্রিয় খেলা। এ সময়ে বাংলাদেশের ফ্যানদের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ হয় প্রিয় দলের জার্সি পরা। ধনী থেকে দরিদ্র সব পরিবারের তরুণদের কাছে প্রিয় দলের জার্সি পরা একটি ফ্যাশন। তারা তাদের সমর্থন জানাতে নেইমার, রোনালদো, মেসি চিত্র আঁকা জার্সি পরেন। তবে বাংলাদেশে নাইকি, অ্যাডিডাস, পুমা ব্র্যান্ডের আসল জার্সিও মেলে। তবে সেগুলো একটু দামি। তাই, বেশিরভাগ ফ্যান রাস্তার পাশে দোকান অথবা ফুটপাত থেকে কম দামি জার্সি কিনে থাকেন।

বাংলাদেশের সর্বত্র এখন বিশ্বকাপের জোয়ার। রাস্তাঘাট, অফিস, কিংবা সুখী গৃহকোণ, সবখানেই চোখে পড়বে প্রিয়দলের জার্সি পরে ঘুরে বেড়ানো মানুষের মুখ। সেরকম কিছু ছবি রইলো এখানে:

প্রিয় দলের জার্সি পরে আছে একদল ফুটবল ফ্যান। ছবি তুলেছেন রিয়াজসুমন। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (০৫/০৬/২০১৪) [11]

প্রিয় দলের জার্সি পরে আছে একদল ফুটবল ফ্যান। ছবি তুলেছেন রিয়াজসুমন। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (০৫/০৬/২০১৪)

প্রিয় দলের জার্সি পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভক্তরা ছবি তুলছেন। ছবি তুলেছেন ফিরোজ আহমেদ। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১২/০৬/২০১৪) [12]

প্রিয় দলের জার্সি পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভক্তরা ছবি তুলছেন। ছবি তুলেছেন ফিরোজ আহমেদ। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১২/০৬/২০১৪)

প্রিয় দলের জার্সি বেছে নিচ্ছেন বাংলাদেশি ফুটবল সমর্থকরা। ছবি তুলেছেন ফিরোজ আহমেদ। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১০/০৬/২০১৪) [13]

প্রিয় দলের জার্সি বেছে নিচ্ছেন বাংলাদেশি ফুটবল সমর্থকরা। ছবি তুলেছেন ফিরোজ আহমেদ। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১০/০৬/২০১৪)

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে একজন ফুটবল ভক্ত আর্জেন্টিনার জার্সি কিনছেন। ছবি তুলেছেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রামানিক। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১৯/০৫/২০১৪) [14]

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে একজন ফুটবল ভক্ত আর্জেন্টিনার জার্সি কিনছেন। ছবি তুলেছেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রামানিক। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১৯/০৫/২০১৪)

বিশ্বকাপের বিভিন্ন দলের জন্য জার্সি, টি-শার্ট, ক্যাপ তৈরি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে খানিকটা গতি দিয়েছে। বিশ্বকাপের সময়ে তৈরি পোশাকখাতের অর্থনীতি কেমন ছিল সে বিষয়ে বাংলাদেশি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এবং জনপ্রিয় অভিনেতা এম এ জলিল অনন্ত [15]পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন:

পোলো ব্র্যান্ডের জার্সিগুলোর দাম আমরা প্রতি পিসের জন্য সর্বনিম্ন নয় ডলার করি নিচ্ছি। অন্য সময় আমরা সাধারণত একই ব্র্যান্ডের এই পোলো শার্টের দাম প্রতি পিস সাড়ে ছয় ডলার থেকে সাত ডলার রাখি। এতে করে এখানে যেসব গার্মেন্টস এই কাজ করছে, তারা প্রতি পিসে বাড়তি দুই ডলার করে পাচ্ছে। ফলে আমরা রেমিট্যান্সও বেশি করে আনতে পারলাম। আমরা দুদিক থেকেই লাভবান। এক. বিশ্বকাপে একধরনের অংশগ্রহণ, দুই. ব্যবসায়িকভাবে লাভবান। এ ছাড়া বাংলাদেশের পরিচিতিও বাড়বে।