- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ, ব্যবহারকারীদের অধিকার উপেক্ষা করলেন ডিজিটাল শিল্পের প্রধানরা

বিষয়বস্তু: পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, রাশিয়া, আইন, নাগরিক মাধ্যম, ব্যবসা ও অর্থনীতি, সরকার, রুনেট ইকো, জিভি এডভোকেসী
Vladimir Putin attends the Internet Entrepreneurship in Russia Forum in Moscow, June 10, 2014, Kremlin Press Service. [1]

মস্কোতে আয়োজিত রাশিয়া ফোরামে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায়িক উদ্যোগ শীর্ষক বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন অংশগ্রহণ করেন, জুন ১০, ২০১৪, ক্রেমলিন প্রেস সার্ভিস।

আজ একটি অত্যন্ত প্রত্যাশিত বৈঠকে, ভ্লাদিমির পুতিন ইয়ানডেক্স প্রধান আরকেডি ভোলোজ, মেইল ডট আরইউ'র  দিমিত্রি গ্রিসিন এবং অন্যান্য সকল ইন্টারনেট শিল্পের প্রধানদের সাথে কথা বলেন যারা বিপুল অঙ্কের অর্থ হারাতে পারেন যদি ভোক্তারা ক্রেমলিনের কঠোর ইন্টারনেট নীতির কারণে গুগলের মতো বিদেশী প্রতিযোগীদের কাছে ব্যবসা স্থানান্তর করে। “রাশিয়া ফোরামে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায়িক উদ্যোগ [2]” শীর্ষক বৈঠকটি আয়োজন করে এজেন্সী ফর স্ট্রাটেজিক ইনিসিয়েটিভস [3]—একটি অলাভজনক সংস্থা, যা পুতিন মে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দৃশ্যত: নতুন উদ্যোগসমূহের উদ্বোধন করার জন্য। 

প্রেসিডেন্ট পদে পুতিনের তৃতীয় মেয়াদে, যা ২০১২ সালে শুরু হয়, সরকার নিয়মিতভাবে নতুন নিয়মকানুন ও আইন প্রণয়ন করেছে অনলাইন স্বাধীনতা সংকুচিত করতে। এ বছরের আগস্টে, একটি “সন্ত্রাস-বিরোধী” বিধিমালা কার্যকর হবে যা ব্লগার এবং ওয়েবসাইটগুলোকে নতুন বাধ্যবাধকতা এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে আসতে বাধ্য করবে। আরও আইন কার্যকর করার জনশ্রুতি রয়েছে যা ইয়ানডেক্স এর মত সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অতিরিক্ত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 

রুনেট (RuNet) ব্যবসাসমূহের সময় কঠিন যাচ্ছে। বিশেষ করে এপ্রিলের শেষ যখন পুতিন প্রকাশ্যে বলেন [4] যে সিআইএ ওয়েব নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি অভিযোগ করেন যে রুশ ইন্টারনেট কোম্পানিসমূহের ওপর পশ্চিমা চাপ রয়েছে।  এরপরেই নাসডাকে (Nasdaq) হঠাৎ করে ইয়ানডেক্স শেয়ারের মূল্য ১৬ শতাংশ নেমে যায়। 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, এবং পুতিনের সাথে ইন্টারনেট শিল্পের প্রধানদের এক দশকের বেশি সময় ধরে কোন বৈঠক হয়নি বিষয়গুলো বিবেচনা করে, আজকের বৈঠকটি উত্তেজনাকর হবে বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু যা ঘটেছে তাকে ঠিক উত্তেজনাকর বলা যায় না।  

আজকের ফোরামে রুনেট ভিআইপিরা প্রেসিডেন্টকে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দমনমূলক ইন্টারনেট আইনের [5] বৃদ্ধি বিষয়ে একটি প্রশ্নও সরাসরি জিজ্ঞাসা করেননি। যে আইনের মাধ্যমে কার্যকরভাবে গণমাধ্যম আর “জনপ্রিয় ব্লগার” সমার্থক করা হবে, সে সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন করেনি। যে আইন [6] ওয়েবসাইটগুলোকে অর্ধ বছরের তথ্য রাশিয়ান আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সার্ভারে আর্কাইভ করতে বাধ্য করবে সে সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা ওঠেনি। অ্যাটর্নি জেনারেল সম্পর্কে একটি শব্দ বলা হয়নি, যে এখন বিচারবহির্ভূতভাবে “চরমপন্থী” অভিযোগে ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করতে পারে। 

কেবলমাত্র মেইল ডট আরইউ এর নির্বাহী দিমিত্রি গ্রিসিন অনলাইনে রাজনৈতিক স্বাধীনতার মত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বলার মৃদুভাবে চেষ্টা করেছিলেন। তিনি পরামর্শ [1] দেন যে সরকারের আরও কাছ থেকে নতুন আইন প্রয়োগ বিষয়ে ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর সাথে আলোচনা করা উচিত। “অধিকাংশ সময়ই এই আইনগুলোর পেছনের কারণগুলো যুক্তিসম্মত,” তিনি বলেন, “কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই আইনগুলোর প্রয়োগ, সাধারণভাবে বলতে গেলে, কিছু মানুষকে ভীত করে।” এই সমস্যা এড়ানোর জন্য গ্রিসিন একটি “ব্যবস্থা প্রক্রিয়া” প্রস্তাব করেন যা আরও ভাল মতামত নিশ্চিত করবে। 

জবাবে, পুতিন ব্যাখ্যা [1] করেছেন যে স্বাভাবিক সমাজে বিধিবিধান অনিবার্য। তিনি শ্রোতাদের বলেন যে ইন্টারনেট বাণিজ্য রাশিয়া মধ্যে এখন অত্যন্ত বড় আকার ধারণ করেছে, যে কারণে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান অপরিহার্য। “প্রতিদিন, আমাদের নাগরিকদের এক তৃতীয়াংশ, অনলাইনে যান,” পুতিন বলেন, “এবং অবশ্যই তা এক ধরনের নিয়মের আওতায় পড়বে।” প্রেসিডেন্ট তারপর সরকার ওয়েবসাইটের কালো তালিকাগুলো প্রবর্তনের আগে ইন্টারনেট শিল্প প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করে বলেন যে এ ওয়েবসাইটগুলোর বিরুদ্ধে শিশু পর্নোগ্রাফি, আত্মহত্যা, অবৈধ মাদক, এবং সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত তথ্য প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। “আমরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক,” পুতিন সবাইকে দেখেন এবং তারপর আহ্বান জানান “শিশুদের কথা মনে রাখবেন।”

শেয়ার মার্কেট বৈঠকের ফলাফলের সাথে দ্রুতগতিতে প্রতিক্রিয়া [7] করেছে — ক্রেমলিন, মনে হচ্ছে, ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শেয়ারহোল্ডারদের পকেটে হাত দেওয়া হবে না। ইয়ানডেক্স স্টক এপ্রিলের লোকসান মুছে, তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যে রয়েছে। মেইল ডট আরইউ গ্রুপের শেয়ারও লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে ১ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌছেছে। 

ইন্টারনেটের স্বাধীনতা একটি চমৎকার জিনিস, কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে অন্যকিছুই ঘরভর্তি নির্বাহীদের সম্মতি সাথে স্মিত ভ্লাদিমির পুতিনের ছবির মত বিনিয়োগকারীদের শান্ত করছে না।