- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সোভিয়েত যুগের নাগরিক প্রতিরক্ষা সনদ ফের চালু করছেন পুতিন

বিষয়বস্তু: পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, রাশিয়া, খেলাধুলা, নাগরিক মাধ্যম, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, যুবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রুনেট ইকো
Putin and an old GTO poster. It was a more innocent time. Images remixed by author.

পুতিন এবং এক জন পুরানো জিটিও পোস্টার। সেটা ছিল আরও নির্দোষ সময়। ছবিটি তৈরি করেছেন এডিটর।   

রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি সোভিয়েত যুগের একটি অতীত ঐতিহ্যের পুনঃপ্রচলন ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছেন। শীতকালীন সোচি অলিম্পিকে রাশিয়ার সাফল্য উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। পুতিন তাঁর ঘোষণাতে বলেন, “ [1][রাশিয়ার] জাতীয় ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে” সোভিয়েত আমলে প্রচলিত শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক একটি কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে। কার্যক্রমটির অধীনে সকল বয়সী জনগণকে “শ্রম এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীতে” (জিটিও) যোগ দিতে শারীরিক দক্ষতার প্রমাণ স্বরূপ সনদপত্র দেওয়া হত। 

এমন একটি ঘোষণা অপ্রত্যাশিত ছিল না। দুই সপ্তাহ আগে ব্লগার আন্দ্রেই মালজিন এমন একটি গুজব তাঁর ব্লগে প্রথম পোস্ট করেছিলেন। তিনি পর্যবেক্ষণ [রুশ] করেছেনঃ   [2]

То есть они будут не пробуждать у детей интерес к спорту, а собираются принуждать их заниматься спортом. Они сделают спорт постылой необходимостью. Зачем?

মানে দাঁড়াচ্ছে যে শিশুদের খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলার বদলে তারা তাদেরকে দক্ষতার সনদ দিয়ে খেলাধুলায় জড়িত হতে বাধ্য করবেন। তারা খেলাধুলাকে একটি ঘৃণ্য প্রয়োজনে পরিণত করতে চলেছেন। কিসের জন্য? 

“হ্যালো, স্পার্টা” শিরোনামে ব্লগার এলিস_এসভিএস একট পোস্টে বিস্ময় প্রকাশ [রুশ] করে [3] বলেছেন, যে সব শিশুরা স্বাস্থ্যগত কারণে খেলাধুলায় অংশ নিতে পারবে না তাদের কি হবেঃ 

Каждый третий ребёнок в Москве к 3 годам уже имеет ХОБЛ, о количестве прочих заболеваний деликатно умолчу…

মস্কোর প্রতি তিনজনে একটি শিশু সিওপিডি’তে [ক্রনিক অবসট্রাক্টিভ পালমোনারী ডিজিজ] আক্রান্ত। ইতোমধ্যে এই সংখ্যা তিনে উন্নীত হয়েছে। অন্যান্য অসুস্থতার পরিসংখ্যান সম্পর্কে কৌশলগত কারণে আমি চুপ করে থাকবো… 

ঘোষণাটি দেওয়ার পর কয়েকজন প্রবীণ ব্লগার তাদের পুরনো অভিজ্ঞতা স্মরণ করেছেন। এটি সোভিয়েত বিদ্যালয়গুলোর অন্যতম একটি আতঙ্ক ছিল। একজন ব্লগার লিখেছেন [রুশ]:  [4]

Я ненавидела физру в школе. Люто, бешено ненавидела. […] Как вспомню – мороз по коже. Мерзкие сатиновые трусы на резинках, черный низ-белый верх, всем стать в строй, на первый-второй рассчитайсь…Господи, неужто непонятно?! Нельзя, нельзя, нельзя ЗАСТАВЛЯТЬ людей сдавать какие-то бредовые “нормы”. Нет никаких норм! Патология это!

বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় শারীরিক শিক্ষা বিষয়টিকে আমি ঘৃণা করতাম। প্রচন্ড রাগের সাথে এবং তীব্রভাবে এই প্রক্রিয়ার বিরোধী ছিলাম। […] এর কথা চিন্তা করলেই ভয়ে আমার গা শিউরে উঠতো। নমনীয় ফিতার সাথে নোংরা সার্টিন কাপড়ের আঁটসাঁট হাফপ্যান্ট, নিচে কালো বর্ডার দেয়া সাদা জামা পরে সবাই লাইন ধরে দাঁড়ানো […] হে প্রভু, এটা কি সত্যিই এখনও স্পষ্ট নয় ?! আপনারা এ ধরণের বঞ্চনা মূলক “আদর্শ” পালন করতে জনগণকে বাধ্য করতে পারেন না, না, না। এতে কোন আদর্শ নেই! এটি শুধুমাত্র একটি মতি বিভ্রম!    

এই ডিক্রি জারির ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও এসেছে। তাতিয়ানা মালইনা তাঁর ফেসবুক ওয়ালে [5] [রুশ] লিখেছেনঃ 

это странно и непопулярно, я знаю…но у меня не было никаких, совсем никаких проблем с нормами гто. я даже единственная из девочек муляж гранаты бросала на требуемые 11 метров…. почему-то не вызывло у меня все это дело ни отторжения, ни протеста. проблемы были только с политинформацией, историей и иногда – литературой.

এটি খুব অদ্ভূত এবং কম জনপ্রিয়। আমি জানি… কিন্তু জিটিও মানদণ্ড নিয়ে আমার কোন রকম সমস্যা নেই। এমনকি আমি একমাত্র মেয়ে হিসেবে একটি নকল গ্রেনেড ১১ মিটার দূরত্বে ছুঁড়েছি… বেশ কিছু কারণে এই সমগ্র প্রক্রিয়াটিতে আমি প্রত্যাখ্যান করতে বা এটির বিরোধিতা করতে পারছি না। শুধুমাত্র রাজনৈতিক তথ্য, ইতিহাস এবং কখনও কখনও সাহিত্য বিষয়ে আমার কিছুটা সমস্যা রয়েছে।   

পুতিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন অবস্থায় এটাই স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রথম পদক্ষেপ নয়, যা ক্রেমলিন গ্রহণ করেছে। ২০১১ সালে পাস করা একটি আইনে [6] অ্যালকোহল এবং সিগারেটের উপর ট্যাক্স বৃদ্ধি জনিত কারণে দাম বাড়ানো হয়েছে। আর এ কারণে অ্যালকোহল এবং সিগারেটের দাম ২০১৪ সাল নাগাদ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তাঁর সাথে সাথে গত জুন মাস থেকে জনসম্মুখে ধূমপান নিষিদ্ধ করে [7] একটি আইন কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু ক্রিমিয়াতে রাশিয়ার আকস্মিক হামলা চালানোর পর কর্তৃপক্ষ জনপ্রিয় দেশপ্রেম অনুভূতির সুবিধা নিতে চেষ্টা করছে। তাই একজন ব্লগার মন্তব্য [রুশ] করেছেনঃ [8]“তারা আমাদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে চাচ্ছেন।”