রোববার এক গোছানো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সালভাদর সানচেজ সেরেনকে [1] রাষ্ট্রপতির উত্তরীয় পড়ানো হয়। রাষ্ট্রপতির দলের প্রতি যারা অনুগত, তারা তাকে প্রোফে [প্রফেসর–এর সংক্ষিপ্ত রূপ] বলে ডাকে, অন্যদিকে সংবাদ মাধ্যম গতানুগতিক ভাবে তাকে “প্রাক্তন মার্ক্সপন্থী গেরিলা কামান্ডার হিসেবে” অভিহিত করে থাকে। তবে এই মূহুর্তে খুব কম লোকই তার রাজনৈতিক অতীত নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে মধ্য আমেরিকার ক্ষুদ্র এই দেশ, যেখানে ৬০ লক্ষ নাগরিকের বাস, সেখানে সাম্প্রতিক সপ্তাহের প্রতিটি দিন খুনের সংখ্যা দ্বিগুণে পরিণত হচ্ছে।
এল সালভাদরের ক্ষমতাশালী গুণ্ডাদের দল, এমএস১৩ [2] এবং বারিও ১৮ [3] দুই বছর আগে সরকারের সাথে তাদের গোপনে করা চুক্তি ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে, সম্ভবত সদ্য হওয়া রাষ্ট্রপতির উপর নতুন করে চাপ তৈরী যাতে না হয়, তার জন্য এই অভিযোগ।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত সেরেন উত্তরাধিকার সুত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জাতিকে পাচ্ছে, দেশটিতে এমন এক পরিস্থিতি বিদ্যমান, দারিদ্র্যের কারণে যা ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করেছে। এল সালভাদরের এক তৃতীয়াংশ নাগরিক স্থানীয় দারিদ্র্য সীমার নীচে বাস করে। মোট জনসংখ্যার প্রায় বাকী এক তৃতীয়াংশ অভিবাসী শ্রমিক এবং তারা যে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করে তা সালভাদরের মূল অর্থনীতির ১৬ শতাংশ।
কিন্তু যখন থেকে নতুন সরকার তার কাজ শুরু করবে, তখন নাগরিকরা জানতে চাইবে সদা হাস্য এবং পিতৃসম সেরেন কি হানাহানি বন্ধ করতে পারবে। গেরিলা নেতা সেরেনের জন্য প্রথাগত যুদ্ধে শত্রুকে চেনা অনেক সহজ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের যেখানে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমেরিকার পতাকা উড়ানো হয়, এবং ২১ বার বন্দুকের গুলি ছুড়ে অভিবাদন জানানো হয়, তার সাথে তুলনা করে এল সালভাদরে শপথ অনুষ্ঠান উপস্থিত রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারের প্রাধান্য দিয়ে শপথ অনুষ্ঠানে পতাকা উড়ানো হয় (সাথে ২১ বার বন্দুকের গুলি ছুড়ে অভিবাদন জানানো হয়)।
অন্তর্জাতিক প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে উপস্থিতদের মধ্যে বেশীর ভাগই ছিল প্রতিবেশী ল্যাটিন আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধানরা। বলিভিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান এভো মোরালেস [4]-এর সাথে ইকুয়েডোরের খোলামেলা এবং কখনো কখনো বিতর্কিত নেতা রাফায়েল কোরেয়া [5], পরিচিতি পর্বে সবচেয়ে জোরালো করতালি লাভ করে।
কোরেয়া নির্মম ভাবে নিহত হওয়া ক্যাথলিক বিশপ অস্কার রোমেরো [6] কথা উল্লেখ করেন, যিনি এল সালভাদর এবং ল্যাটিন আমেরিকার বামপন্থীদের কাছে এক বীর হিসেবে বিবেচিত হন।
Llegamos de El Salvador, que tiene nuevamente gobierno del FMLN. Mucha suerte al Pdte. Salvador Sánchez y al heroico pueblo de Mons. Romero.
— Rafael Correa (@MashiRafael) junio 2, 2014 [7]
আমরা আবার এল সালভাদরে ফিরে আসি, যেখানে আরো একবার এফএমএলএন সরকার গঠিত হল। রাষ্ট্রপতি সালভাদর সানচেজ-এর সৌভাগ্য এবং রোমেরোর মনস-এর বীর নাগরিকদের সৌভাগ্য কামনা করছি।
দেশের নাগরিকরা টুইটারে মন্তব্য করা শুরু করেছ, পাশাপাশি উল্লেখ করছে যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্দলীয় ভিত্তিতে আলোচনা চালানোর ক্ষেত্রে তার উত্তরসূরিদের চেয়ে বেশী আশার সঞ্চার করেছেন। বিরোধী দলের অনেকে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মোউরিচিয় ফুয়েনস বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব গ্রহণের অভিযোগ এনেছিলেন। রাজধানী সান সালভাদর–এর কংগ্রেস সদস্য এনরিকে ভালদেস টুইট করেছে-:
Que bueno que Sánchez Ceren habla de diálogo y entendimiento. Esto rompe con la prepotencia de Funes
— Dr. Enrique Valdés (@doctorvaldes) junio 1, 2014 [8]
এটা উত্তম যে সানচেজ সেরেন [অসুস্থ্য] আলোচনা এবং বোঝাপড়ার কথা বলছে। এটা ফুনেস-এর ঔদ্ধত্যের ইতি ঘটাবে।
সোশ্যাল মিডিয়া ধারাভাষ্য যতই রাজনীতিকরণ করা হোক না কেন, তবে বেশীরভাগ পোস্ট দুটি বিষয় উল্লেখ না করে পারেনি, নতুন রাষ্ট্রপতি এক সময় গেরিলা দলের নেতা ছিলেন, এবং এল সালভাদরের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার প্রধান সমস্যা হচ্ছে সহিংস অপরাধ মোকাবেলা করা।
El excomandante guerrillero Sánchez #Cerén [9] asume la Presidencia de #ElSalvador [10] http://t.co/L3ZlsDIiEe [11]
— EFE Noticias (@EFEnoticias) junio 1, 2014 [12]
প্রাক্তন গেরিলা নেতা সানচেজ# সেরেন এল সালভাদরের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।