চীনে জিনজিয়াং প্রদেশের দূরবর্তী পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত উরুমকি রেল স্টেশনে বুধবারে এক বোমা বিস্ফোরণে তিন জন লোকের মৃত্যু এবং ৭৯ জন লোক আহত হয়েছে। এ বোমা বিস্ফোরণ ইরানের আকৃতির এই প্রাকৃতিক সম্পদশালী প্রদেশটিতে উপজাতি সম্পর্কিত উত্তেজনা বেশ বাড়িয়ে তুলেছে। এ ঘটনা নিরাপত্তার ভয়ানক চ্যালেঞ্জগুলোর উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছে।
বছরের এই সময়ে সাধারণত: আরোহীরা ১ মে উপলক্ষে তিন দিনের জাতীয় ছুটি পেয়ে থাকে বলে রেল স্টেশনগুলো একেবারে কানায় কানায় ভরে যায়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া প্রচার মাধ্যম এই বোমা বিস্ফোরণটিকে একটি গোপন সন্ত্রাসী পরিকল্পনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাঁরা আরও বলছে, দুষ্কৃতিকারীরা নাগরিকদের ছুরিকাঘাত করেছে এবং বিস্ফোরন ঘটিয়েছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং যখন এ অঞ্চলে সফরে এলেন, ঠিক তাঁর পর পরই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটল। সেখানে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এ অঞ্চলে “সন্ত্রাসের” বিরুদ্ধে তিনি “উপযুক্ত পদক্ষেপ” গ্রহণ করবেন। এ ধরনের বিচ্ছিন্ন হামলা যেন বড় সড় ধর্মযুদ্ধের আকার ধারন করতে না পারে, সে পরিস্থিতি প্রতিরোধ করতে নেতৃত্বের মাধ্যমে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে তিনি জিনজিয়াংকে আলাদা করার প্রতিশ্রুতি দেন। এই প্রদেশটি মূলত: সংখ্যা লঘু উইঘুরদের আবাসস্থল। এ সম্প্রদায়ের লোকেরা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ভাষায় কথা বলে।
জিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী শহর উরুমকিতে ২০০৯ সালে সহিংস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি হয়। দাবি করা হয়, এই দাঙ্গায় প্রায় ২০০ লোক মারা যায়। এ অঞ্চলটিতে সংখ্যা গরিষ্ঠ সম্প্রদায় হান তাদের প্রতাপ প্রতিষ্ঠা করতে তৎপর। গণনার দিক থেকে এখন এ প্রদেশের অর্ধেক জনসংখ্যা তারাই। বেইজিং বলছে, এই প্রদেশে যথেষ্ট উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে এবং উন্নয়নমূলক কাজে সকল সম্প্রদায়কে সমান চোখে দেখা হয়েছে। কিন্তু উইঘুর অধিকার দল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং বৈষম্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ এনেছে।
রেল স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট ঝি বলেছেন, “আমাদেরকে বুঝতে হবে যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ একটি দীর্ঘ মেয়াদী, জটিল এবং সূক্ষ্ণ প্রক্রিয়া। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কোন রকম ঢিলেমি চলে না। সন্ত্রাসীদের আগ্রাসনকে দৃঢ়তার সাথে দমন করতে কিছু সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।”
এই হামলার পর উরুমকিতে রেল সার্ভিস পুনরায় চালু করার আগে প্রায় দুই ঘন্টার বিরতি রাখা হয়।
চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সেবা সিনা ওয়েইবোতে বোমা বিস্ফোরণের ছবিগুলোকে ঘষামাজা করতে সেন্সরগুলো খুব দ্রুত কাজ করছে। সিনা ওয়েইবোর পাশাপাশি কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত প্রচার মাধ্যমে কেবল রেল স্টেশনে পুলিশের পাহারা দেয়ার কিছু দৃশ্যের ছবি পোস্ট করা হয়েছে।
রাজনৈতিকভাবে কিছুটা কম সংবেদনশীল সিনা ওয়েইবোতে থাকা কয়েকটি আলোচনা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে। লুডা সিসি লিখেছেনঃ
对少数民族国家其实做的还不错,我也觉得少数民族没什么,恐怖分子之所以活跃在少数民族聚集地就是为了让我们觉得有少数民族的地方就是恐怖主义然后要求少数民族分离出去。
চীন সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের প্রতি অপেক্ষাকৃত ভাল আচরণ করা হয়েছে। আমি মনে করি, যারা এ ধরনের ভুল কাজ করছে তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ নয়। যেখানে কোন উপজাতি গোষ্ঠী বাস করে সেখানেই সন্ত্রাসীদের এতটা সক্রিয় হওয়ার কারন হচ্ছে, তারা আমাদের বোঝাতে চায় যে যেখানেই কোন উপজাতি সম্প্রদায় থাকবে সেখানেই সন্ত্রাসীরা থাকবে। তারা এই উপজাতি অধ্যুষিত এলাকাকে পৃথক করার আশা নিয়ে এমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে থাকে।
জিনজিয়াং’এ বসবাসকারী জিয়াওশিদাই দাফাঙ্গকে জোর দিয়ে বলেছেনঃ
我在新疆,而且现在在基层,普通维族群众都是朴素善良的,只是那些受宗教极端思想和民族分裂主义势力影响的一小撮人干的,希望每个人正确看待问题,不要把对一小撮的愤怒放大到整个民族身上
আমি জিনজিয়াং’এ থাকি এবং এখন আমি একটি ছোট গোষ্ঠীতে বসবাস করি। উইঘুর সম্প্রদায়ের সাধারণ লোকেরা খুব দয়ালু এবং তাদের একটি সুন্দর মন আছে। কিছু সংখ্যক ধর্মীয় চরমপন্থী এবং যারা বিভক্তি করণের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা এটা [বোমা হামলাটি] ঘটিয়েছে। আমি আশা করি, সবাই সঠিক উপায়ে এই সমস্যাটিকে চিহ্নিত করতে পারবেন। আমি এটাও আশা করি যে সমগ্র উপজাতি সম্প্রদায়টিকে এই হামলার জন্য দায়ি করে কেউ সাধারণের অতিরিক্ত কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন না।
জ্যান হেনরিক ডাবরোওসকি টুইটারে উপজাতি নীতি নিয়ে মন্তব্য করেছেনঃ
正如前苏联推行的错误民族政策所造成的恶果正在乌克兰显现一样,中共推行的错误民族政策现在和将来也将招致恶果.新疆的汉人和维吾尔人矛盾总有一天会以战争的形式爆发.
— 拓跋Taugast d'Hôtan (@novaniemi) April 26, 2014
ইউক্রেন সংকট সৃষ্টিকারী সোভিয়েত ইউনিয়নের ভুল উপজাতি নীতির মতো চীনের কমিউনিস্ট পার্টিও একটি ভুল উপজাতি নীতি অনুসরণ করছে। এই ভুল নীতি ভবিষ্যতে একটি খারাপ ফলাফল নিয়ে আসবে। একদিন হান এবং উইঘুরদের মাঝে যুদ্ধ দেখা দিবে।