ভারতে প্রকাশ্য স্থানে মূত্রত্যাগ বন্ধে পিসিং ট্যাঙ্কারের অভিযান

Lack of public toilets in urban areas is a major cause of public urination in India. Image by author

শহুরে এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ গণ শৌচাগার না থাকা, ভারতের রাস্তায় মূত্রত্যাগের অন্যতম এক প্রধান কারণ। ছবি লেখকের।

দক্ষিণ এশিয়ার অনেক রাষ্ট্র, বিশেষ করে ভারতে প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ অন্যতম এক সমস্যা। দেওয়াল, গলি এবং বাড়ির কোণে মানুষ মূত্রত্যাগ করছে, এমন দৃশ্য ভারতে খুব সাধারণ এক ঘটনা। গণ শৌচাগার না থাকাটা একটা সমস্যা, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি এবং প্রকাশ্য স্থানে কি ভাবে শোভন থাকা যায়, সে বিষয়ে ধারণা এই সমস্যার এক কারণ। ব্লগার উদাস প্রিস্ট মজার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখছেন কেন ভারতীয়রা রাস্তার পাশের দেওয়ালে মূত্রত্যাগ করে।

বিভিন্ন একটিভিস্ট এবং সংগঠন এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে দিল্লির জন সচেতনতা মুলক প্রচারণা, মূত্রত্যাগের এলাকা পরিষ্কার করা এবং দেওয়াল রঙ করা ও সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং রাজস্থানে ঢোল এবং বাঁশী বাজিয়ে মূত্রত্যাগ করা ব্যক্তিকে লজ্জা দেওয়া। কিন্তু দৃশ্যত এই সমস্ত প্রচেষ্টার কোন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে “কি ভাবে ভারত প্রকাশ্য স্থানে মূত্রত্যাগের বিষয়টি বন্ধ করতে সক্ষম হবে“? 

ছদ্মনামে পরিচালিত দি ক্লিন ইন্ডিয়ান, প্রকাশ্যে স্থানে মূত্রত্যাগ বিরোধী এক দল, তারা মুম্বাই–এ প্রকাশ্য স্থানে মূত্রত্যাগ বন্ধ করার এক সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে এসেছে

দি ক্লিন ইন্ডিয়ান, উপরের এই ভিডিওটি ইউটিউবে পোস্ট করেছে, এতে দেখা যাচ্ছে পিসিং ট্যাঙ্কার নামক প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ বন্ধ করার এক যান, তার কাজে নেমে পড়েছে। এই দলের কর্মী, যারা তাদের পরিচয় লুকানোর জন্য মুখোশ পড়ে কাজ করে, তারা তাদের বিশালাকায় হলুদ ট্যাঙ্ক নিয়ে মুম্বাই-এর রাস্তায় টহল দিতে থাকে এবং যারা প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ করে তাদের উপর পানি ছিটাতে শুরু করে।: 

ভারতের নেট নাগরিকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সাথে এই বিষয়টিকে গ্রহণ করেছে। অনেকে এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে:

বেশ ভালো এক চিন্তা…কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণ গণ শৌচাগার না তৈরীর করার বিরুদ্ধে তারা কি ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করবে?

ওহ কি দারুণ: যদি তা সত্যি হয়, তাহলে এটা একটা দারুণ চিন্তা। যদিও একই সাথে ভারতের যথেষ্ট পরিমাণ গণ শৌচাগার প্রয়োজন

পিসিং ট্যাঙ্কার: “আপনি বন্ধ করুন, আমরাও করব”: যখন আমার বয়স ৭ বছর সত্যিকার অর্থে তখন থেকে আমি এই কাজটি দেখতে চেয়েছিলাম।এই বিষয়ে কোন মতামত?

কিন্তু এতে সকলে কিন্তু খুশী নয়:

পিসিং ট্যাঙ্কার: “আপনি বন্ধ করুন, আমরাও করব”- বিষয়টি যথেষ্ট বিনোদন প্রদান করছে, কিন্তু সুস্পষ্ট ভাবে তারা সীমা লঙ্ঘন করছে, নজরদারির মাধ্যমে বিচার করার মধ্যে দিয়ে।

মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছে এমন একদল নির্বোধ। বিষয়টি যেন এমন যে, বিশালকায় এক ট্যাঙ্কারের পানির অপচয়ের মাধ্যমে ভারতকে প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ করা থেকে বিরত রাখা । যাও…

ব্লগার মানিশ আগারওয়াল যুক্তি প্রদান করেছে যে প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ বন্ধ করার জন্য ট্যাঙ্কার সঠিক সমাধান নয়। সে এই চিন্তার কিছু ত্রুটি তালিকাভুক্ত করেছে।

  • ওই ব্যক্তি যে আবার একই ঘটনা ঘটাবে না তার নিশ্চয়তা কি।
  • ভর্তুকির তেলে চলা ট্যাঙ্কারের ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকাশ্যে “মূত্রত্যাগ বিরোধী কার্যক্রমের” যৌক্তিকতা কি।
  • সর্বশেষ কিন্তু অন্য সবগুলোর মত সমান গুরুত্বপূর্ণ, এই কার্যক্রমে পানি ব্যবহারের বিষয়ে ভাবনা কি? আমরা সকলেই জানি যে পানি অত্যন্ত মূল্যবান উপাদান এবং সারা বিশ্বের এক বিশাল পরিমাণ জনগোষ্ঠীর পানি পায় না (পরিষ্কার পানির কথা ভুলে যান)।

এই বিষয়কে ঘিরে এক কৌতূহলজনক বিতর্ক তৈরী হয়েছে অবতারণা হয়েছে, এটা কি আদতে স্বাস্থ্যগত বিষয়ের চেয়ে সংস্কৃতির এক বিষয়, আদৌও এটা কি একটা সমস্যা অথবা এই বিষয়ে নাগরিকদের মাথা ঘামানো উচিত। অন্য দেশের জীবন যাপন অনুশীলনের সাথে ভারতের অনুশীলনের তুলনা করার মধ্যে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান অনুসন্ধান, তেমন একটা কাজে লাগবে না। তবে, দেওয়াল গুলোকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা,সাথে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, এবং স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যগত ভাবে নিরাপদ থাকার মত বিষয়ে জন সচেতনতা বৃদ্ধির মত বিষয় নিঃসন্দেহে কাউকে আঘাত করবে না।

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .