পানি ছুড়ে মারার বদলে সিঙ্গাপুরের সংক্রান-এর সংগঠকরা পানি সংরক্ষণের দিকে মনোযোগ প্রদান করে। এই অনুষ্ঠানে একটি বাজার, থাই বক্সিং, সঙ্গীত এবং খাদ্যের আয়োজন করা হয়েছিল।
কয়েকজন থাই কর্মকর্তা এই কারণে খুব একটা খুশী ছিল না বিশেষ করে এবারে প্রথম থাই সম্প্রদায় কিংবা থাই কোন কর্তৃপক্ষের আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া অন্য কোন দেশে সংক্রান উৎসব উদযাপন করা হয়েছিল। তারা একই সাথে উদ্বিগ্ন ছিল এই কারণে যে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত সংক্রান তার যাথার্থ সংস্কৃত অর্থ ছাড়াই আয়োজিত হতে যাচ্ছে।
মিউজিং ফ্রম দি লাওন সিটি ব্লগ ‘উৎসবের সবচেয়ে মৌলিক অংশ বাতিল করে দেওয়ার জন্য’ সিঙ্গাপুর পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেছে:
আমি সততার সাথে বলছি। আমার কোন ধারনা ছিল না যে সিঙ্গাপুর “সংক্রান ২০১৪ উদযাপন করতে যাচ্ছে”, আর এই সংবাদ শোনার পর আমার মনে হয়েছে, যদি আমি বিষয়টি না শুনতাম। যখন সিঙ্গাপুর পর্যটন মন্ত্রণালয় এক বিদেশী উৎসব আয়োজন করতে যাচ্ছিল তখন আসলে কি চিন্তা করে তার আয়োজন করল, আর কি চিন্তা করে তারা সেই উৎসবের সবচেয়ে মৌলিক অংশ বাদ দিয়ে দিল?
আমি নিজেও পানি সংরক্ষণের পক্ষে তবে পানি ছাড়া সংক্রান উৎসবের মানে কি? এর মানে হচ্ছে মোরগ ছাড়াই মোরগ পোলাও রান্না! পানি সংরক্ষণ এবং সংক্রান উৎসব দুটো পাশাপাশি যেতে পারে না।
স্ট্রেঞ্জার ইন ব্যাংকক-এর সংবাদ অনুসারে সিঙ্গাপুর পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট মানুষকে বিভ্রান্ত করছিল,কারণ এখানে পানি ছিটানোর একটি ছবি যুক্ত করা হয়েছিল:
আয়োজক কমিটিকে দুটি পয়সা দেওয়া উচিত তারা যার যোগ্য, কারণ আমি মনে করি যে পানির ছোড়ার এই লড়াই সংক্রান্ত যে সমস্ত বিষয় এবং তথ্য ওয়েব সাইটে তুলে ধারা হয়েছে তা দ্রুত অপসারণ করা উচিত ছিল বিশেষ করে যারা টাকা দিয়ে অংশ গ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে [এই উৎসবের সকল অনুষ্ঠান বিনে পয়সার ছিল না] বিষয়টি বিভ্রান্তিতে ফেলে দিয়েছিল। এরপর এই উৎসবের নাম খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করা উচিত, অন্তত যদি তারা ভবিষ্যৎ একই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পানি নেই, সংক্রান নেই। সময়।
এভরিথিং অলসো কমপ্লেইন নামক ব্লগার পানি বিহীন সংক্রান উৎসবের চিন্তা প্রত্যাখ্যান করেছে:
যদি আপনি ল্যাজেগোবরে করে কিছু কার্যক্রম বাদ দিয়ে সত্যিকারের সংক্রান উপভোগ করতে চান এবং এটিকে দরিদ্র ব্যক্তিদের ফেনা ছোড়াছুড়িতে পরিণত করতে চান, তারপরে যদি আপনি পানি নষ্ট না করার বিষয়টি দেখতে চান, তাহলে আপনি সুইমিং পুল-এর পাশে কিংবা সমুদ্র তটে আয়োজন করতে পারেন, যেখানে যত ইচ্ছে তত পানি ছিটতে পারেন, সবচেয়ে বড় কথা এর জন্য কোন অর্থ খরচ করতে হবে না…
ব্যারি, সিঙ্গাপুরের সংগঠকদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে সংক্রান থাইলান্ডের এক বাণিজ্যিক উৎসবের চেয়ে বেশী কিছু :
এমন কি উৎসব শুরুর আগে এমনকি সংক্রানের যে মানে তা পাল্টে দেওয়া হয়েছে। আপনি পানি ব্যবহারকে কেবল এক আনন্দদায়ক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছেন, না, পানি ছিটানো মানে হচ্ছে আর্শীবাদ এবং এটি শ্রদ্ধার প্রতীক। ঘটনা হচ্ছে এই ভাবে পানি ছুড়ে মারা উৎসবের সবচেয়ে মৌলিক উপাদান, তার মানে হচ্ছে এটা ছাড়া সংক্রানের কোন মানে নেই।
আমার মতে সিঙ্গাপুর খুব সাধারণ ভাবে থাইল্যান্ডের এই উৎসবের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে না, আর সহজে বলা যেতে পারে সে রকম কোন প্রচেষ্টা হবে খুব হাস্যকর। এটা হবে সর্বশেষ একস্থান যেখানে কোন একজন ব্যক্তি সংক্রান অনুষ্ঠানের আগ্রহ প্রকাশ করবে। আপনারা দেখতে পারেন থাইল্যান্ড কোন এই উৎসবের কোন একটা ক্ষুদ্র অংশেও একফোঁটা পানি ছাড়া সংক্রান উৎসব পালন করে না, না, তারা তা করে না। এটা এমন এক রাষ্ট্র যেখানে সমাজের সকল সদস্য এই উদযাপনে অংশ নেয়, কারণ এটা হচ্ছে তাই, যা এক সত্যিকারের সংক্রান উৎসব।