ক্যামেরুনে যীশুর “আবির্ভাব”

১৬ এপ্রিল ২০১৪, রোজ বুধবার। ক্যামেরুনের রাজধানী শহর ইয়াউনদের অধিবাসীদের একটি খবর শুনে ঘুম ভেঙেছে। খবরটি হচ্ছে, ওডজার কাছাকাছি অবস্থিত একটি এলাকায় এক বাড়িতে যীশু খ্রিস্টের পুনরুত্থান ঘটেছে। ধর্মপ্রাণ এবং কৌতূহলী খ্রিস্টান লোকেরা যীশুর পুনরুত্থানের এই অলৌকিক ঘটনা নিজের চোখে দেখতে [ফ্রেঞ্চ] সে এলাকাতে ছুটে যাওয়ায় ব্যাপক উন্মাদনার [ফ্রেঞ্চ] সৃষ্টি হয়েছে।

তবে এ ঘটনার কিছু দিন পর দৌয়ালার আর্চবিশপ এমজিআর. স্যামুয়েল ক্লেদা যীশুর পুনরুত্থানের দাবিকে ধোঁকাবাজি বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু তাঁর উক্তি ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টানদের গভীর আগ্রহকে দমাতে পারছে না। তারা এখনও আমোগুই মিনকানের বাড়িতে গিয়ে ভিড় করছেন। এমনকি কেউ কেউ দীর্ঘ লাইন ডিঙ্গিয়ে সামনে যেতে বাড়িটির চারপাশের বেড়া বেয়ে উপরে উঠছেন।

যীশুর পুনরুত্থানের খবরটি তাৎক্ষনিকভাবে ক্যামেরুনের টুইটারে একটি প্রবণতা সৃষ্টিকারী বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সেখানে ব্যবহারকারীরা এ দাবি সম্পর্কে অবিশ্বাস এবং চঞ্চলতার সাথে টুইট করেছেন।

বাড়ির দেয়ালে লোকেরা আসলে কি দেখতে পাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন ব্লগার @এনজিমবিসঃ  

হায়রে মানুষ! ওনাকে দেখতে আপনাদের নিশ্চয়ই স্বর্গীয় কোন টেলিস্কোপিক যন্ত্রের প্রয়োজন হবে, তাই না ?  

এত জায়গা থাকতে যীশু খ্রিস্ট তাঁর পুনরুত্থানের জন্য ক্যামেরুনে অবস্থিত একটি জায়গা বেছে নেবেন, এটা চিন্তা করে অনেকেই বেশ আনন্দিত হয়েছেনঃ 

অর্থাৎ, যিশু ফিরে এসেছেন ?? যদিও তা হয়, তবে তা ক্যামেরুন হতে পারে না …… 

আসল ব্যাপার হচ্ছে, ওডজাতে যীশুর পুনরুত্থান হয়েছে। এ জায়গাটি এনসিমালেনের খুব কাছে অবস্থিত। কথিত আছে, সেখানে ১৯৮৬ সালের মে মাসে যীশু খ্রিস্টের মা ম্যারির আবির্ভাব হয়েছিল। সে ঘটনাটিও অনেককে প্রভাবিত করতে পারেনিঃ 

আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, যীশু খ্রিস্ট এবং তাঁর মা একে অপরের পাশাপাশি অবস্থিত প্রতিবেশী দুইটি এলাকাতে পুনরায় আবির্ভুত হয়েছেন। ক্যামেরুন সত্যিই বেশ সৌভাগ্যশালী। 

@এনটিআরজ্যাক যীশু খ্রিস্টের বংশ নিয়ে বহু প্রাচীন সেই বিতর্কটি আবার শুরু না করে থাকতে পারলেন নাঃ 

তো যীশু খ্রিস্ট তাঁর পুনরুত্থানেও শ্বেতাঙ্গ হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। এটাই এই বিতর্ককে উস্কে দিয়েছে। 

@লেসিকানেল কটুক্তি করে বলেছেনঃ 

আমি এখনও অপেক্ষা করছি এই ভেবে যে কেউ একজন ওডজা থেকে যীশু খ্রিস্টের সাথে নিজের সেলফি ছবি তুলে পোস্ট করবে। 

যীশু খ্রিস্টের পুনরুত্থানের এই বিষয়টি কারও কারও কাছে কিছু সামাজিক এবং রাজনৈতিক ধারা বিবরণী প্রদানের একটি সুযোগ মাত্র, আর কিছু নয়। ইয়াউনদে শহরে যীশু খ্রিস্টের আগমনের খবরে @টিজাটবাসের কোন রকম অনুভূতি হয়নিঃ  

যীশু আসলেই ক্যামেরুন খুব ভালবাসেন! কিন্তু এটি এখনও বেশ দুরবস্থায় আছে। এখানে এখনও অনেক অবিচার হয়। এখানে এখনও অনেক লোক মারা যায়। 

অপরদিকে @এনজিমবিস ক্যামেরুনে অধিবাসীদেরকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, যেহেতু আফ্রিকা-ইইউ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রেসিডেন্ট পল বিয়া ২ – ৩ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ ব্রাসেলসে অবস্থান করেছেন। তাই এখনো তিনি এ বিষয়ে কিছু দেখেননি বা শোনেননি।

যেহেতু আমাদের প্রেসিডেন্ট ইইউ সম্মেলনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত অনুপস্থিত আছেন, সেহেতু ওডজার যীশুকে আমাদের প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তী-কালীন দায়িত্ব পালন করতে দেখা যেতেই পারে। 

যীশুর পুনরুত্থানের পর থেকে ওডজাতে ব্যবসা বাণিজ্য হঠাৎ বেড়ে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আর পিছনে ফিরে তাকানোর অবকাশ নেই। যে বাড়িতে যীশু খ্রিস্টের পুরুত্থান হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সে বাড়িটির মালিক এখন সকলের কাছ থেকে অনুদান চাইছেনঃ 

সৃষ্টিকর্তার ছেলে যীশু খ্রিস্ট এক পবিত্র সপ্তাহে ক্যামেরুনের ইয়াউনদে শহরে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি সেখানকার একটি বাড়িতে আবির্ভূত হয়েছেন, যেখানে গেলে মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। 

যেখানে যীশু পুনরুত্থানের সত্যতা নিয়ে বিতর্ক উম্নত্ত হয়ে উঠেছে, সেখানে ইতোমধ্যে ওডজার যীশু কাহিনী শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ পরে অনেকে এখনও ওডজাতে তীর্থযাত্রায় যাচ্ছেন। 

#ইয়াউনদেরযিশু হা হা হা, মাসের সবচেয়ে বাজে ছবি। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .