
সিউলের একটি রাস্তায় ফেরি দুর্ঘটনায় পতিতদের জীবিত ফিরে পাবার আশায় বাঁধা কিছু হলুদ ফিতা। ছবিঃ লি ইউ এন।
কয়েক শত আরোহী নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ান একটি ফেরি উল্টে যাওয়ার ১৪ দিন পেড়িয়ে গেল। দুর্ঘটনায় ২০৫ জন লোকের নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে এবং ৯৭ জন লোক এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
ফেরির ক্যাপ্টেন এবং সকল ক্রু তখন থেকেই গ্রেপ্তার হয়ে আছেন। দূর্যোগের প্রতি সরকারের দেরীতে উদ্যোগ গ্রহণের কারণে যেসব সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তাঁর প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী চুং হং-ওন পদত্যাগ করেছেন। কোরিয়ান শিপিং এ্যাসোসিয়েশনের ইনচেওয়ন দপ্তর থেকে তিনজন লোককে বিভিন্ন প্রমাণ ধ্বংস করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধার করতে দক্ষিণ কোরিয়ান সরকারের জোড়া তালি দেয়া উদ্ধার কাজ পরিচালনার বিস্তারিত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর জনগণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
দায়ভার থেকে রেহাই পেতে সরকারের দেওয়া নানা কৈফিয়ত কেবলমাত্র তোতা পাখির মতো আওড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষ এবং মূল ধারার রক্ষণশীল প্রচার মাধ্যমের দিকে অনলাইন ব্যবহারকারীরা তাদের নিশানা তাক করেছেনঃ
위기관리 능력이 전혀 없는 정부의 무능과 거짓, 한술 더 떠서 거짓말만 해대는 미친언론에 분노한 피해자 가족들… 세월호 참사에서 이 나라의 밑바닥이 드러나고 있다. #뉴스타파 pic.twitter.com/I5010osha0
— 미권스 (@afc_4565) April 21, 2014
সরকারের অন্তহীন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, তাদের অযোগ্যতা এবং মিথ্যার ফুলঝুড়ি এবং প্রচার মাধ্যমগুলোর বিরামহীন মিথ্যা বলে যাওয়া… এসব কিছুই দূর্যোগে আক্রান্তদের পরিবারগুলোকে রাগিয়ে তুলেছে। সিউল ফেরি দূর্যোগের পর দেশটির সর্বনিম্ন পর্যায় প্রকাশিত হয়ে পড়েছে।
뉴스에서 대통령이 사라졌다. 정부당국의 말실수, 집계누락 등 수많은 실책의 최종 책임자가 제일 먼저 언론에서 사라져버림. 마치 좌초한 세월호에서 선장이 제일 먼저 도망친 것처럼.
— 루나 (@fakemommy) April 20, 2014
এই সব খবর থেকে প্রেসিডেন্টকে একেবারে উধাও করে ফেলা হয়েছে। উদ্বিগ্ন সরকারি কর্তৃপক্ষের হঠকারিতা এবং নানা ধরনের ভুল ও তাদের অন্যান্য ব্যর্থতা সম্পর্কে প্রচার মাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে তিনি একেবারেই অনুপস্থিত। ডুবে যাওয়া সিউল ফেরি থেকে প্রথমে ক্যাপ্টেন যেভাবে অদৃশ্য হয়েছে সেভাবে সরকারের সব ধরনের ভুল প্রতিবেদন থেকে তিনি পুরোপুরি গায়েব হয়ে গেছেন।
언론은 세월호 침몰 현장에 장비가 들어간 장면과 전문가들이 구조에 참여한 소식을 보여준다 언론만 보면 구조작업은 활발하다 하지만 현장에서 초기에 구조된 사람 외에 추가로 구조된 사람들은 없다 결과물은 없고 언론은 떠들고..언론보도와 현장은 전혀 다르다
— 임중수 (@js8088hb) April 19, 2014
সিউলের ধ্বংস প্রাপ্ত ফেরির ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ভিডিও ফুটেজ প্রচার মাধ্যমগুলোতে দেখানো হয়েছে। ফেরিটি উদ্ধার কাজের সময়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ধারণ করা দৃশ্যও দেখানো হয়েছে। যদি আমরা শুধুমাত্র প্রচার মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনের দিকে তাকিয়ে দেখি, তবে মনে হবে উদ্ধার কাজ বেশ ভালোভাবেই চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও দূর্ঘটনাটি ঘটার প্রাথমিক অবস্থায় যাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে তারা ছাড়া আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা এখন আর নেই। উদ্ধার কাজে তেমন কোন অগ্রগতি নেই, তবুও প্রচার মাধ্যমগুলো অপ্রয়োজনীয় কথা বলেই যাচ্ছে। প্রচার মাধ্যমগুলো আমাদেরকে যা দেখাচ্ছে, বাস্তব চিত্র তাঁর থেকে একেবারেই আলাদা।
এই দূর্যোগ থেকে সুযোগ নেওয়া রাজনীতিবিদেরা আবার আগুনে ঘি ঢালার মতো নিষ্ঠুর আচরণ করছেন।
ক্ষমতাসীন সায়েউনরি পার্টির একজন আইন প্রণেতা একজন দূর্যোগ কবলিত ব্যক্তির বাবা-মাকে [কোরিয়ান] ভুলভাবে দোষারোপ করার কারণে জনরোষের শিকার হয়েছেন। সেই আইন প্রণেতা তাদের বিরুদ্ধে বহিরাগত হয়েও “বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়া এবং সরকারের প্রতি আক্রোশ প্রকাশ” করার অভিযোগ এনেছেন।
এখন পুলিশ এমন একজন লেখককে [কোরিয়ান] খুঁজছে, যিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “যারা দক্ষিণ কোরিয়াতে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তারা অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার পক্ষের সমর্থকেরা সিউল ফেরি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে”।
이제 국민을 좌빨에서 종북세력으로 몰아 간첩만들기는 일상화 됐다.수틀리면 개나 소나 종북,간첩을 외치는 이 어이없는 상황.세월호 인명구조에 한가닥 희망을 걸고 있는 분들은 이미 유리심장이다.작은상처에도 쉽게 상처받고 깨질 위험한 상황이니 말조심들해라
— 수연낙명(隨緣樂命) 안녕하지 못합니다 (@kriskimera) April 22, 2014
জনগণকে “লাল কমিস” এবং “উত্তর-পক্ষের [কোরিয়ান সমর্থক]” নামে বিভক্ত করার এই কৌশলটি একটি নিত্য দিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কতোটা ভয়াবহ এই নিষ্ঠুরতা ? যখনই কোন বিষয়ে মতবিরোধ তৈরি হচ্ছে, তখনই একে অন্যকে কেবল “উত্তর-পক্ষের” বা “উত্তর কোরিয়ান গুপ্তচর” হিসেবে দোষারোপ করছে। সিউল উদ্ধার কাজের প্রতি যারা বিন্দু মাত্র আশা হারাননি, তারা এ ধরনের মন্তব্য শুনে প্রচন্ড অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পড়ে যান এবং সহজেই দুঃখ পেয়ে যান। আপনারা কি বলছেন দেখুন।
세월호로 온 나라가 슬픔에 잠기고, 정부의 무능을 비판하는 소리가 높아지자~여기에도 종북놀이를 해 대는 집권당과 그 지지자들을 보면, 나라가 이렇게 밖에 될수 없슴을 절감케 한다. 모든 잘못을 종북으로 덮는 지배층을 바꾸지 않으면 우린 답이 없다.
— 쟝고 (@shsh7600) April 22, 2014
যেহেতু সমগ্র দেশটিকে হতাশা গ্রাস করে ফেলছে, যেহেতু সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক উক্তিকারীরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তাই ক্ষমতাসীন দল এবং তাদের সমর্থকেরা এখন “উত্তর-পক্ষ” বিশেষণ শব্দটিকে এই দূর্যোগের সাথে জুড়ে দিয়েছে। এ ধরনের দূর্যোগ দেশটিতে কেন দেখা দিল, সে সম্পর্কে এই পরিবেশ আমাকে ভাবতে বাধ্য করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি দোষ ত্রুটিকে “উত্তর-পক্ষ” ফন্দি-ফিকির দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া নেতৃত্বকে আমরা পরিবর্তন করতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই প্রশ্নের কোন উত্তর পাব না।