গ্রিসের কুখ্যাত করডালোস কারাগারে বন্দীর আত্মহত্যা

Inpatient wards at the Korydallos prison in Greece. Photo tweeted by @kolastirio

গ্রিসের করডালোস কারাগারে রোগীদের একটি ওয়ার্ড। ছবিটি টুইট করেছেন @কোলাসটিরিও 

একজন কারাবন্দীর আত্মহত্যার মাধ্যমে ফের আরেকবার গ্রিক কারাগারের সংকীর্ণ এবং জনবহুল পরিস্থিতির প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।

“ΚΟΛΑΣΤΗΡΙΟ ΚΟΡΥΔΑΛΟΥ” (করিডালোস হেলহোল) নামের টুইটার প্রোফাইলে প্রথম রিপোর্ট করা হয়েছে যে ৪৩ বছর বয়সী একজন কারাবন্দী গত ৬ এপ্রিল, ২০১৪ তারিখে তাঁর জুতার ফিতা দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

কর্মকর্তারা পরে এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন এবং আইন মন্ত্রনালয় এ বিষয়ের তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। 

মৃত – আমাদেরকে সাহায্য করুন – কারাবন্দী ভাইদের আত্মহনন – সে নিজেই ফাঁস নিল এবং মারা গেল – তাঁর নাগাল ধরতে পারলাম না – সাহায্য করুন – সাহায্য করুন 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা কারাবন্দী লোকটি সাহায্য চেয়ে যে ডিজিটাল ফোনটি করেছিল তা বার বার টুইট করে সবার কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ঐ নির্দিস্ট কারাগারে হাসপাতাল শাখায় কারাবন্দী লোকটি ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ থেকে অনশন করছিলেন। তাদেরকে জোর করে এক আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে বাঁচিয়ে রাখার প্রতিবাদে তিনি এই অনশন শুরু করেন।

গত মাসে ইউরোপ কাউন্সিল কারাগার হাসপাতালের সুযোগ সুবিধার দ্রুত উন্নয়ন চায়। স্বাস্থ্য সেবা দিতে সবার প্রতি বিশেষভাবে সমান সহানুভূতি পূর্ণ আচরণের নিশ্চয়তাকারী লিলিয়ান মাউরি পাসকুয়ার প্রচার মাধ্যমকে বলেছেন, “[করডালোস] হাসপাতালটি ৬০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও বর্তমানে ২০০ কারাবন্দী এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। সকলের জানা মতে, এদের মধ্যে বেশিরভাগই এইচআইভি ভাইরাস অথবা যক্ষ্মারোগ এবং হেপাটাইটিসের মতো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত।”  

জঘন্য আবর্জনাবহুল অবস্থা নিয়ে কারাবন্দীরা চিকিৎসা সেবা পেতে রীতিমত ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছেন বলে নিয়মিতভাবে রিপোর্ট করেছেন। তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, হাসপাতালের পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ যে, রাষ্ট্র পক্ষের একজন আইনজীবী একবার হাসপাতালে প্রবেশ করতে এবং কারাগার শাখাটি পরিদর্শন করতে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারন, তাঁর “পরিবার আছে।”

রিপোর্টে একটি দাপ্তরিক তদন্তের ঘোষণা প্রকাশ করার পিছু পিছু এই আত্মহত্যার খবরটি এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইলি কারেলি নামের একজন আলবেনীয় কারাবন্দীকে গ্রিসের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত নিগরিতা কারাগারে বিচ্ছিন্ন একটি কক্ষে একা আলাদা করে রাখা হয়। এই অবস্থায় মারা যাওয়ার আগে তাকে দুই ঘন্টা ধরে মারধর করা হয়।   

#কলাস্তিরিও (নরকগর্ত) শিরোনামের হ্যাশট্যাগটির অধীনে গ্রিক টুইটার ব্যবহারকারীরা দেশটির কারাগার ব্যবস্থাপনা এবং এর উন্নয়ন নিয়ে সরকারের উদাসীনতা নিয়ে মন্তব্য করেছেনঃ 

আরও একজন অসুস্থ লোক এই নরক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। “নরকগর্ত” নামটি সত্যিই বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করছে। 

সরকারের কেউ (তাদের মতে) “দ্বিতীয় শ্রেণীর একজন নাগরিকের” মৃত্যুতে পদত্যাগ করবেন এমনটি আশা করবেন না। 

এমন আত্মহত্যার সর্বপ্রথম কারন হচ্ছে, হতাশার নিরাময় না করা। এ ধরনের হতাশার চিকিৎসা আছে এবং এ ধরনের আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এসব আত্মঘাতী এবং আবেগপূর্ণ সংকট কাটানোর জন্য গোপনীয় সাহায্যকারী লাইন থেকে আপনি সাহায্য পেতে পারেন। বিফ্রেন্ডার্স ডট ওআরজি ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আপনি আপনার দেশে একটি আত্মহত্যা প্রতিরোধে সাহায্যকারী হেল্পলাইন খুঁজে পেতে পারেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .