চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীদের গন্তব্য বেইজিং নয়, সাংহাই

Young people in Shanghai in 2013. Photo by Flickr user Richard Schneider. CC BY-NC 2.0

২০১৩ সালের সাংহাইয়ের তরুণরা। ছবি তুলেছেন রিচার্ড সিনেইডার। ফ্লিকার থেকে নেয়া। (সিসি বিওয়াই-এনসি ২.০)।

এ বছর চীনে ৭.২ মিলিয়ন শিক্ষার্থিী স্নাতক পর্ব সম্পন্ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়েই তারা চাকরির লড়াইয়ে নামবেন।

কিন্তু চাকরির জন্য তারা কোথায় যাবেন? সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরির জন্য চীনের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারীদের সবচে’ জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠছে সাংহাই। আর এদের বেশিরভাগই চাইনিজ কোম্পানিতে চাকরি খুঁজছে।

ক্যারিয়ার কনসালটিং প্রতিষ্ঠান ইউনিভারসাম চীনের সেরা একশ’ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ওপরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, চীনের স্নাতক সম্পন্ন করা তরুণরা বেইজিং, সাংহাই এবং গুয়াংজুতে চাকরির জন্য লালায়িত থাকে। উল্লেখ্য, এই শহর তিনটি চীনের প্রধান অর্থনৈতিক অঞ্চল বলে পরিচিত।

চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ হাজার শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ শেষে গত ৩ এপ্রিল ২০১৪-এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধাপে ধাপে কর্মী নিয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, যাতে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীদের কাছে আরো বেশি জনপ্রিয় উঠে।

চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে চীনের টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান হুয়াউই। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান সিনপেক।   

শিক্ষার্থীরা চাকরির জন্য সাংহাইকে কেন বেছে নিচ্ছে প্রতিবেদনে সেটার কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে চীনের অনেক মিডিয়া এ বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিশ্লেষণ হাজির করছে। চীনের জাতীয় বেতার বলেছে:

以前大学生首先选择北京是看中北京的首都的地位,看中这里的发展机遇;现在很多人放弃北京是因为这里的生活成本实在是太高了,很难落户也是其中的一个障碍。相比而言,上海是一个非常开放的城市,这几年上海开始引进人才政策,实行居住证制度,不论国籍、不论文凭、不论职称、不论身份,只要你是真才实学,无论是境内还是境外的人来上海都会有很好的创业和发展的渠道。也就是说只要有能力,就会有发展的空间,甚至在企业中还可以做到很高的地位,这就是非常吸引大学生的一个原因。 

আগে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে চাকরির জন্য বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীর প্রথম গন্তব্য ছিল বেইজিং। কারণ, বেইজিং রাজধানী শহর। সেখানে কাজের সুযোগও বেশি। তবে অবস্থা এখন বদলে গেছে। বেইজিংয়ে থাকা-খাওয়ার খরচ অনেক বেড়েছে। তাছাড়া এখানে চাকরি পাওয়ার জন্য সুপারিশ করবেন, এমন মানুষ পাওয়াও কঠিন। তাই অনেকেই এখন বেইজিং থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। অন্যদিকে সাংহাই অনেক উদার একটি শহর। বসবাসের জন্য নতুন নিয়মনীতি চালু হয়েছে, যা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আপনার পড়াশোনা, মেধা, জাতীয়তা, পদবি যাই হোক না কেন অথবা আপনি যেখান থেকেই আসুন না কেন, আপনি এখানে কাজের কিংবা ব্যবসার সুযোগ করে নিতে পারবেন। আপনি যদি সামর্থ্যবান মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে এখানে দীর্ঘদিন ধরে কিছু করে-কেটে খেতে অসুবিধা হবে না। একসময়ে ব্যবসাও দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারবেন। আর এটাই এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

চলতি সপ্তাহে বেইজিংয়ের একটি পত্রিকা একটি প্রতিবেদন ছেপেছে। প্রতিবেদনের উপজীব্য বিষয় হলো, তিন তরুণ পেশাজীবীর বেইজিং ত্যাগ। তারা পেশাগত জীবনে আরো উন্নতির আশায় বেইজিং ছেড়ে গেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম:”বিদায় বেইজিং! কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধা অন্য জায়গাতেই বেশি। চাকরির জন্য রাজধানী আজ আর পছন্দের তালিকার প্রথমে নেই।” এদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা বেইজিংয়ে অত্যাধিক মাত্রার বায়ুদূষণ এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেছেন।

ইউনিভারসামের প্রতিবেদন চীনের মিডিয়া লুফে নেয়। তারা “ভার্সিটি পড়ুয়াদের কাছে বেইজিং নয়, প্রথম পছন্দ সাংহাই” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। বিষয়টি নিয়ে চীনের জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সার্ভিস সিনা উইবুতে ব্যাপক আলোচনা হয়।

বেশিরভাগ উইবু ব্যবহারকারীর কাছে ব্যাপারটি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। সাংহাইয়ের একজন সম্পাদক লিখেছেন:  

前段时间么说毕业生逃离北上广,现在又说“上海取代北京成为毕业生工作的最‘理想’城市”。各种机构各种数据互相在抽脸么? 

একটা সময়ে সবাই বলাবলি করতো, বেইজিং, সাংহাই, গুয়াংডং স্নাতক ছাত্র-ছাত্রী দিয়ে ভরা। এখন তারাই বলছে, ভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কাছে কর্মসংস্থানের জন্য আর্দশ জায়গা বেইজিং নয়, সাংহাই। এর মানে কী এই দাঁড়ালো না, বেশিরভাগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান একে অপরকে চড় মারছে?

সাংহাইয়ের একজন উইবু ব্যবহারকারী “দয়া করে আমাকে বেন বলুন” অভিযোগ করেছেন:

嫌地铁不够挤?物价不够高 

সাংহাইয়ের সাবওয়ে কি যথেষ্ট পরিমাণ জনাকীর্ণ নয়? জিনিসপত্রের দাম কি আকাশছোঁয়া নয়?

চুহুই নামের সাংহাইয়ের এক অধিবাসী লিখেছেন:  

 欢迎来到这个老人跌倒没人敢扶,钱包被偷满街人都不会告知你,收入水平高,生活成本更高的城市。在这里你会颠覆自己的人生观、价值观。只有真正灵敏、不怕吃苦的人,才能经受住魔都的考验。

এমন একটি শহরে আপনাকে স্বাগতম জানাই, যেখানে পা হড়কে পড়ে যাওয়া বৃদ্ধের জন্য কেউ হাত বাড়িয়ে দেয় না। পকেট থেকে ম্যানিব্যাগ চুরি হওয়া দেখেও আপনাকে কেউ সাবধান করে দেয় না। এই শহরের মানুষজনের কামাই বেশ ভালোই। তবে জীবনযাত্রার ব্যয় আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। এখানে আপনি মানুষজনের যে জীবন দেখবেন, তা দেখে আপনার মূল্যবোধটাই ভোঁতা হয়ে যাবে। তবে যারা জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে মোটেও ভীত নন, তারাই সাংহাইয়ে থাকতে পারেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .