বাংলাদেশের মানুষ ভারতের নতুন সিনেমা ‘গুন্ডে’র বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সিনেমার শুরুতে দেখা যায়, ১৯৭১ সালে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের’ পরিবর্তে ‘ভারত-পাকিস্তান’ যুদ্ধ হচ্ছে। আর সেই যুদ্ধের ফলেই বাংলাদেশ নামের একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। এই সিনেমা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ হচ্ছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, ওই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে গৌরবোজ্জ্বল মহান মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করা হয়েছে।
এছাড়াও রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদ হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। বাংলাদেশ সরকারও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
টুইটার ব্যবহারকারী আবদুল্লাহ আল নাদিম (@i_am_nadim) টুইট করেছেন:
it was our liberation war. not Indo-Pak war. Indo-Pak war was just a part of our liberation war. #GundayHumiliatedHistoryOfBangladesh
— Abdullah Al Nadim (@i_am_nadim) February 19, 2014
এটা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ। এটা ইন্দো-পাক যুদ্ধ নয়। ইন্দো-পাক যুদ্ধ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধেরই একটা অংশ।
ওয়ার্ল্ডফ্রেন্ডফরইউ (@worldfriend4u) পরিচালকের ইতিহাস জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন:
#GundayHumiliatedHistoryOfBangladesh your whole nation should be ashamed of you ignorant tyrant.you know nothing about history
— worldfriend4u (@worldfriend4u) February 20, 2014
আপনার পুরো জাতিই আপনার অজ্ঞতায় লজ্জা পাবে। আপনি ইতিহাসের কিছুই জানেন না।
সায়মা সেলিম (@saima_selim) কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই ‘গুন্ডে’ সিনেমা বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন:
#GundayHumiliatedHistoryOfBangladesh what idiots if you can't do basic research, don't bother being so called representatives @yrf
#গুণ্ডেবাংলাদেশেরইতিহাসবিকৃতিকরেছে কি বোকা, মৌলিক গবেষণা না করতে পারলে এই দায়িত্ব নেয়া কেন?
জেরিন তাসনিম মিথিলা (@Zarin_Sparkles) টুইটারে অভিযোগ করেছেন, সিনেমায় একাত্তরের ইতিহাস নতুন করে বিনির্মাণ করেছে:
This is totally shit !! Bollywood's recreated story about 1971 history -_- #Bullshit #GundayHumiliatedHistoryOfBangladesh
— Zarin Tasnim Malihaツ (@Zarin_Sparkles) February 21, 2014
আজব ব্যাপার! বলিউড একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের নতুন ইতিহাস লিখলো।
সিডাটিভ হিপনোটিক্স বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন, গুন্ডে সিনেমার কোথায় ইতিহাসের বিকৃতি ঘটেছে:
৯০ হাজার পাকিস্তানী আর্মি ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে নি। করেছে বাংলাদেশ-ভারত যৌথবাহিনীর কাছে। এই কপি টা ভারতের প্রতিটা ঘরে ঘরে পৌছায় দেবার দাবি জানাই। প্রথমে ‘গুন্ডে’ মুভির পরিচালকের বাসায়।
বলিউডের পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রতও গুন্ডে সিনেমায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সমালোচনা করেছেন। মৃত্যুঞ্জয় নিজেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চাইল্ড অব ওয়ার নামে একটি সিনেমা বানিয়েছেন। তিনি বলিউড হাঙ্গামা সাথে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন:
If I am allowed to be honest, then I'd have to say that the makers of Gunday have been factually incorrect. I think it is hugely irresponsible and derogatory to use a sensitive subject such as the Bangladesh war for purely commercial purposes.
আমি যদি সত্যি বলি, তাহলে বলবো গুন্ডে নির্মাতা সঠিক তথ্য উপস্থাপন করেননি। আমি মনে করি, ইতিহাসের মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে তিনি অর্বাচিনের মতো কাজ করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তিনি পুরোপুরি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন।
যদিও গুন্ডে সিনেমার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যশরাজ ফিল্মস তাদের ব্লগে সিনেমার কারণে বাংলাদেশের কেউ ‘আহত বা অশ্রদ্ধা প্রকাশ হয়েছে বলে’ মনে করে থাকলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।