সৌদি আরবে লিঙ্গ সমতার দাবিতে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু

যেসব সৌদি নারী ভিনদেশী পুরুষকে বিয়ে করেছেন, তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব পেতে সৌদি আরবে বর্তমানে একটি প্রচারণা কার্যক্রম চলছে।

তারা নাগরিকত্ব আইনের ৭ ধারার সংশোধনের দাবিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এই ধারাটিতে বলা আছে, যাদের মা সৌদি কিন্তু বাবা বিদেশী তারা সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাবেন না। এর মানে দাঁড়ায়, ভিনদেশী পুরুষকে বিয়ে করা সৌদি নারীদের সন্তানেরা সরকারিভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ আরো অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

প্রচারণা কার্যক্রমের ওয়েবসাইটে একটি উদাহরণ শেয়ার করা হয়েছে:

سيف بن يزن، كغيره الكثير، ابن مواطنة سعودية من أب غير سعودي. لا يعرف وطناً غير المملكة العربية السعودية. حصل على الثانوية العامة بمعدل 98٪. بعد ذلك حاول ان يدرس الطب ولكن مُنع من تحقيق هذا الحلم بحجة أنه “أجنبي” لذلك اضطُر إلى أن يكمل تعليمه في احدى التخصصات الأخرى المتاحة للأجانب “في نظر النظام” في ذلك الوقت. فالتحق بكلية الحقوق “القانون” بجامعة الملك عبدالعزيز. وفي عام 2010 تخرج من جامعة الملك عبدالعزيز مع مرتبة الشرف بمعدل 4.69 من 5. ثم قرر مواصلة تعليمه في الخارج. لكن مرة أخرى، برنامج الابتعاث لم يقبل ضمه نظراً لأنه من “الأجانب”. إيماناً بأهمية العلم، قرر والده أن يرسله على حسابه الخاص للدراسة، وبذلك اقتطع والده من دخل العائلة وتحملت العائلة مشقة مالية مُرهِقة. حصل على ماجستير القانون التجاري الدولي من جامعة بوسطن ثم حصل على قبول بجامعة هارفرد وألتحق بها. الآن يعيش الحلم واقعاً بدراسة ماجستير القانون في جامعة هارفرد.

আরো অনেকের মতো সাইফ বিন ইয়াজিনের মা সৌদি, কিন্তু বাবা ভিনদেশী। সৌদি আরব ছাড়া তার আর কোথাও স্থায়ী ঠিকানা নেই। সে উচ্চ মাধ্যমিকে ৯৮% নম্বর পেয়ে পাস করেছে। তার ইচ্ছে মেডিসিন নিয়ে পড়বে। কিন্তু সেখানে বাঁধ সাধলো তার বাবার জাতি-পরিচয়। বাধ্য হয়ে তাকে বিদেশিরা যেসব বিষয়ে পড়তে পারে, তার কোনো একটিতে ভর্তি হতে হলো (আইন অনুসারে)। সে ভর্তি হলো কিং আবদুলআজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাইটস কলেজে। এখান থেকেও জিপিএ ৫-এর মধ্যে জিপিএ ৪.৬৯ পেয়ে পাস করলো। এবার তার ইচ্ছে, বিদেশ গিয়ে পড়াশোনা করবে। এবারো বাঁধা এলো। বিদেশী বলে স্কলারশিপ প্রোগ্রামে অংশ নিতেই পারলো না। তবে সাইফের বাবার ইচ্ছে, ছেলে উচ্চতর পড়াশোনা করুক। জীবনে আরো অনেক দূরে যাক। সেজন্য তিনি তার ছেলের পড়াশোনার খরচ নিজের কাঁধে তুলে নেন। কিন্তু সে খরচ ছিল ম্যালা। একটি পরিবারের জন্য বহন করা খুবই কঠিন। সাইফ এখন বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল কমার্শিয়াল আইনে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে। হার্ভাডেও ভর্তি হতে পেরেছে।

ধারা ৭-এ নিচের কথাগুলো বলা আছে:

يكون سعوديا من ولد داخل المملكة العربية السعودية أو خارجها لأب سعودي، أو لأم سعودية وأب مجهول الجنسية أو لا جنسية له أو ولد داخل المملكة لأبوين مجهولين، ويعتبر اللقيط في المملكة مولودا فيها ما لم يثبت العكس.

যাদের সৌদি আরবে কিংবা বাইরে জন্ম হয়েছে, তারা সৌদি বলে গন্য হবে যদি তাদের বাবা সৌদি হন অথবা তাদের মা সৌদি হন অথবা তাদের বাবা অন্য দেশের নাগরিক হন অথবা জাতীয়তা ছাড়াই কোনো দেশের নাগরিক হন। প্রমাণ হাজির করা গেলে বাবা-মা'র মধ্যে বিবাহ ছাড়াই যেসব সন্তান সৌদি আরবে জন্ম নিয়েছেন তারাও সৌদি নাগরিকত্বের জন্য বিবেচিত হরেন।

প্রচারণা কার্যক্রমে একটি পিটিশনও যোগ করা হয়েছে। এবং তাতে সবাইকে স্বাক্ষর করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

টুইটার ব্যবহারকারী ডালিয়া_এসডি মন্তব্য করেছেন:

ফুটবল খেলোয়াড় এবং গায়কদের মধ্যে যাদের সৌদি জাতীয়তা নেই, আমরা তাদের সৌদি জাতীয়তা দিতে পারি। তা না হলে তারা জাতির জন্য কিছু করবে না। এমননি ভাবে যেসব সৌদি মায়ের সন্তানেরা জাতীয়তার কাঠামোর মধ্যে নেই, তাদেরও সৌদি জাতীয়তা দিতে পারি।

আবদুল ইয়াজান আরো লিখেছেন:

নারীরা সমাজের অর্ধেক অংশ। তারা কাউকে জন্ম দেয়ার মাধ্যমে আরো অর্ধেককে টেনে নিয়ে আসেন।

জামিল উপসংহার টেনেছেন:

এটা লজ্জার ব্যাপার না, একজন সৌদি নারী যখন নিজের সন্তানের ভ্রমণের অনুমতির জন্য অভিবাসন দপ্তরে যান?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .