ইরান সংক্রান্ত বেশীর ভাগ ওয়েবসাইট থেকে ইরান ভয়েসেস-এর লক্ষ্যমাত্রা একটু ভিন্ন। নতুন এই সাইট নাগরিকদের উপর চালানো এক অনলাইন জরিপের মাধ্যমে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ইরান ভয়েসেস একে একে ইরানের সুর্নিদিষ্ট শহরের উপর চালানো জরিপের ফলাফল প্রকাশ করবে এবং সেগুলোকে প্রচার মাধ্যম, স্থানীয় রাজনীতিবীদ এবং স্বয়ং পৌরসভায় পাঠিয়ে দেবে।
এই ধরনের জরিপের প্রথম ফল প্রকাশিত হয় অক্টোবর ২০১৩-এ, যা ছিল তেল সমৃদ্ধ খুজেস্তান প্রদেশের আহওয়াজ শহরকে নিয়ে করা। উক্ত শহরের ৫২ জন নাগরিকের মাঝে চালানো জরিপের ভিত্তিতে এই ফলাফল তৈরী করা হয়।
উক্ত জরিপের ফলাফল অনুসারে সাড়া প্রদানকারীর নাগরিকদের প্রধান চাওয়া হচ্ছে আরো পরিবেশ বান্ধব এলাকা, তালিকায় এরপর রয়েছে আরো চাকুরী, আরো নিরাপত্তা এবং বায়ু দূষণের জন্য এক সমাধান। নাগরিকরা বলছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাঝে বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনী সন্তোষজনক সেবা প্রদানের দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে, আর তারপরে স্থানে রয়েছে সরকারি দপ্তর, হাসপাতাল, ব্যাংক এবং পৌরসভাসমূহ।
ইরান ভয়েসেস এই বিষয়টি সম্বন্ধে জ্ঞাত যে ছোট্ট আকারের এক জনসংখ্যার উপর চালানো জরিপের নমুনা শহরের সামগ্রিক চিন্তার প্রতিনিধিত্ব করে না, কিন্তু বলা যেতে পারে এটা একটা নির্দেশক। এই বাস্তবতায়, এই প্রকল্পের পেছনে মূল চিন্তাটি হল, সকলের বক্তব্য যেন শোনা হয়।
জরিপে উত্তরদাতার মধ্যে ৬০ শতাংশ বলছে যে স্থানীয় প্রতিনিধিরা কখনো তাদের মতামত চান না, এদিকে ৯০ শতাংশ বলছে যে তাদের ইচ্ছে যেন তাদের কথাও শোনা হয়।
স্থানীয় এক সংবাদ কেন্দ্র
একই সাথে ইরান ভয়েসেস-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরানের স্থানীয় সংবাদ সংকলিত করা এবং তুলে ধরা, যা প্রায়শ প্রচার মাধ্যমের তেহরান ভিত্তিক সংবাদ দৃষ্টিকোন থেকে উপেক্ষিত এবং সেখানে জাতীয় রাজনীতির প্রতি মনোযোগ প্রদান করা হয়।
ইরান ভয়েসেস আশা করে যে এটি এমন এক স্থাপনায় পরিণত হবে যেখানে ইরানি নাগরিকরা স্থানীয় বিষয় এবং তাদের গ্রাম, শহর, প্রদেশ ও অঞ্চলের সমস্যা তুলে ধরতে পারবে। এটা হবে এমন এক মাধ্যম যেখানে নাগরিক এবং সুশীল সমাজের কর্মীরা তাদের চিন্তা বিনিময় করতে পারবে এবং কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছাতে পারবে।
ইরান ভয়েসেস-এর একজন পরিচালক গ্লোবাল ভয়েসেসকে জানিয়েছেন “ আমাদের উদ্যোগ হচ্ছে সচেতনতা তৈরীর ক্ষেত্রে এক ছোট্ট পদক্ষেপ, দর কষাকষি এবং হয়রানীর বাইরে, কেবল নাগরিকদের প্রতিদিনের উদ্বেগ যার মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহারও অর্ন্তভুক্ত।
ইরান ভয়েসেস-এর পরিচালক, যিনি তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন “প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ার ফার্সি ভাষায় ইরানের লক্ষ লক্ষ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, তবে সেসবের বেশীরভাগই সাধারণ নীতিমালা এবং রাজধানী ভিত্তিক ঘটনাবলীর উপর মনোযোগ প্রদান করে থাকে”।
“ইরান ভয়েসেস-এ আমরা বিশ্বাস করি যে অন্য প্রদেশ, শহর, এবং গ্রামে যে সমস্ত ঘটনা ঘটে তা তেহরানের যা ঘটছে তার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। যার ফলে আমাদের ওয়েবসাইট অন্য সব স্থানীয় বিষয় তুলে ধরার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে এসেছে”।
ইরান ভয়েসেস সংবাদগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণী যেমন অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও শিক্ষা ইত্যাদি শিরোনামে ভাগ করে। এটা একই সাথে উশাহিদি সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে যা এর ব্যবহারকারীকে গুগল মানচিত্রে ভৌগলিক এবং স্থানের নাম অনুসারে শ্রেণীকরণ করার সুযোগ করে দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দি ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এনইডি) এই প্রকল্পের জন্য অর্থ জুগিয়েছে।