১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে সোভিয়েত পরবর্তী সময়ে গঠিত রাষ্ট্রগুলো স্বাধীনতা পেলেও, হঠাৎ করে অর্থনৈতিক চাপ আরোপ হওয়ায় সেখানে জীবনযাত্রার মান “আকস্মিক” নেমে যায়।
পুশকিন পাঠাগারটি কাজাখস্তানে অবস্থিত। দেশটি সাবেক সোভিয়েত রিপাবলিক এর একটি অংশ ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার সাথে সাথে সেখানকার বেশিরভাগ পাঠাগারই বন্ধ হয়ে যায়। লাইব্রেরিয়ান জারিনা কারিমোভা বলেছেন, বর্তমানে সেসব পাঠাগারের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ এখনও সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
কারিমোভা এবং পুশকিন পাঠাগারের পরিচালক বিবিগুল ঝাম্বিলোভনার সাথে কাজাখস্তানে অবস্থিত পাঠাগারগুলোর বর্তমান অবস্থা এবং পাইলট প্রকল্প হিসেবে সেগুলোর ভূমিকা নিয়ে আমি কথা বলেছি। তাদের নির্দিস্ট বর্ণনায় সেখানে কোন নুতন কার্যক্রমগুলো চলমান এবং কোন কার্যক্রমগুলো বর্তমানে অচল রয়েছে সেগুলো দেখেছি।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সংস্থা পাঠাগারটিকে অর্থ প্রদান করে সাহায্য করেছে। বিশেষকরে, কম্পিউটার সম্পর্কে শিক্ষা দিতে এই অনুদান দেয়া হয়েছে। এই অর্থ সাহায্য পেয়ে তারা তাদের সম্প্রদায়ের জন্য আরও উন্নততর ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারের সুযোগ দিতে পেরেছে। প্রাথমিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দক্ষতা এবং ই-লার্নিং ও স্কাইপ ভিত্তিক কোর্স প্রদান করতে পেরেছে। সমসাময়িক সময়ে গ্রামগুলোতে অনলাইন সেবা পৌঁছে দিতে কিছু যন্ত্রাংশ কিনতে ইউএনডিপি তাদেরকে সাহায্য করেছে। উন্নত উদ্যোক্তা তৈরিতে সেবা প্রদান করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ ৩২ টি অঞ্চলে অনলাইন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে এবং কম গতি সম্পন্ন ইন্টারনেটকে আরও গতিশীল করতে সাহায্য করেছে।
এ অঞ্চলের জনমিতির ভূগোল এবং এখানকার অত্যন্ত কম জনসংখ্যার ঘনত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারলে, এটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তা আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। যদিও এই দেশটির জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৬ জনেরও কম, তথাপি ১৭ মিলিয়ন লোক (২০১৩ সালের হিসেব অনুযায়ী) নিয়ে কাজাখস্তান জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর ৬২ তম দেশ। তাঁর অর্থ দাঁড়ায়, এখানে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকাটা বেশ কঠিন। এখানে ইন্টারনেটের গতিও বেশ ধীর, যার ফলে কম্পিউটার সম্পর্কে এখানকার মানুষের জ্ঞান খুব অনুন্নত।
এসব দিক মাথায় রেখে পাঠাগারটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কার্যক্রমের ব্যবস্থা করেছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে আছে আইটিসি প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল আলোকচিত্র গ্রহণ এবং সাংবাদিকতা সম্পর্কে কর্মশালা, ইংরেজী কোর্স এবং এ ধরণের আরও অনেক কিছু। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অবস্থিত বিভিন্ন পাঠাগার নিয়ে কাজ করে ইআইএফএল নামের একটি এনজিও। উল্লেখিত কার্যক্রমগুলো এই এনজিওর গণ পাঠাগার উদ্ভাবন কার্যক্রমের একটি অংশ।
এছাড়াও পুশকিন পাঠাগারটি সীমানা ছাড়িয়ে পাঠাগার কার্যক্রমের সাথে একত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম তৈরির কাজ করছে। তারা আশা করছেন, এ ধরনের কার্যক্রম স্থানীয় সমাজে প্রতিবন্ধীদের একীভূত হতে সাহায্য করবে।