বিতর্কিত বিশ্ববিদ্যালয় কোটা নীতি বাতিল করল স্যামসাং

Image of Info Session/Recruitment Scene

বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান স্যামসাঙ্গে একটি নিয়োগ এবং তথ্য সেশন। ছবিঃ ফ্লিকার ব্যবহারকারি স্যামসাংটুমরো (সিসি বাই এনসি এসএ ২.০)

দক্ষিণ কোরিয়াকে কোন কিছুর জন্য কুখ্যাত ভাবে “স্যামসাং প্রজাতন্ত্র” ডাক নামটি দেওয়া হয়নি।

কঠোর সমালোচনার মধ্যে স্যামসাং তাঁদের একটি নতুন নিয়োগ নীতিমালা [কোরিয়া] বাতিল করে দিয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী, আবেদনকারীদের মাঝে যারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির সুপারিশ নিয়ে আসতো, তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার এক ধাপ এড়িয়ে মনোনীত করা হতো। নীতিমালার এই পরিবর্তন সেখানে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুপারিশ নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা একটি নির্দিস্ট সীমার মধ্যে রাখতে সাহায্য করবে।

যদিও এই সুপারিশ স্যামসাং এ কোন চাকুরীর নিশ্চয়তা দেয় না, কিন্তু তারপরেও এর মাধ্যমে জীবন বৃত্তান্ত বাছাইকরণ প্রক্রিয়ায় না যেতে হওয়ায় এটি শিক্ষার্থীদের একটি বাড়তি সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হত। দক্ষিণ কোরিয়ায় স্যামসাং অন্যতম একটি কাঙ্ক্ষিত নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠান। তাই, সেখানে এমন একটি সুযোগ পাওয়া বেশ বড় ব্যাপার। এই প্রতিষ্ঠানটি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ আবেদনপত্র পেয়ে থাকে। এমনকি স্যামসাঙ্গের মান নিরূপণ পরীক্ষায় ভালো নম্বর অর্জন করতে সেখানকার বাজারে বেশ কিছু বই এবং দামী কোচিং কোর্সও [কোরিয়ান] পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, নারী এবং কিছু নির্দিস্ট প্রদেশের কলেজগুলোর বিপক্ষে এই কোটা পদ্ধতি কিছুটা অসামঞ্জস্যভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই কোটা পদ্ধতির জন্য স্যামসাঙ্গের হোম মৃত্তিকাতলে ইন্টারনেটবাসীরা শুধুমাত্র সংস্থাটিকেই কথার বাণে আঘাত করেননি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও শব্দবানে জর্জরিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের উপর স্যামসাং এর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া এই কোটা নির্দেশনাতে হয় অনুপ্রাণিত হয়েছে, না হয় মন খারাপ করেছে। স্যামসাং এর বিশ্ববিদ্যালয় কোটা সম্পর্কে দক্ষিণ কোরিয়ার টুইটার ক্ষেত্রে বার বার যে প্রতিক্রিয়াগুলো দেখা যাচ্ছে নিচে উল্লেখিত দু’টি টুইটে সেগুলোরই প্রতিফলন ঘটেছেঃ 

কোম্পানিটি এমন আচরণ করে যেন তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামন্ত প্রভু। তারা এমন ভাব করে যেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কোটা নির্ধারণের” মতো এমন উদ্ধত ব্যাপার তারা করতেই পারে। এতে প্রমাণিত হয়, এক্ষেত্রে একটি একচেটিয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠিত হয়েছে, এ ব্যবস্থা বজায় থাকছে এবং আমাদের সমাজকে এটি শক্ত করে মুঠোয় বন্দি করে রেখেছে। তাঁর সাথে সাথে এটাও প্রতিফলিত হয়েছে যে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিতে আশা খুবই ক্ষীণ।

যে মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্যামসাং এর এই প্রস্তাব গ্রহণ করে নিলো, সেই মুহূর্তে এই বিশ্ববিদ্যলয়গুলো আর শিক্ষা ক্ষেত্রে নয় বরং কোম্পানিটির জন্য ব্যবহার্য পণ্য উৎপাদনে একটি পোষ মানা যোগানদাতাতে পরিনত হল। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .