দক্ষিণ কোরিয়ায় বিপুল সংখ্যক ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের তথ্য চুরি হয়েছে। আর এই তথ্য চুরির ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার ২০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতির আশংকা করছেন। যা দেশের মোট জনসংখ্যার দুই-পঞ্চমাংশ।
ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি করেছেন এক কনসালট্যান্ট। তিনি কোরিয়া ক্রেডিট ব্যুরো নামের একটি পার্সোনাল ক্রেডিট রেটিং কোম্পানিতে কাজ করতেন। তিনি তথ্য চুরি করে ফোন মার্কেটিং কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, কোরিয়া ক্রেডিট ব্যুরো দেশের প্রধান তিনটি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানির তথ্যভান্ডারে ঢুকতে পারতো।
এই মাত্রায় গোপনীয় তথ্য চুরি সত্যিই আতঙ্কজনক: নাম, ফোন নম্বর, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর মতো মৌলিক তথ্য ছাড়াও অতি গোপনীয় তথ্যও চুরি গেছে। যা ব্যবহার করে গ্রাহককে সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে ফেলা যাবে। অতি গোপনীয় তথ্যের মধ্যে রয়েছে ক্রেডিট কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের সময়, বার্ষিক আয়, বাসার ঠিকানা, সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ, ঋণের ইতিহাস এবং নথি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২১ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়েছে।
তথ্য চুরির খবর প্রকাশিত হওয়ার পরপরই আতংকিত গ্রাহকরা কার্ড কোম্পানির স্থানীয় অফিসে দৌড়ানোর পাশাপাশি তাদের যেসব তথ্য চুরি গেছে সেগুলোর লম্বা তালিকা টুইটারে শেয়ার করেছেন। কেউ কেউ কার্ড কোম্পানি এবং কর্তৃপক্ষ নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যও করেছেন:
이름 주민번호 카드번호 자택전화 자택주소 핸드폰 직장주소 직위 직장명 직장년소득 자가 전세 월세여부 비밀번호암호 질문 카드한도 타사카드정보 신용평점 결재계좌은행명 계좌번호 이런 유출인데 cvc 비번은 안털렸으니 걱정말라니 저 입을 찢으라
— 양선주 (@londongirl2008) January 20, 2014
নাম, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর, কার্ড নম্বর, বাড়ির ফোন নম্বর, বাড়ির ঠিকানা, মোবাইল ফোন নম্বর, অফিসের ঠিকানা, অফিসের পদবি, অফিসের অফিসিয়াল নাম, বাড়ির মালিকানা, পাসওয়ার্ড প্রশ্ন, ঋণের পরিমাণ, অন্যান্য কোম্পানির ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, ক্রেডিট রেটিং, ক্রেডিট কার্ডের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য… এই ধরনের তথ্য চুরি গেছে। যদিও তারা কার্ড ভেরিফিকেশন নম্বর চুরি না হওয়ার কারণে উদ্বিগ্ন হতে নিষেধ করেছেন। আমি তাদের মুখে ঘুষি মারতে চাই।
@_2on_:성명 주민번호 휴대전화 자택전화 자택주소 직장정보 카드번호 유효기간 카드정보 결제정보 신용한도 연소득 이메일 직장번호 직장주소[…] 비번도 알려줘라
@_2on_: আমার নাম, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর, মোবাইল ফোন নম্বর, বাসার ফোন নম্বর ও ঠিকানা, অফিসের তথ্য, কার্ড নম্বর, কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের তথ্য, কার্ডের টাকা পরিশোধের তথ্য, ঋণের পরিমাণ, বার্ষিক আয়, ইমেইল, অফিসের নম্বর, অফিসের ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য চুরি হয়েছে […]। এখন আমার পাসওয়ার্ড রেখে আর কী করবেন, এটাও দিয়ে দেন!
গ্রাহকদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে কর্তৃপক্ষ বলেছে, চুরি যাওয়া তথ্য দিয়ে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। এজন্য ঘটনার কয়েকদিন পর গ্রাহকদের সুরক্ষা দিতে তারা বিশেষ প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছে। এরমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিকে কিছু শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছে। বিভিন্ন আর্থিক কোম্পানিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য নেয়া এবং এগুলো তৃতীয় কোনো পক্ষকে হস্তান্তরে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের সেবার সময় বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া গ্রাহকদের পাঁচ বছরের তথ্য সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তথ্য চুরির কারণে গ্রাহক কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হলে কোম্পানিগুলো তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এবং গ্রাহকদের নতুন কার্ড নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে অনেকেই এতে সন্তুষ্ট না।
신용카드 정보 유출 안된 사람 찾는게 쉬울 정도입니다. 카드 재발급이 가장 안전한 방법이라면 사용자의 요청이 있으면 재발급할게 아니라 카드사가 나서서 전면 재발급해줘야 합니다.
— 이창호 (@changho15) January 19, 2014
তাদের এটা জানা প্রয়োজন যে, কার তথ্য চুরি হয়নি এটা জানা খুব সহজ। তারা কেন ক্রেডিট কার্ড পুনরায় ইস্যু করার পথ খোঁজে? এটা যদি সবচে’ কার্যকর উপায় হয়, তাহলে তারা যেসব গ্রাহক নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন শুধু তাদের জন্য না করে সব গ্রাহকের জন্য কার্ড পুনরায় ইস্যু করতে পারে।
তবে রেগুলেটরি কোম্পানি ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য একটি অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা গ্রাহককে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত ধাপ তৈরি করবে। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি আরো বাড়বে:
유출은 기업이 하고, 불편은 고객이 지라는 이상한 발상. RT @tebica: 개인 정보 유출 종합대책 발표 중 “카드번호 결제 시 추가 본인 확인 절차 도입” 때문에 벌벌벌 떨고있습니다
— 이인묵(LEE Inmook) (@redsox_cs) January 22, 2014
কোম্পানির কারণে তথ্য চুরি গেছে। তবে এখন এ ঘটনার যাবতীয় ভোগান্তি গ্রাহকদের বহন করতে হবে। কী হাস্যকর যুক্তি! আরটি@টিবিকা: ব্যক্তিগত তথ্য চুরির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ সমন্বিত পরিমাপ পদ্ধতির ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পরিমাপের মধ্যে একটি হলো, “ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোনো কিছু কেনার সময়ে চিহ্নিতকরণের জন্য একটি অতিরিক্ত ধাপ সৃষ্টি হবে” যা মানুষের বিরক্তির উদ্বেগ করবে।
জাতীয় পর্যায়ে তথ্য চুরির ঘটনা এটিই প্রথম নয়, তবে এটা নিশ্চিতভাবেই সর্ব বৃহৎ। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে তত্ত্বীয়ভাবে পরিমাপ করার আবেদন জানিয়েছেন। টুইটার ব্যবহারকারী @লীএসএনএস টুইট করেছেন:
개인정보 유출 사건이 벌써 몇 번인가? 현행 주민번호 더 이상 개인 식별의 기능을 하지 못하고 범죄 악용될 알리바이를 만들어 주었다. 주민번호 제도 완전 폐지하든가 완전 다시 짜야 한다. 신용카드 전부 재발급하고 수집정보 거래 금지해야 한다. — 이창수(법인권사회연구소) (@leesns) January 20, 2014
কতবার আমরা ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম? ব্যবহারকারীকে চিহ্নিতকরণের কাজে বর্তমানের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর ব্যবস্থা দীর্ঘসময়ে কার্যকরভাবে কাজ করে না। তবে এটা ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা খুব সহজেই যে কারো ক্ষতি করতে পারবে। আমাদের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর ব্যবস্থার উন্নতি অথবা বাতিল করা উচিত। এরপর প্রত্যেক ক্রেডিট কার্ড পুনরায় ইস্যু করে গ্রাহকের কাছ থেকে কোম্পানিগুলোর তথ্য নেয়া বন্ধ করা উচিত।