লাওসের হাতিগুলোকে রক্ষা করুন

Photo from Facebook page of Elephant Conservation Center

হাতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

এক সময় লাওসকে বলা হত লক্ষ হাতির দেশ। কিন্তু বেআইনিভাবে হাতি ধরা এবং গজদন্তের ব্যবসার কারণে বর্তমানে হাতির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তাছাড়া লগিং এলাকায় অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণেও কিছু হাতি মারা যাচ্ছে।

বর্তমানে আনুমানিক ৩০০ থেকে ৬০০টি বন্য হাতি রয়েছে লাওসে:

বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বন্য হাতির সংখ্যা ৩০০-৬০০টি। অন্যান্য দেশের মতোই লাওসের বন্য হাতিরা মানুষ কর্তৃক নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে বনভূমি ধ্বংস, বেআইনিভাবে হাতি শিকার, বনে বসতি স্থাপন এবং হাতি-মানুষের সংঘর্ষ অন্যতম।

ইতোমধ্যে লাওসে বন্দী হাতির সংখ্যা ৪২০-এ গিয়ে ঠেকেছে:

দু:খজনকভাবে বন্দী হাতির সংখ্যাও কমছে। আনুমানিক ৪২০টি বন্দী হাতি রয়েছে লাওসে। নতুন শতাব্দীতে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে মাহুতরা (হাতির মালিক) হাতিদের দিয়ে সপ্তাহের সাতদিনই কাজ করাচ্ছেন। লগিং শিল্পেই হাতিদের বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা খুব কষ্টকর, বিপদজনক কাজ। পুরুষ হাতিরা এ কাজ করে খুব ক্লান্ত থাকে। এবং প্রজননে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় লগিং দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হতে পারে।

আশার কথা দেশে হাতি রক্ষার উদ্যোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। হাতি সংরক্ষণ কেন্দ্র এই সচেতনতা তৈরির কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে:

হাতি সংরক্ষণ কেন্দ্র হাতি পর্যটন ক্যাম্প থেকে নিজেদের আলাদা করেছে। তারা হাতির প্রজনন, স্তন্যপান করানো এবং রোগ নির্ণয়ের একটি আশ্রয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এদের কাছে হাতিতে চড়ে সারাদিন ঘোরাঘুরির প্যাকেজ ট্যুর আশা করবেন না।

এটি লাওসের প্রথম হাতি হাসপাতালের পাশাপাশি ইকোট্যুরিজম ক্যাম্প হিসেবেও কাজ করে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটি যেসব মাহুত প্রতিদিন হাতির আয়ের ওপর নির্ভরশীল তাদের কারিগরি এবং জীবিকা বিষয়ক সহায়তা প্রদান করে থাকে।

বন সংরক্ষণ কেন্দ্রটি উদ্ধারকৃত হাতির আশ্রয়স্থল হিসেবেও কাজ করে। নয় (Noy) নামে যে অল্পবয়স্ক হাতি রয়েছে, তারা সেগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম। কয়েক বছর পরে, হাতিগুলো নতুন নাম পেয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন প্রধান পশু চিকিৎসক ইমানুয়েল শেভ:

তিন বছর বয়সে হাতি তাদের ভবিষ্যত মাহুতের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকে। এ সময়ে তারা মানুষের সাথে কাজ করার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সাড়া দেয়া শিখে নেয়। একজন ওঝা হাতিদের বন ছেড়ে মানব বিশ্বে আসার এই গুরুত্বপূর্ণ যাত্রার আয়োজন করে। প্রশিক্ষণ শেষে হাতিদের তিনটি আখ দেয়া হয়, সেখানে তাদের নাম লেখা থাকে। হাতি প্রথম যে আখটি নেয়, আখে লেখা নামটিই তার নাম হয়।

ব্রিটা কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে হাতিদের রক্ষায় তাদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন:

হাতি সংরক্ষণ কেন্দ্র গুটিকয় জায়গার মধ্যে একটি যেখানে গিয়ে আপনি হাতিদের মানুষের চাহিদা মেটানোর কাজে ব্যবহৃত হতে দেখবেন না। এখানে হাতিদের তাল এবং চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখেই মানুষের ভ্রমণসূচি তৈরি করা হয়।

এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য যখন হাতি পছন্দ করার পালা আসে, আমি খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। সারা পৃথিবীতেই এসময়ে হাতিদের সাথে বাজে আচরণ করা হয়।

জো ইবিসুজিমা কেন্দ্রটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। পিছনে চেয়ার বহন করা হাতির জন্য যে খুব কষ্টকর সেটা তিনি সেখানে গিয়ে শিখেছেন:

আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস শিখেছি। সেটা হলো, মানুষ এবং মালপত্র বহন করার জন্য হাতির পিছনের দিকে যে চেয়ার ব্যবহার করা হয় তা হাতির জন্য খুব কষ্টের কারণ হয়। হাতির হাড়ের আকৃতির কারণে এটা হয়… হাতিতে চড়ার সবচে’ আরামদায়ক উপায় হলো, কোনো ধরনের জিন ছাড়াই ঘাড়ের ওপর বসা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .