১. দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফিলিপাইনে ‘লাখো মানুষের মিছিল’
ফিলিপাইনের আইন পরিষদের সদস্যরা পর্ক ব্যারেল ভাগাভাগির নাম করে এতোদিন অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন। একজন এটাই ফাঁস করে দিয়েছেন। এ ঘটনা প্রকাশ হলে ফিলিপাইনের সাধারণ জনগণ ক্ষেপে যান। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে পর্ক ব্যারেল বাতিলের দাবিতে মিছিলের ডাক দেন। স্থান নির্ধারণ করা হয় রাজধানীর সবচে’ বড়ো পার্ক লুনেটাতে। তবে মিছিলের আগের দিন ২৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি এবং কংগ্রেস পর্ক ব্যারেল বাতিল করে। কিন্তু মিছিলে যোগ দেয়া থেকে থামানো যায়নি কাউকে। লাখো মানুষ যোগ দেন দুর্নীতিবিরোধী মিছিলে। প্রেসিডেন্ট তৃতীয় বেনিংগো অ্যাকুইনোর শাসনামলে এটাই সবচে’ বড়ো মিছিল।
Aerial photo of #MillionPeopleMarch earlier by Paulo Alcazaren. Find me! pic.twitter.com/2cAsg5gDn3
— Cedie Lee (@muntingprinsipe) August 26, 2013
পাখির চোখে দেখা #লাখো মানুষের মিছিলের ছবি। আমাকে খুঁজে বের করুন!
২. ‘দায়মুক্তির বিলে'র প্রতিবাদ করলো থাইল্যান্ড
নভেম্বরের এক তারিখে থাইল্যান্ডের সংসদে পাস হয় ‘দায়মুক্তির বিল‘। পাস হওয়ার পরেই এটা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমনকি সরকারের সমর্থকরাও এর বিরোধীতা করেন। বিরোধীদলও এটা নিয়ে নড়েচড়ে বসে। তারা দাবি করে, এই বিলের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ এবং মানবাধিকার লংঘনকারীরা সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বিরোধীদল দাবি করে, এই বিলের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। থাকসিন সিনাওয়াত্রা দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছেন। স্থানীয় আদালত তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে।
Chulalongkorn Uni march against Thai amnesty bill panorama #ptcybertalk #redshirt @pouyingluck @thaksinlive pic.twitter.com/frGaSBC528
— issara r (@issarar) November 6, 2013
থাইল্যান্ডে দায়মুক্তি বিলের বিরুদ্ধে চুলালংকর্ন ভার্সিটির মিছিলের প্যানারোমিক ছবি।
৩. থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী আন্দোলন
দায়মুক্তি বিলের আন্দোলন ওই ঘটনার মধ্যেই থেমে যায়নি। পরে এটাই সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। বিরোধীদল আন্দোলনকে আরো সংগঠিত করে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ দাবি করে। তারা অভিযোগ করে ইংলাক তার বড়ো ভাইয়ের পুতুল হয়ে কাজ করছেন। কয়েকদিন ধরে ব্যাপক মিছিল সমাবেশ হয়। আন্দোলনকারীরা সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভবন দখল করে নেয়। আন্দোলনের মুখে ইংলাক সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তবে বিরোধীদল জানায়, পিপলস কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে তারা নির্বাচন বয়কট করবে। ধারণা করা হচ্ছে, থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো কয়েক সপ্তাহ দীর্ঘায়িত হবে। গত নভেম্বরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে কত লোক জড়ো হয়েছিলেন, তাই দেখানো হয়েছে এই ভিডিওতে।
৪. কম্বোডিয়ার নির্বাচন পরবর্তী প্রতিবাদ কর্মসূচী
গত সেপ্টেম্বরে কম্বোডিয়াতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সরকারী দলের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ উঠে। আর এর প্রতিবাদ জানাতে বিরোধীদল কম্বোডিয়া ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টির নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়। নির্বাচনে সরকারি দল সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে। নির্বাচনে তারা ৬৮টি আসন লাভ করে। অন্যদিকে বিরোধীদল পায় ৫৫টি আসন। ১৯৯৮ সালের পর সংসদ নির্বাচনে সরকারী দলের এটাই সবচে’ বাজে ফলাফল। গত সেপ্টেম্বরে নমপেনের ফ্রিডম পার্কে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ কর্মসূচীর দেখা যাচ্ছে নিচের ভিডিওতে।
৫. মালয়েশিয়ার নির্বাচন পরবর্তী ‘ব্ল্যাক ৫০৫’ প্রতিবাদ
২০১৩ সালের মে মাসের ৮ তারিখে হাজার হাজার মানুষ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে জড়ো হন। তারা নির্বাচনী ফলাফলের প্রতিবাদ জানাতে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। নির্বাচনে সরকারী জোট সামান্য ব্যবধানে জয়লাভ করে। ব্ল্যাক ৫০৫ বলতে আন্দোলনকারীরা মে'র ৫ তারিখের সাধারণ নির্বাচনের কথা বুঝিয়েছেন। নির্বাচনে সরকারী জোট ক্ষমতায় টিকে থাকতে ব্যাপক জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। সরকারী দল ১৯৫০ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। তাদের জনপ্রিয়তা কমে গেলেও সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার আসন ঠিকই ধরে রেখেছে। এই আন্দোলন দেশের অন্যান্য প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে একে মালয় সুনামি বলে উল্লেখ করেন। নিচের ভিডিওতে হাজার জনতাকে স্টেডিয়ামে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যাচ্ছে:
http://www.youtube.com/watch?v=clLlqgKKBtA
৬. সিঙ্গাপুরের হং লিম পার্কের মিছিল
২০১৩ সালের মে মাসের এক তারিখে সরকারের জনসংখ্যা বিষয়ে শ্বেতপত্রের প্রতিবাদ জানাতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সিঙ্গাপুরের হং লিম পার্কে জড়ো হয়েছিলেন। মে দিবসের প্রতিবাদ কর্মসূচীতে পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো এতো মানুষের সমাবেশ ঘটে। সেখানে তারা সরকারের জনসংখ্যা প্রোগ্রামের প্রতিবাদ জানায়। সরকারের এই প্রোগ্রামে বেশি সংখ্যক বিদেশী কর্মী আনার কথা বলা হয়েছিল। এরপরে জুন মাসের ৮ তারিখে আরো একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয় এই পার্কে। নিউজ ওয়েবসাইটের লাইসেন্সের প্রতিবাদে ফ্রি ইন্টারনেট মুভমেন্ট এই সমাবেশের আয়োজন করেছিল। দেশের ব্লগারদের আয়োজিত এটাই সবচে’ বড়ো সমাবেশ। নিচের ভিডিওতে কিছু ব্লগারের ওয়েবপেজ দেখা যাচ্ছে। তারা আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে তাদের পেজ কালো করে রেখেছেন:
৭. মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ইন্দোনেশিয়ায় সাধারণ ধর্মঘট
অক্টোরের ৩১ এবং নভেম্বরের ১ তারিখে ইন্দোনেশিয়ার শ্রমিকরা দু'দিনের সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। দেশের হাজার হাজার শ্রমিক কারখনায় না গিয়ে রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করেন। তবে গত বছরের সাধারণ ধর্মঘটের তুলনায় এবার কম সংখ্যক শ্রমিক যোগ দিয়েছিলেন।