লেবাননে সাবেক মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণে ৬ জন নিহত

সাবেক লেবানিজ অর্থমন্ত্রী মোহাম্মাদ ছাত্তাহকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে কমপক্ষে ৬ জন লোক নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন। শহরতলি বেইরুতে তার গাড়ি বহরে এই বোমা হামলা করা হয়। ব্লগ বালাদিতে নিহতদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হচ্ছেনঃ

-মোহাম্মাদ নাসের মানসুর

–সাদ্দাম আল-খানশুরি (সিরিয়ার নাগরিক)

– কেভোর্ক তাকাজিয়ান

– সাবেক অর্থমন্ত্রী মোহাম্মাদ ছাত্তাহ

–ছাত্তাহের দেহরক্ষী তারেক বাদের

ষষ্ঠ ব্যক্তিকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। 

ইলিয়াস মুহান্না তার ব্লগ কিফা নাবকিতে সাবেক মন্ত্রীর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনকথা লিখেছেন এবং তাতে তিনি উল্লেখ করেছেনঃ    

আমাদের আলোচনা চলাকালে তিনি আমাকে উৎসুক হয়ে আঘাত করেছেন এবং তার চিন্তাভাবনা বেশ নমনীয়। তিনি পরলোকের কল্পিত সুখের প্রতি অনুৎসাহী একজন বাস্তববাদী ভাবাদর্শ (…) ছাত্তাহের মনে সরকারের কোন একক সংযোজন নেই, যা ব্যক্তিক সমতা, সাম্প্রদায়িক সমতা এবং সাম্প্রদায়িক সীমানার গুরুত্বকে শ্রদ্ধা করতে পারে। রাজনৈতিক স্বীকারোক্তি বাদ সম্পর্কে তিনি ভিন্ন মত প্রকাশ করে বলেছেন, সে সময়ে এটি লেবাননে অপরিহার্য একটি বিষয় ছিল। কিন্তু শাসন ব্যবস্থাকে আরো দক্ষভাবে এবং ন্যায়সঙ্গত উপায়ে পরিচালনা করতে এটিকে পোষ মানিয়ে রাখা যেতে পারে।

মওলাহাজাতের মতেঃ

আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকেই এক ধরণের মরণোত্তর অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয়েছে। সত্যিই, ছাত্তাহ সিরিয়া এবং হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন টুইট (আপনি এখানে সে টুইটগুলো পাবেন) করেছেন। কিন্তু তার শেষ টুইটটি দীর্ঘ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। এটিতে ক্ষমতা গ্রহণ, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ, চাপ, হিজবুল্লাহ এবং সিরিয়া নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছিল। এই বোমা বিস্ফোরণের আধঘণ্টারও কম সময়ের আগে টুইটটি করা হয়েছিল। এম৮ – এর জন্য এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না।

এই পরিস্থিতিতে এই রাজনীতিবিদের শেষ টুইটটি নিঃসন্দেহে একটি অশুভ বার্তা হিসেবে দেখা হতে পারেঃ 

@মোহাম্মাদ_ছাত্তাহঃ সিরিয়া ১৫ বছর ধরে লেবাননের নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে যে আধিপত্য খাটিয়ে আসছে, হিজবুল্লাহও সেই একই পরিমাণ আধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্যে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। 

প্রতিনিয়ত দেশটিতে মানবীয় যে সকল শোকাবহ ঘটনা ঘটে যাচ্ছে তাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড়িয়ে লেবাননের নাগরিকেরাও শোক পালন করেছে। ব্লগার রিতা কামেল একটি ছবি পোস্ট করেছেন। “২০১৩ সালের সবচেয়ে শোকাবহ সেলফি ছবিটি” শিরোনামে সম্ভবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সংখ্যকবার শেয়ার করা হয়েছে। বোমা বিস্ফোরণের কয়েক মুহূর্ত আগে একদল কিশোর কিশোরী এই ছবিটি তুলেছে। ব্লগারের মতে, তারা সবাই আহত হয়েছে। তবে তারা সবাই এখন সুস্থ হওয়ার পথেঃ 

মোহাম্মাদ এল সার, ওমার বেকদাশ, রাবিহ ইউসুফ এবং আহমেদ মোঘরাবি সহ সকল কিশোর কিশোরী আহত হয়েছে; শুধুমাত্র মোহাম্মাদের অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন। তবে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবদের মতে এখন তার অবস্থা বেশ সুস্থ।

এ ঘটনা যে কারো সাথে ঘটতে পারত। হিংস্র সক্রিয় শক্তি ক্রমাগত জনগনের জীবন বিপর্যস্ত করেই চলেছে।

১৬ বছর বয়সী, মোহাম্মাদ এল সার একজন লেবানিজ তরুণ। তার প্রিয় শখ সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। তার জন্য প্রার্থনা করুন। তাঁর পরিবার এবং তাঁর বন্ধুবান্ধবের জন্য প্রার্থনা করুন, যাদেরকে এই অবর্ননীয় শোকাবহ ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। মোহাম্মাদ, আমরা সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।

সবার জন্য দোয়া করছি, যারা গুরুতরভাবে আহত হয়েছে এবং যাদের জীবন আটকে ধরে রাখা হয়েছে। কেন “বার্তাগুলোকে” এভাবে রক্তে রঞ্জিত করা হয়? এসবের শেষ হবে কবে? 

লেবাননে প্রায়ই এ ধরনের মর্মান্তিক সহিংসতা এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটতে দেখা যায়। গত মাসে যখন বেইরুতে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসে হামলা করা হয়, তখন কমপক্ষে ২৩ জন লোক মারা যায়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .