যেহেতু সিরিয়াতে জাতীর গৃহযুদ্ধ চতুর্থ বছরে পদার্পণ করেছে, তাই সিরিয়ার খিস্টান সম্প্রদায় নীরবে তাদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালন করেছে। এই যুদ্ধে ১ লক্ষেরও বেশী লোক নিহত হয়েছে। নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে উৎখাত হওয়া লাখ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় খুঁজছে।
আশ্রয়হীনতার সাথে সাথে পুরোদস্তুর শীত এসে পরেছে এবং তারা ফিরে যাওয়ার জন্য মিনতি করছে। এ অবস্থা আল জাজিরার রিপোর্টে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এ বছরে সিরিয়াতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, মৃত্যু এবং প্রচুর পরিমাণে অপহরণের চাক্ষুষ প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে দেশটির বেশীরভাগ নাগরিকই আশাহত হয়ে পড়েছে। নাগরিকদের এই নৈরাশ্য বিভিন্ন শিল্পীদের শিল্প কাজে ফুটে উঠতে শুরু করেছে। মাঝে মাঝে তারা কয়েক লক্ষ শব্দের জায়গায় কেবল মাত্র একটি শিল্পকর্মের দ্বারা একটি জাতির নিদারুণ বেদনা ফুটিয়ে তোলেন।
সিরিয়ার শিল্পকর্মে সান্টা ক্লজের চিত্রাঙ্কন
সিরিয়াতে অপহরণের মাত্রা তুলে ধরতে জাওয়াদ একজন অপহৃত সান্টা ক্লজের একটি ছবি এঁকেছেন। পুরনো ছেঁড়া কাপড় পরা অবস্থায় বন্দুকের সামনে হাঁটু মুড়ে বসে থাকা অবস্থায় একজন সান্টা ক্লজের ছবিঃ
আনাস সালামেহের আরেকটি চিত্র কর্মে দেখা যায়, সিরিয়ার আল ইয়ারমুক শরনার্থী শিবিরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সান্টার মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছেঃ যেহেতু সিরিয়ার শহীদ বাচ্চাদের জন্য সান্টা ক্লজের উপহারগুলো নিয়ে আসতে অনেক বেশী দেরী হয়ে গেছে, তাই এই চিত্রকর্মগুলোতে সান্টাকে কান্নারত অবস্থায়ও দেখা গেছেঃ এখানে সান্টা তাদের কবরের পাশে শোকাহত অবস্থায় বসে আছেঃ ছুটির দিনের বিদেহী আত্মাঃ মিঠে আওয়াজের ছড়া, ক্রিসমাস গাছ এবং অলঙ্করণএকটি ক্ষুদ্র ব্যাঙ্গ নাটিকাতে জিঙ্গল বিলের ক্রিসমাস গানের মাধ্যমে সিরিয়ার স্বাধীনতা চাওয়া হয়েছে এবং বাশার আল-আসাদের উচ্ছেদ কামনা করা হয়েছে। মোগলি মোগলি নামে পরিচিত, এই নাটিকাটি যিনি তৈরি করেছেন, তিনি নিপীড়িত হয়ে মারা গেছেনঃ
আনোয়ার আল ঈসা রক্তে ভেজা রূপক অর্থে একটি অলঙ্করণ এঁকেছেন। দেখা যাচ্ছে, একটি হিমাগারে অলঙ্করণটি ঝুলছে। সিরিয়ার নাগরিকরা এই ক্রিসমাসে যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এই শিল্পকর্মটিতে যেন সেই ভয়াবহ হিমায়িত অবস্থা চিত্রিত করা হয়েছেঃ
একটি বোমা বিস্ফোরণের পরিণামে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানে আমজাদ ওয়ারদেহ একটি ক্রিসমাস গাছের ছবি এঁকেছেনঃMerry Christmas and well wishes from Bashar! #Syriapic.twitter.com/ZC3wuM0lp7
— رهام (@Rehambo) December 24, 2013
বাশারের পক্ষ থেকে বড় দিনের শুভেচ্ছা !
এই বিবেচনা করে হানি আব্বাস একটি শরনার্থী তাঁবুর বাইরে রাখা একটি ক্রিসমাস গাছের ছবি এঁকেছেনঃ
পিপা দিয়ে ছোট ছোট হালকা পাতলা তুষার টুকরা তৈরি করে, তা দিয়ে আলেপ্পোর শিল্পী মোহাম্মাদ আলওয়েইস “বড়দিনের শুভেচ্ছা”লিখেছেন। গত সপ্তাহে আলেপ্পোর ওপর প্রায় ১ শত পিপা নিক্ষেপের বিষয়ে সূক্ষভাবে খোঁচা মারতেই তিনি এই পথ অবলম্বন করেছেনঃ যাইহোক, অন্ধকারের পাশাপাশি একটি সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা এবং মিট মিট করে জ্বলা বিশ্বাসের আলোও উঁকি দেয়। দেখুন কিভাবে, সিরিয়ার চলচ্চিত্র নির্মাতা ইয়াদ আলজারদ সারাকিবের ছোট ছোট বাচ্চা, মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের একসাথে ক্রিসমাস উদযাপনের চিত্র ধারণ করেছেন। ক্রিসমাস উদযাপনের সাথে সাথে তারা তাদের স্বপ্নগুলোও ভাগাভাগি করে নিয়েছেঃ