নির্বিচারে আটককে বৈধতা দিল সৌদি আরব

সৌদি আরব খুব সম্প্রতি একটি আইন অনুমোদন করেছে, যা দিয়ে বিচারক অনির্দিষ্টকালের জন্য যে কাউকে আটক করতে পারবেন।

২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিযুক্ত সৌদি পরামর্শমূলক বিধানসভার একটি কমিটি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত আদালতের মামলা ছাড়াই কাউকে আটক রাখার উপর সীমা অপসারণের প্রস্তাব করেছিল। তার পর থেকেই প্রস্তাবটি মানবাধিকার সমর্থনকারীরা সমালোচনা করে আসছিলেন। কারণ, এটা সন্ত্রাসবাদের উপর তথাকথিত যুদ্ধের নির্যাতনের বৈধতা দান এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকতর কঠোরতার দরজা খুলে দিতে পারে। প্রস্তাবিত সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারক ব্যক্তির আটকসীমা অসীমভাবে প্রসারিত করতে পারবেন, এমনকি যদি বন্দীর বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের করা নাও হয়ে থাকে।

গত ২২ নভেম্বর তারিখে সৌদি বাদশা আইনে পরিণত হতে যাওয়া এই সংশোধনীটি অনুমোদন করেন, যা গত ৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়।

নির্বিচারে কারাদণ্ড প্রদানের জন্য সৌদি সরকারকে সবসময় সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে। স্বাধীন মানবাধিকার সূত্র বলেছে যে [আরবী ভাষায়], ত্রিশ হাজারেরও বেশি নির্বিচারে কারারুদ্ধ মানুষ রয়েছে, যাদের কোন ধরণের ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাঁদের আইনজীবীদের কাছে বা আদালতের বিচারের প্রবেশাধিকার ছিল না। তাঁদের অনেকেই নাইন ইলেভেনের সময় “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে” গণ গ্রেফতারের শিকার।  

সরকারি মানবাধিকার কমিশন একটি বৈঠক আয়োজন করে যেখানে তারা সংশোধনীটি অনুমোদনের জন্য বাদশাহকে ধন্যবাদ জানান। আল-রিয়াদ সংবাদপত্র রিপোর্ট [আরবী ভাষায়] করেছে:

وأشار المجلس إلى أن صدور هذه الأنظمة الثلاثة تؤكد النهج السليم الذي سارت عليه المملكة منذ تأسيسها في ترسيخ دعائم الحق والعدل، موضحاً أن تلك الأنظمة ستحقق، بإذن الله، نقلة جوهرية في مسيرة نظام القضاء الذي كفل حفظ الحقوق وصونها، وستسهم في تطوير أجهزة القضاء.

বোর্ড লক্ষ্য করেছে, রাজতন্ত্রটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য যে সঠিক পথ গ্রহণ করেছে তা এই তিনটি প্রবিধান প্রদানের মাধ্যমে আবারও নিশ্চিত করল। [বোর্ড] লক্ষণীয় যে, এইসব নিয়মকানুন, বাদশাহর ইচ্ছা, বিচার বিভাগের আমূল পরিবর্তন মানুষের অধিকার রক্ষা করবে এবং বিচারিক প্রতিষ্ঠানকে আরও উন্নত করতে অবদান রাখবে।

সক্রিয় কর্মী মোহাম্মদ আল-আব্দুলকারিম সংশোধনীর সম্ভাব্য ফলাফল ব্যাখ্যা করেছেন:

১১৪ ধারা অনুযায়ী, সন্দেহভাজন মনে হলেই বিচারক যে কাউকে কোনো সীমা ছাড়াই আটক করতে পারবেন। কাউকে কোন বিচার ছাড়াই পাঁচ বছরের জন্য কারারুদ্ধ করে রাখতে পারবেন আবার তারপরই কোনো ধরণের ক্ষতিপূরণ ছাড়াই নির্দোষ বলে চিহ্নিত করতে পারবেন। 

টুইটার ব্যবহারকারী সুলতান আল-ফিফি একটি পূর্ববর্তী আদালতের মামলার উদ্ধৃত দিয়ে এই সংশোধনীটির সমালোচনা করেছেন, যেখানে বিচারক রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে খুবই দমনমূলক ছিলেন:

নির্বিচারে আটক করার আগে একজন বিচারকের ওয়ারেন্টের শর্ত যোগ করার পদ্ধতি কোন গ্যারান্টি নয় যখন বিচারক আল হাশমীকে বলেন [রাজনৈতিক কর্মী]: তুমি একটি তলোয়ারের [দ্বারা হত্যা করার] যোগ্য, কিন্তু আমি তোমাকে ৩০ বছরের লঘু কারাদণ্ড দিলাম। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .