- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

জাপানের গোপনীয়তা রক্ষার বিলের বিরুদ্ধে মত দিল প্রতিবাদকারী ও সাংবাদিকরা

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, জাপান, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, প্রতিবাদ, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার
Protest against Japan's Secrecy Law [1]

গত ২১ নভেম্বর, ২০১৩ তারিখে জাপানে গোপনীয়তা রক্ষা বিলের বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তোলা ছবি। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছেন, “গোপনীয়তা রক্ষা বিল নয়, সংবিধানকে রক্ষা কর”।   

জাপানের টোকিওর হিবিয়া উদ্যানে কয়েক হাজার লোক হাঁটা কর্মসূচী পালন করেছে। তারা একটি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই কর্মসূচী পালন করে। জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপদগ্রস্ত করে এমন সব শ্রেণীভুক্ত তথ্য ফাঁসের জন্য বিলটিতে শাস্তি প্রয়োগের বিষয়টি বলিষ্ঠ করা হয়েছে। সমালোচকেরা জোরালোভাবে এই বিলটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ তারা মনে করছেন, এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে বাঁধাগ্রস্থ করবে।

মানবাধিকার দল, শ্রমিক ইউনিয়ন, দ্যা জাপানিজ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি এবং সচেতন নাগরিকেরা গত ২১ নভেম্বরের প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছেন। আয়োজকদের [জাপানিজ] মতে, [2] বিলটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানিয়ে প্রায় ৭ হাজার লোক এই হাঁটা কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছে।

এই বিলটি পাসের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা, কূটনীতি, পাল্টাপাল্টি-সন্ত্রাস এবং পাল্টাপাল্টি-গুপ্তচরবৃত্তি সম্পর্কিত জাতীয় গোপনীয় বিষয় ফাঁস করার জন্য আরো কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে। [3] তথাকথিত এই গোপন তথ্য রক্ষা আইনে [4] “জাতীয় গোপনীয়তা” কি, তা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে, সে বিষয়টি কিন্তু এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। 

হাঁটা কর্মসূচী পালনের আগের দিন, একদল সাংবাদিক টোকিওতে একটি প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করে। বিলটির প্রতি জনসম্মুখে অনাস্থা প্রকাশের জন্য এই প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিক এবং সমালোচক সইচিরো তাহারা সভায় বক্তব্য [5] [জাপানিজ] রাখেনঃ 

私たちが普段やっている取材では、オフレコ取材、共謀、教唆などあたりまえ。この法律で“不当な取材”とされたら10年の懲役刑を喰らう。これでは報道は萎縮してしまう。これは危険きわまりない法律で、とんでもない

আমাদের মতো সাংবাদিকতা পেশায় সাধারণত রেকর্ড থেকে খবর সংগ্রহ করা হয়… যদি বিলটি জোর করে পাস করা হয়, তবে আমাদের প্রতিবেদন তৈরি করার কাজটিকে অনুপযোগী সংবাদ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে করে আমাদের দশ বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে। এটি সাংবাদিকদের বিবর্ণ করে ফেলবে। এমন একটি বিল পাস করা বিপদজনক এবং উদ্ভট কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়।

Journalists criticize Secret Information Protection Act [6]

গত ২০ নভেম্বর, ২০১৩ তারিখে টোকিওর একটি প্রেস কনফারেন্সে গোপনীয়তা রক্ষা বিলের সমালোচনা করছেন। ছবিঃ লাবোরনেট জাপান 

একটি লন্ডন ভিত্তিক সংস্থা, ধারা ১৯ এর মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন এবং তারাও এই বিলটির নিন্দা করেছেঃ   [7]

ধারা ১৯ ঝুলে থাকা বিশেষ গোপনীয়তা রক্ষা বিলটি বর্জন করতে জাপানের জাতীয় ডায়েটের (জাপানের সংসদ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কেননা মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক মানদন্ডকে বিলটি লঙ্ঘন করে। 

ব্যাপক সংখ্যক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বিলটির কথা উল্লেখ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্লেষণকারীদের মতে, প্রতিবাদ চলাকালীন সময়ে এক সপ্তাহে ৩ লক্ষ ৭০ হাজারেরও [8]বেশী টুইটে বিলটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনটির বিরুদ্ধে তাদের সামগ্রিক চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশ করতে “গোপনীয়তা আইন ধ্বংস করুন”(#秘密保護法をブッ潰せ) শিরোনামের হ্যাশট্যাগটির অধীনে ব্যবহারকারীরা তাদের মতামত তুলে ধরেছেন।

এই বিপদের পাশাপাশি বিলটি তথ্য ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়ার দাবি করছে। “কে” নামে পরিচিত একজন ছদ্মনামধারী আইনজীবী সাপ্তাহিক প্লেবয়ের একটি প্রবন্ধে [9] তুলে ধরেছেন যে, বিদেশী গুপ্তচরেরা হয়তোবা তথ্য ফাঁস করার শাস্তির আওতায় পড়বেন নাঃ 

このままでは日本ばかりが外国の機密を守る義務が生じて、日本の機密は他国に奪われ放題という悲惨な状態に陥ってしまうと思います……

আমি মনে করি, বাইরের দেশগুলোর দ্বারা মনোনীত হওয়ায় আইনটি অবশেষে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে সম্ভাব্যরূপে শুধুমাত্র জাপানকে বাধ্য করবে। সেখানে জাপানের জাতীয় গোপনীয়তা নিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা হতে পারে এবং অন্যান্য দেশও তা পেয়ে যেতে পারে। এমনটি হলে, সেটি হবে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি।