ফটোগ্রাফার ব্রান্ডন স্ট্যানটন-এর ব্লগ হিউম্যানস অফ নিউ ইয়র্ক ;(হোনি)-এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, পেশাদার এবং অপেশাদার ফটোগ্রাফাররা এ্যাক্রোস দি ওয়ার্ল্ড ব্লগ এবং ফেসবুকের পাতা তৈরী করেছে, যেখানে তারা জীবনের সকল প্রান্তের ছবি এবং গল্প সংগ্রহ করেছে-আর ল্যাটিন আমেরিকা এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়।
স্টানটন-এর চিন্তা ল্যাটিন আমেরিকার ফটোগ্রাফারদের অনুপ্রাণিত করেছে, যারা বৈচিত্র্যময় জনতার চিত্র দিয়ে তাদের দেশ অথবা শহরকে ছবিতে সাজাতে চায়।
এটি এই অঞ্চলে কয়েকটি “হিউম্যানস অফ …” প্রকল্পের এক বিস্তারিত সারসংক্ষেপ।
বুয়েনোস আয়ার্সের মানুষেরা
তার পরিকল্পনা নগরের কর্মকর্তাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যার ফলাফল হচ্ছে প্রথম হিউম্যানস অফ বুয়েন্স এইরিস প্রদর্শনীর আয়োজন। দি আর্জেন্টিনা ইন্ডিপেন্ডেনস সংবাদ প্রদান করেছে যে ” এই প্রদর্শনীর ‘মাইক্রো হিস্টোরিয়াস ডেল মাইক্রোসেন্ত্রো’ বিভাগ সেই সমস্ত ব্যক্তির ছবি প্রদর্শন করে যারা শহরের কেন্দ্রীয় ব্যাবসায়িক এলাকায় বাস অথবা কাজ করে”।
দি আর্জেন্টিনা ইন্ডিপেন্ডেন্টকে, জিমেনা বলেন যে হিউম্যানস অফ বুয়েন্স এইরেস-এর কাজে যুক্ত হয়েছেন কারণ কেবল মানুষের সাথে সম্পৃক্ত হতে ভালোবাসেন তা নয়, একই সাথে এই ধরনের যোগাযোগ তৈরী হওয়া একটা শিক্ষা। প্রত্যেকটি ব্যক্তি আসলে একটা বিশ্ব”।
কলম্বিয়া আর বোগোটার মানুষেরা।
ডিজাইনার মাউরেন্ট রোয়া এবং স্থপতি গাবর সেজনটপেট্রেই হিউম্যানস অফ কলম্বিয়ার তৈরী করেছে। তাদের এক ভ্রমণের সময় এই জুটির মাউরিচিয় রোমেরোর সাথে সাক্ষাৎ ঘটে, যে এই প্রকল্পে যোগ দেয় এবং এতে কয়েকটি ছবি প্রদান করে। যখন ভ্রমণ করছিল, তখন তারা খেয়াল করে যে তারা কলম্বিয়া সম্বন্ধে তেমন একটা জানে না অথবা দেশটি সম্বন্ধে তাদের নেতিবাচক ধারনা রয়েছে; তাদের উদ্দেশ্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে তারা কলম্বিয়ার ভিন্ন এক দিক প্রদর্শন করা। মুউরেন্ত ব্যাখ্যা করেন, “চিন্তাটি হচ্ছে তার জনতার মাধ্যমে কলম্বিয়াকে উপস্থাপন করা কারণ দেশটির জাতিগত বৈচিত্র্য অসাধারণ। দেশটি আমেরোইন্ডিয়ান, স্প্যানিশ এবং আফ্রিকার বংশোদ্ভুত নাগরিকদের মিশ্রণে গড়ে উঠেছে, আর এটাই আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই”।
কলম্বিয়ার আরো ছবির জন্য হিউম্যানস অফ বোগোটা পাতাটি আপনি দেখতে পারেন, আগস্ট ২০১৩-এ, এই পাতাটি তৈরী করেছেন জন কার্ডোনা এবং জোনাথান আরেভালো।
জন এবং জোনাথন যে সাড়া পেয়েছেন এবং ঘটনাক্রমে যে সকল নতুন মানুষের দেখা পেয়েছেন ও গল্প শুনতে পেরেছেন, তা তারা তাদের পাতার মাধ্যমে বিশ্বকে দেখাতে পেরেছেন, এসবের দ্বারা দুজনে অনুপ্রাণিত। তারা বলছে যে এই কাজ “আমাদের প্রদর্শন করছে যে কিভাবে আমরা সকলে কোন একজন চিহ্নিত করতে পারি, তা সে যতদুরেই থাকুক না কেন”?
বলিভিয়ার মানুষেরা
৩ নভেম্বর,২০১৩ তারিখে, হিউম্যানস অফ বলিভিয়ার জন্ম, যা এই অঞ্চলে নিউইয়র্কের মানুষের প্রতিচ্ছবির অন্যতম এক নতুন ফেসবুক পাতা। নিউইয়র্ক এবং একই ধরনের প্রকল্প হিউম্যানস অফ আমস্ট্রাডাম-এর মত, এখানে “ব্যক্তির নিজস্ব কাহিনীর মাধ্যমে যে মানবিক অনুভূতির গঠিত হয়” এস্টেলি পুয়েনেটে এবং মিজহেইল কালে তার সমান উপলব্ধি সৃষ্টি করতে চেয়েছেন।
যদিও মিজহেইল নিজে বেশীর ভাগ ছবি তোলেন, তারপরেও তারা অন্য ফোটগ্রাফারদের কাছে যান যারা বলিভিয়ার ভিন্ন এলাকার ছবি প্রদর্শন করতে পারে। এস্টেলি ব্যাখ্যা করেছে “এই বৈচিত্র্যতা আমাদের পরিচয় বিনির্মাণে ছবি এবং ফোটগ্রাফির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা এবং তা প্রদর্শনের জন্য একটা জায়গা তৈরীর সুযোগ করে দেয়। আমরা চাই এটা আমাদের প্রতিচ্ছবির একটা কারণ হয়ে দাড়াক।
হন্ডুরাসের মানুষেরা
ক্লাদিয়া এলভির এবং ড্যানিয়েলা মেইজা তাদের ফেসবুকের পাতা হিউম্যানস অফ হন্ডুরাসের -এ তার নাগরিকদের মাধ্যমে হন্ডুরাসকে জানার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে”। .
ক্লাউদিয়া, স্টান্টোনের ব্লগ এবং কি ভাবে সে কেবল শুধু “মনোমুগ্ধকর ছবি তুলেনি, সাথে প্রতিটি ছবিকে সে মানুষ তুলে আনার কাজে ব্যবহার করেছে এবং কি ভাবে প্রতিটি ছবি একটি গল্প বলছে যা একজন পাঠকের হৃদয়ে অনুরণন সৃষ্টি করে, তা অনুসরণ করা শুরু করে।”
তার বন্ধু ড্যানিয়েল সাক্ষাৎকার পরিচালনা করে। ক্লদিয়া এবং ড্যানিয়েল চায় হন্ডুরাসে যে সহিংসতা চলছে এবং বিশ্বের দেশটির যে নেতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে তা পাল্টাতে, এবং একই সাথে হন্ডুরাসের নাগরিকরা যে নিজের দেশকে দেখে তা তারা বদলে দিতে চায়।
এই সমস্ত ছবি এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ক্লাউদিয়া এবং ড্যানিয়েলের আশা, এর মাধ্যমে তারা প্রদর্শন করবে যে হন্ডুরাস হচ্ছে এমন একটা দেশ “ কঠোর পরিশ্রমী নাগরিকে পরিপূর্ণ, এখানকার নাগরিকরা বিশ্বের আর সব দেশের নাগরিকদের মতই স্বপ্ন দেখে, তারা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, আনন্দে এবং দুঃখে ভাসে”।
গুয়াতেমালার মানুষের
সেপ্টেম্বর ২০১৩-এ হিউম্যানস অফ গুয়াতেমালা নামক ফেসবুকের পাতা শুরু করার আগে এলমার আলভারেজ গুয়াতেমালার বিভিন্ন এলাকার মানুষের ছবি তোলা শুরু করেন। ওয়েন্ডি ডেল আগুলিয়া , এখন যিনি শিরোনাম লিখছেন তিনি এলমারকে হিউম্যানস অফ নিউইয়র্ক সম্বন্ধে জানান, আর এতে সে গুয়াতেমালা সম্বন্ধে একই ধরনের একটা পাতা তৈরীতে উৎসাহিত হয়।
এলমার এবং ওয়েন্ডি অসাধারণ জনতার স্বতঃস্ফুর্ত মূহূর্ত যা তাদের হাসি, ধৈর্য্য, কৌতূহল, কঠোর পরিশ্রম, লজ্জা, দয়া এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, তা অনুসন্ধান করছে !”
আরো “হিউম্যানস অফ…” প্রকল্প
উপরের ছবিটি নেওয়া হয়েছে হিউম্যানস অফ মেক্সিকো পাতা থেকে, যা মার্চ ২০১০ তৈরী করা হয়। একই সাথে মেক্সিকোতে তৈরী করা হিউম্যানস অফ মেক্সিকো সিটি নামক পাতা “একেবারে একটি রাস্তার দৃশ্যের মাধ্যমে মেক্সিকো সিটির ছবি শুমারী” তৈরীর অনুসন্ধান করছে।
জুলাই ২০১৩-এ হিউম্যানস অফ কোস্টারিকা , নামক একটি পাতা সৃষ্টি করা হয়, যার এখন লাইকের সংখ্যা ১,৭০০ টি।
ব্রাজিলে, হিউম্যানস অফ রিও ডে জেনেইরো নামক ফেসবুক পাতা এই অঞ্চলে সবচেয়ে জনপ্রিয় যেটিতে প্রায় ৯,০০০-এর বেশী লাইক পড়েছে।
হিউম্যানস অফ নিকারাগুয়া, হিউম্যান অফ পানামা, এবং চিলির, হিউম্যানস অফ সান্টিয়াগো- কন্ট্রিবিউটরদের আহ্বান জানায়, যেন তারা এই প্রজেক্টের জন্য ছবি প্রদান করে। অন্যরা যেমন হিউম্যানস অফ কুইটো, হিউম্যানস অফ লিমা, হিউম্যান অফ পেরু, এবং হিউম্যানস অফ আসুনসিওন- এক মাসের কম সময়ের মধ্যে তৈরী করা হয়েছে .