ওয়ালিদ আল-সুনানি একজন উগ্রবাদী জিহাদি ঘরানার মানুষ। অতি জিহাদি ধ্যান-ধারণার কারণে সাড়ে আট বছর জেল হয়েছিল তার। সৌদি আরবের জনপ্রিয় টিভি শো এমবিসি এইট পিএম-এ সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার দেয়ার পর সৌদি আরবের বিচার বহির্ভূত আটকাদেশ নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সাক্ষাত্কারটি ধারণ করা হয়েছিল গত জুলাই মাসে। ইতোমধ্যে দুইবার এর প্রচারের সময় পেছানো হয়েছে। সাক্ষাত্কারে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কেন সৌদি আরবের নাগরিকত্ব এবং আনুগত্য ত্যাগ করেছিলেন। তাছাড়া আধুনিক রাষ্ট্র মূলগত ভাবে সেক্যুলার এবং আল সৌদ শাসকদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্ট ও ইসলামের শত্রু বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সাক্ষাত্কারে এও জানিয়েছেন, আল কায়েদা সৌদি আরবের ভিতরে অপারেশন চালালে তিনি তাতে সমর্থন দিবেন। আফগানিস্তানে এবং ইরাকে মার্কিন দখলদারির বিরুদ্ধে যুদ্ধকেও তিনি সমর্থন করেন।
বিচার বহির্ভূত আটকাদেশ নিয়ে সৌদি আরবের সমালোচনা সবসময় ছিল। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, ৩০ হাজার মানুষকে বিচার বহির্ভূত ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। এদের কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই আটক করা হয়েছে। আইনজীবীদের সাথে তাদের সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেয়া হয় না। তারা বিচারও পান না। এদের বেশিরভাগই গ্রেফতার হয়েছেন ৯/১১ এর পরে, সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের সময়ে।
কিছু টুইটার ব্যবহারকারীর ধারণা, আল-সুনানি রাষ্ট্র সমর্থিত ওয়াহাবিজমের একনিষ্ঠ প্রতিনিধিত্বকারী। ধর্ম তাত্ত্বিক হাকিম আল-মুতিরি টুইট করেছেন:
سأعرض فتوى من فتاوى أئمة الدعوة في نجد قبل مئة سنة في شأن أهل الخليج ودخولهم تحت حماية بريطانيا والتي تؤكد أن #السناني ملتزم بها تماما
— أ.د. حاكم المطيري (@DrHAKEM) November 18, 2013
আমি একশ বছর আগের নাজিদের অনেক ধর্ম তাত্ত্বিকের ফতোয়া দেখাতে পারবো যারা উপসাগরীয় অঞ্চলের মানুষদের ব্রিটিশদের অধীনে থাকতে বলেছিলেন। এটা নিশ্চিত করে যে, আল সুনানি পুরোপুরি এর বাইরে যেতে চেয়েছেন।
পরে তিনি একগুচ্ছ ফতোয়া হাজির করেছেন যা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে শুরুর দিকের ব্রিটিশ প্রভাবকে আক্রমণ করেছিল এবং মানুষজনকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
সৌদি ব্লগার বাদের আল-রাশিদ ব্যঙ্গ করে টুইট করেছেন:
ترى كلام السناني هو اللي درسناه في المدارس في كتاب التوحيد لابن عبدالوهاب .. الفرق إن أغلب الطلاب كانوا يشخبطون على الطاولة والأستاذ يشرح.
— بدر الراشد (@BALRashed) November 17, 2013
আল-সুনানি যখন বলে ধর্মীয় পাঠক্রমে আমরা কি পড়েছি। পার্থক্য হলো, শিক্ষক যখন ক্লাশরুমে এটি ব্যাখ্যা করছিলেন, তখন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ডেস্কে বলে আঁকাআঁকি করছিল।
সৌদি কলামিস্ট ইব্রাহিম আল-কাহতানি সৌদি সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের আবদুল্লাহ আল-হামিদ, মোহাম্মদ আল-কাহতানি এবং সুলিমান আল-রাশদীর মতো মধ্যপন্থী মানবাধিকার কয়েদিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানিয়ে একজন উগ্রপন্থীকে আমন্ত্রণ করার সমালোচনা করেছেন:
قبل لا تطلع من السجن سير على زنزانة الحامد و القحطاني و الرشودي..فرصة تكشفهم لكافة الشعب و المسلمين #وليد_السناني_في_برنامج_الثامنة
— إبراهيم القحطاني (@brhom) November 17, 2013
কারাগার ত্যাগ করার আগে আল-হামিদ, আল-কাহতানি এবং আল-রুশদীর কক্ষে যান। প্রত্যেক সৌদি এবং মুসলিমের কাছে তাদের উন্মোচনের এটা আপনার একটা সুযোগ।
সৌদি ব্লগার এমসাঈদ আল-রুশীয়াদ মন্তব্য করেছেন:
#لقاء_وليد_السناني_مع_الثامنة
عموما الي خطط للحلقة كان له هدف ..واضح من الردود ان الهدف جاء عكس ماكان متوقع (:
— مساعد الرشيد (@msa3d_r) November 17, 2013
এটা খুব সহজেই বোঝা যায়, যিনি এই এপিসোডের পরিকল্পনা করেছেন, তার একটা উদ্দেশ্য ছিল। এটাও বোঝা গেছে যে, এই এপিসোড বিতর্ক তৈরি করবে। তারা এটাই আশা করেছিল।