
ছবিটি আরএএসএসডি'র এক্সক্লুসিভ ভিডিও থেকে নেয়া। মিশরের কোনো এক থানায় একজনের ওপরে নির্যাতন করতে দেখা যাচ্ছে।
মিশরে পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা আবার আলোড়ন তুলেছে। ফাঁস হওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, পুলিশ অফিসার একজনকে মাটিতে ফেলে পিটাচ্ছে। আরএএসএসডি নিউজ নেটওয়ার্ক ভিডিওচিত্র প্রচার করেছে। এই ভিডিওচিত্রটি মিশরের মানুষদের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের শাসনামলে পুলিশি নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, পুলিশি নির্যাতনের ইস্যু নিয়েই মিশরে ব্যাপক গণআন্দোলন শুরু হলে হোসনি মোবারকের পতন ঘটে।
গত ২ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে আরএএসএসডি'তে ভিডিওচিত্রটি প্রকাশ হয়। ইউটিউবেও ভিডিওটি রয়েছে। তবে নির্যাতনের ঘটনা কবে কোথায় ঘটেছিল, তা জানানো হয়নি।
জায়গা দেখে মনে হচ্ছে, ঘটনাটি ঘটেছিল কোনো একটা থানার ভিতরে। সেখানে একজন মানুষকে চাবুক মারা হচ্ছে। এবং তার কাছে স্বীকারোক্তি চাওয়া হচ্ছে যে, তার নাম সাওসান (একজন মেয়ের নাম) এবং সে সঙ্গম করতে চাচ্ছে। মানুষটিকে দিয়ে জোর করে বারেবারে একই বাক্য বলানো হচ্ছে। (Caution: Strong language)
টুইটারে আরএএসএসডি লিখেছে:
#تسريبات_رصد| تسريب جديد حصلت عليه شبكة #رصد يظهر وحشية و لا إنسانية الانقلاب من داخل مركز شرطة أبو قرقاص بمحافظة… http://t.co/c3JsJkcbBI
— شبكة رصد (@Rassd_News) November 3, 2013
আরএএসএসডি লিকস নতুন একটি ভিডিও হাতে পেয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, মিন্যা প্রদেশের আবু কারকাস থানার ভিতরে সৈনিকেরা নৃশংস এবং অমানবিক কাজ করছেন।
যদিও মিশরের রাস্তা-ঘাট, মাঠ-ময়দান সবখানেই সবসময়ই পুলিশি সহিংসতা বিদ্যমান ছিল। নতুন এই ভিডিও দেখে নেটিজেনরা তাই ক্ষুদ্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
ফারাহ সাফান বিস্মিত হয়ে লিখেছেন:
الأمل إن في يوم تكون وزارة الداخلية عاملة إجتماع و مدعو فيه كل أفراد الداخلية واحد واحد.. و تحصل المعجزة و الأرض تنشق و تبعلهم
— Farah Saafan (@FarahSaafan) November 2, 2013
আমার একটাই মাত্র চাওয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব কর্মী একদিন এক জায়গায় জড়ো হবেন… তারপর একটা অলৌকিক ঘটনা ঘটবে: ধরণী দু'ভাগ হয়ে তাদের গিলে নেবে!
ব্লগার মুস্তফা হোসেইন এই ধরনের নির্যাতনের পিছনে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর প্রতি মিশরের জনগণের একটি অংশের শর্তহীন সমর্থনকে দায়ী করেছেন:
مشكلة موضوع الشرطة والشعب أيد واحدة ان أول ما الشرطة بتسمع كده بتعمل اللي في الفيديو ده في الشعب. http://t.co/dmPNoWzgio أيه الحل مع الشرطة؟
— Mostafa Hussein (@moftasa) November 2, 2013
পুলিশ ও মানুষের সমস্যার একদিকের সত্য হচ্ছে, পুলিশ অতি শিগগিরই শুনতে পায়, তারা এই ধরনের জিনিসই করে যা আমরা ভিডিওতে দেখেছি।
আমর আবদেল হালিম এর সাথে আরো যোগ করেছেন:
الفيديو المسرب لتعذيب مواطن في قسم أبو قرقاص، على بشاعته، يظهر الحد الأدنى فقط لما تمارسه الداخلية يوميا من تعذيب منهجي متوحش
— Amr Abdel-Aleem (@AmrAleem) November 2, 2013
লিক হওয়া ভিডিওতে আমরা দেখেছি, মিশরের নাগরিকদের ওপর পুলিশ অফিসাররা কী ধরনের অত্যাচার আর অপমান করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানুষজনের নিয়মিত অত্যাচারের একটা সামান্য একটুই দেখা গেছে এতে।
ফেসবুকে একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন:
هل تعتقدوا ان ده بيحصل في اقسام اي دولة متحضرة في العالم حتي لو المتهم قاتل قتيل ممكن يهينوا كرامته لفظيا وبالضرب والاهانة بالشكل ده؟؟؟ وبتسموا الانقلاب ثورة ههههه هي فعلا ثورة بس ثورة مضادة لارادة الشعب المصري يعني ثورة العسكر عالشعب
আপনি কী ভাবছেন, কোনো সভ্য দেশের থানায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে? এমনকি ওই ব্যক্তি যদি খুনিও হয়, তাহলে তাকে কী এইভাবে মুখে অপমান করা যায়? এইভাবে নির্যাতন এবং চাবুক মারতে পারে? তারা তাদের বিপ্লবের সৈনিক ভাবে হাহাহা! এটি সত্যিই একটি বিপ্লব- তবে মিশরের মানুষদের এর বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লব করতে হবে। এটি মানুষের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর বিপ্লব।
ফাতিমা সাঈদ আরো যোগ করেছেন:
Many innocent civilians are being subjected to torture by security forces in #Egypt. We're witnessing a return to Mubarak's police state.
— Fatima Said (@fattysaid) November 6, 2013
মিশরে অনেক সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আমরা মোবারকের পুলিশি শাসনামলে আবার ফিরে যাচ্ছি।
গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি পুলিশি নির্যাতনের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। সবচে’ বেশি ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছিল আলেক্সজান্দ্রিয়ার অধিবাসী ২৮ বছর বয়সী তরুণ খালিদ সাঈদের উপরে। নির্যাতনে সে মারা গিয়েছিল। তার মৃতদেহের ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশ আন্দোলনে ফেটে পড়ে। এর কয়েক মাস পরে হোসনি মোবারকের শাসনের অবসান ঘটে।