ইরানি ব্লগার সাত্তার বেহেস্তির কারাগারে মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করতে মানবাধিকার কর্মী, বন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা তেহরানের রবাত করিমে গত ৩১ অক্টোবর,২০১৩ তারিখে জমায়েত হয়।
বেহেস্তি ২০১২ সালের অক্টোবরের শেষে গ্রেফতার হোন এবং তাঁর দশ দিন পরে তাঁকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই সময়ে, এক-চল্লিশ জন রাজনৈতিক বন্দী সাহসিকতার সাথে একটি বিবৃতি প্রকাশ [ফার্সী ভাষায়] করে যে, তারা সাত্তারের শরীরের উপর নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছে।
ইরানী ব্লগার আরসালান রাহিমি উদযাপন করেছেন যে, বিভিন্ন রাজনৈতিক বন্দীদের রক্ষা করা এবং নিজে কারাগারে থাকা একজন আইনজীবি নাসরিন স্তউধেহ এবং রাজনৈতিক কর্মী এবং রক্ষণশীল কেহানের প্রাক্তন সাংবাদিক মোহাম্মদ নউরিজদ দুজনকেই সেই সময় উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
সেই ব্লগার লিখেছেন [ফার্সী ভাষায়], “নির্বাসিত কর্মী কি করে এবং কি বলে, এই দুটি মানুষের উপস্থিতি একই প্রভাব রাখতে পারে না …. তারা কি বিশ্বাস করে সেটা কোন ব্যাপার না, অথবা তারা খাতেমির [প্রাক্তন সংস্কারবাদী রাষ্ট্রপতি] সঙ্গে দেখা করুক না কেন। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তারা কি নিপীড়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কিনা … যারা সমস্ত দেশের ভিতরে সংগ্রাম করে তাঁরা সবাই দীর্ঘজীবী হোক।”
আরেকজন ব্লগার, বালা-দৃষ্টি [ফার্সী ভাষায়] বলেছেন, বিভিন্ন বিচার বিভাগীয় সূত্র মতে সাত্তার বেহেস্তির উপর নির্যাতন চালানো হয়। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন নেটিজেনকে গ্রেফতার করা হয়।
“প্রবাসে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী” নামের আরেকজন ব্লগার বার্ষিকী ইভেন্ট (উপরোক্ত) থেকে ছবি শেয়ার করেছেন এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে বেহেস্তি ছিলেন একজন ব্লগার যিনি শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলেছেন।
নিপীড়িত মা
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা (নীচের ভিডিও দেখুন) করার সময়, মোহম্মদ নউরিজদ সাত্তার বেহেস্তির মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন এবং ইরানের নেতাদের শাস্তি দাবি করে বলেন, তাঁরা হচ্ছে “অত্যাচারীর আসল চেহারা”। বেহেস্তির মাকে তিনি বলেন, “আপনার মত মানুষদের রক্ষা করতে এই বিপ্লব চলছে। কিন্তু ইরানী পার্লামেন্টের ২৯০ জন সদস্যের সবাই আপনার ছেলের রক্ত দেখেছে এবং এটা তাঁরা অস্বীকার করে।”
স্টকহোমে সাত্তারকে স্মরণ
রাজনৈতিক কর্মীরা সুইডেনের স্টকহোমেও তাঁদের শয়নকক্ষে মোমবাতি জ্বালিয়েছেন। প্রতিবাদকারীরা অন্য রাজনৈতিক বন্দীদেরও স্মরণ করেছেন।
বেশ কিছু ইরানী ব্লগার এখনও কারাগারে আছেন এবং সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কারাবন্দী ব্লগার মোহাম্মদ রেজা পউশাজারি পর্যাপ্ত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে সতর্ক করে দিয়েছে।
প্রায় চার বছর আগে, অমিদ রেজা মিরসাফাই নামের আরেকজন ব্লগার সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে কারাগারে মারা যান।