কাতারের সর্বোচ্চ বিচারালয় বাতিলকরণ আদালত কবি মোহাম্মাদ রশীদ আল-আজামিকে এই সপ্তাহের শুরুর দিকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করেছে। তিনি মোহাম্মাদ ইবনে আল-ধিব ছদ্মনামে কাব্য রচনা করেন।
কাতারের এই নাগরিক পুনঃবিচার চেয়েছেন। গত বছর তিনি একটি নিম্ন আদালত কর্তৃক তাঁর কবিতার মাধ্যমে “শাসনতন্ত্র উৎখাত করতে উত্তেজিত” করার দোষে প্রথম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তিনি পুনঃবিচার চান। সেখানে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ এই শাস্তি কমিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করে।
ইবনে আল-ধিবের মুখরা আইনজীবী নাজিব আল-নাওমি কাতার ভিত্তিক দোহা নিউজকে বলেছেন, “এখানে কোন ন্যায়বিচার হয়নি। আমাদের বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখা যায় না”।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলগুলো একজন কবির এই বিচারের নিন্দা জানিয়েছে। তাঁরা এই বিচারকে কথা বলার স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে মনে করছে।
সোমবারের রুল জারি করার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর মহাপরিচালক ক্যান রথ কাতারের ফ্রি স্পিচ রেকর্ডকে প্রশ্ন করেছেনঃ
@KenRoth: Supposed bastion of free speech via al-Jazeera, #Qatar court upholds 15-year prison term for poet–a critic of govt. http://trib.al/EViKXCm
@ক্যানরথঃ আল-জাজিরার মাধ্যমে এটিকে মুক্তভাবে কথা বলার ওপর দুর্গপ্রাচীরের বহির্গত অংশ হিসেবে মনে করছি। #কাতারি আদালত একজন কবিকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করেছে। কারন, তিনি সরকারের একজন সমালোচক।
অতঃপর অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবার নতুন করে ইবনে আল-ধিবের মুক্তির দাবি জানায়। সংস্থাটি তাঁকে “চক্রান্তের শিকার কারাবন্দী” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেঃ
@jpmlynch: Amnesty calls for release of Qatari poet sentenced to 15 years in prison http://www.amnesty.org/en/for-media/press-releases/qatar-release-poet-sentenced-15-years-prison-2013-10-21 …
@জেপিএমলিঞ্চঃ অ্যামেনেস্টি ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত কাতারি কবির মুক্তি চায়।
জাতিসংঘও এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে। তাঁরা এই শাস্তিকে “অসামঞ্জস্য” বলে আখ্যায়িত করেছেঃ
@philippe_dam: Human Rights High Commissioner Navi Pillay concerned by condemnation of poet Mohammed al Ajami in #Qatar & calls for his release. @NcGeehan
@ফিলিপ_ড্যামঃ মানবাধিকার রাষ্ট্রদূত নাভি পিল্যায় #কাতারে কবি মোহাম্মাদ আল আজামির বিচারের নিন্দা করেন এবং তাঁর মুক্তির দাবি জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। @এনিসিজিহান
@RobinWigg: UNHRC on Mohammed al Ajami's 15 year sentence in Qatar for poem: “This sentence is clearly disproportionate.” You don't say.
@রবিনউইগঃ জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচআরসি কাতারে কবিতার জন্য মোহাম্মাদ আল আজামির ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত হওয়া নিয়ে বলেছেঃ আপনারা বলেন নি। “এই কারাদণ্ড একেবারেই অসমঞ্জস”।
ইবনে আল-ধিব ২০১১ সাল থেকে কারাগারে বন্দী। তিনি পড়াশোনা শেষে মিশর থেকে ফিরে এলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কায়রোতে ২০১০ সালে একটি ব্যক্তিগত জমায়েতে আবৃত্তি করা তাঁর একটি কবিতার উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। তাঁর কবিতাটিতে তিনি নিশ্চিতভাবে কাতারের ক্ষমতাসীন পরিবারের প্রতি ছিদ্রান্বেষী ভঙ্গিতে প্রচ্ছন্ন আঙ্গুল তুলেছেন।
কিন্তু কবির পক্ষের লোকেরা বলছে, তাঁকে কারাগারে বন্দী করার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে এবং এই উদ্দেশ্যের প্রধান অবলম্বন হচ্ছে, তিউনিসিয়ার উত্থানের পক্ষে লেখা একটি কবিতা। সেই কবিতাটিতে তিনি আরবের স্বৈরশাসকদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “এই নির্মম শাসকদের কাছে আমরা সবাই তিউনিসিয়া”।
কবিতাটি ইউটিউবে আরবি ভাষায় সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই কবিতাটি ২০ লক্ষাধিক লোক দেখেছেঃ
করিম জেমস আবু-জাইদের করা কবিতাটির একটি ইংরেজি অনুবাদও পাওয়া যাচ্ছে।
কথা বলার স্বাধীনতার ওপর কতোটা নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিৎ বলে আপনি মনে করেন ?
কৃতজ্ঞতাঃ লেক্স পলসনের দেয়া ছবি