শ্রম অধিকার লংঘনের দায়ে প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্যামসাং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি মামলার মুখোমুখি হয়েছে। তবে এতদিন পর্যন্ত নিজ দেশ দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রতিষ্ঠানটি নানা ধরনের ব্যবসায়িক সুবিধাই পেয়ে এসেছে। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ায় স্যামসাংয়ের সাবেক কর্মীরা কাজ-সম্পর্কিত অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
আশার কথা হলো, চলতি মাসে এ বিষয়ে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।
অক্টোবরের ১৮ তারিখে সিউলের একটি আদালত স্যামসাংয়ের এক শ্রমিকের পক্ষে রুল জারি করেছে। ওই শ্রমিক লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির অনিরাপদ কর্মপরিবেশের কারণেই এই রোগ হয়েছিল।
অক্টোবরের শুরুর দিকে ক্রাউড-সোর্স ভিত্তিক সিনেমা “অ্যানাদার ফ্যামিলি” মুক্তি পায় [ট্রেলার দেখুন এখানে]। সিনেমাটিতে সেইসব কর্মীদের ঘটনা তুলে ধরেছে, যারা স্যামসাংয়ে কাজ করতে এসে লিউকেমিয়াসহ অন্যান্য বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সিনেমাটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল।
অক্টোবরের ২২ তারিখে জাতীয় সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় আক্রান্তদের প্রতি স্যামসাং দু:খ প্রকাশ না করা নিয়ে অনেক কিছু বের হয়ে এসেছে। স্যামসাং শ্রমিকদের কী পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করে এবং কী ধরনের কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করে, যা “লিউকেমিয়া” তৈরি করে, সেটা নিয়ে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে তাদের কাজের পরিবেশেই যে লিউকেমিয়া হয়, সেই তত্ত্ব মিথ্যা প্রমাণ না করে স্যামসাং মামলা-মোকদ্দমা থেকে বাঁচতে আত্মরক্ষামূলক অবস্থান নিয়েছে। আক্রান্তদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই, এমনটাই তারা দাবি করছে।
নেটিজেনরা বিষয়টি নিয়ে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন:
무려 80명이 불치병으로 죽고 아파하는데 삼성은 끄덕없다. 백혈병 걸린 직원이 그걸 입증해야하나. 백혈병과 무관하다고 삼성이 입증해야지. 피해자가 혼자도 아니고 여럿인데. 분기에 수조원을 이익으로 내는 또 하나의 가족이 저런 기업인걸.
— 역사를 사랑하는 영어쌤. (@ela3599) October 18, 2013
৮০ জনের বেশি মানুষ রোগে ভুগে মারা গেছে। কিন্তু এ নিয়ে স্যামসাং একটি টাকাও বাজেট বরাদ্দ দেয়নি। আক্রান্তদের প্রমাণ খুঁজে বের করতে হবে তারা কেন লিউকেমিয়া'য় আক্রান্ত হলেন? একই সঙ্গে স্যামসাংকেও প্রমাণ হাজির করতে হবে যে এটি তাদের কর্মপরিবেশের কারণে হয়নি। কেন না, এটি একজন মাত্র লোকের বিষয় না। বহু লোক এটার শিকার হয়েছেন। এই কোম্পানি একটি বিজনেস কোয়ার্টারে ট্রিলিয়ন পরিমাণ ডলার লাভ করে। এবং নিজেদেরকে “অ্যানাদার ফ্যামিলি” নামে ডাকে [বিজ্ঞাপনী স্লোগান]।
‘삼성반도체 백혈병’ 또 산재 인정..다른 재판에 영향? 29살의 젊은 나이에 백혈병으로 숨진 김경미 씨 – 삼성이 국민기업으로 거듭 나려면 판결 이전에 스스로 산재를 인정하고 작업 환경을 개선시켜야 http://t.co/pvYjv1aDzz — 불꽃, 정중규 (@bulkoturi) October 19, 2013
কোর্ট রুল জারি করেছে যে, লিউকেমিয়া স্যামসাংয়ের সেমিকন্ডাক্টর কারখানার ‘শিল্প দুর্ঘটনা'র ফসল [নিশ্চিতভাবেই স্যামসাং এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী]। এটি অন্যান্য মামলার ওপর ভালোই প্রভাব ফেলবে। স্যামসাং যদি কোরিয়ার সত্যিকারের ‘জাতীয়’ প্রতিষ্ঠান হতে চায়, তাহলে তাদের শিল্প দুর্ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে নেয়া উচিত। এবং তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত করা উচিত।
이번주에 삼성이 버린 또하나의 가족을 다 읽었는데 눈물이 흐르지 안을수가없다… 심지어 내 친구가 관심을 보였는지 빌려주라해서 빌려줬는데 이게 사실이내고 묻는다 아무리 큰 대기업이라도 진실을 밝혀야한다. 산재가 인정됬다는 소식을 보자 다행이라는..
— By.Presso (@bypresso) October 18, 2013
এই সপ্তাহে আমি একটি বই পড়েছি। বইটির নাম “অ্যানাদার ফ্যামিলি ডিসকার্ডেড বাই স্যামসাং”। পড়ার পর থেকেই আমি কান্না থামাতে পারছি না। আমার বন্ধুরা এটি পড়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। পড়ার জন্য আমি এটি তাদের ধার দেব। তারা আমার কাছে জানতে চেয়েছে এর সবই সত্যি কি না… স্যামসাং বৃহৎ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান। এখন আমাদের সত্য খুঁজে বের করতে হবে। যদিও আমি জানতে পেরেছি, কোর্ট এটিকে শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে নিশ্চিত করেছে। আমি মুক্তির স্বাদ অনুভব করছি।
আক্রান্তদের হাতে সময় খুব কম- বর্তমানে ৯টি মামলা মুলতবি হয়ে আছে। আক্রান্তদের মাত্র ১৫ জন মামলা করেছেন। এদের মধ্যে ৬ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। স্যামসাংয়ের সাবেক কর্মীদের মধ্যে ২০০ জনের বেশি লিউকেমিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন [এদের মধ্যে ৮০ জন মারা গেছেন]। তাদের রোগ যে কর্মপরিবেশের সাথে সংশ্লিষ্ট তা ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েছে। তাদের এখন দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ছোটখাট কিছু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।