পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী জিওফ্রে হিলার ১৯৮৭ সালে প্রথম বারের মতো মিয়ানমার সফর করেন; এবং সেদেশে তিনি কি ধরণের ভুতুড়ে ব্যাপার দেখেছেন তা লিখেছেন:
একটি ধর্মান্ধ ভ্রমণের পরে, পোড়ো যে সন্ন্যাসী ও বুদ্ধ মন্দিরগুলো ছিল সেগুলো ততটা ভৌতিক ছিল না। কিন্তু সাদা দেয়ালে যে বার্মিজ মুখগুলো আঁকা ছিল, সেগুলো মাঝে মাঝেই যেন হাসছিল। আসলেই তাঁরা কে ছিল, সে সম্পর্কে আমি আরো বেশি খুঁজে বের করতে চেয়েছি। একটি দুর্নীতিবাজ সরকার ও আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য যে শাস্তি দেয়া হয়, তাঁর দ্বারা নানা ভাবে হয়রানির শিকার হয়েও আমি তাঁদের খুঁজে বের করতে চেয়েছিলাম।
সে সময়ের পরেও তিনি বেশ কয়েকবার মিয়ানমারে ফিরে গিয়েছেন এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে যে পরিবর্তনগুলো এসেছে তা তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেনঃ
২০১৩ সালেও আমি মিয়ানমারে ফিরে গিয়েছিলাম। আমি আমার ক্যামেরায় তাঁদের নিত্যকার জীবন ধারণ করে নিয়েছি। ঔপনিবেশিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের আঁকড়া দিয়ে আবদ্ধ করা সড়কগুলো থেকে মান্দালয়ের নোংরা বাজার পর্যন্ত, মেইখটিলার মুসলিম সম্প্রদায় পর্যন্ত এবং পাথেইনের নদী কেন্দ্রিক জীবন পর্যন্ত আমার ক্যামেরায় বন্দী করেছি।
ইয়াঙ্গুনের চেহারা ইতোমধ্যে পরিবর্তন হয়ে গেছে। নির্মিত নতুন নতুন ভবন ও আমদানীকৃত নতুন নতুন গাড়ি দিয়ে শহরটি বদলে গেছে।
তিনি কিকস্টারটার প্রকল্পের মাধ্যমে একটি বই প্রকাশের পরিকল্পনা করেছেন। এই প্রকল্পে ১৯৮৭ সাল থেকে সাম্প্রতিক ঐতিহাসিক অবস্থান্তর-প্রাপ্তির মাধ্যমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ জীবন সম্পর্কে তোলা তাঁর ছবিগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অবস্থান্তর-প্রাপ্তিতে বার্মা নামের বইটিতে মেইখটিলার ছবিগুলোও বিশেষভাবে দেখানো হবে। শহরটিতে দাঙ্গা ফুঁসে ওঠার আগে হিলার সেখানে গিয়েছিলেনঃ
এই শান্তিপূর্ণ শহরটিতে আমার অভিজ্ঞতার পর মারামারি ও হত্যা এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার খবরগুলো আমার কাছে রীতিমত অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছিল। আমি মেইখটিলার কয়েক ডজন অধিবাসীর সাথে কথা বলেছি। তাঁদের মধ্যে বৌদ্ধ এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকই ছিল। এবং আমি কখনোই আন্দাজ করতে পারেনি, এ ধরনের নৃশংসতা আগ্নেয়গিরির মতো সবেগে বিদীর্ণ হবে।
বই প্রকল্পের অঙ্গীকার আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত কিকস্টার্টারের মাধ্যমে করা যাবে।

বিরোধী দলীয় নেত্রী অং সান সু চি এবং তাঁর বাবা জেনারেল অং সান এর একটি ছবি ধরে আছেন। ইয়াঙ্গুন ফেরি, ২০১২।
*সবগুলো ছবি তুলেছেন জিওফ্রে হিলার