- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

বোকো হারামের জঙ্গিদের হাতে প্রায় ৫০ জন নাইজেরীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহত

বিষয়বস্তু: সাব সাহারান আফ্রিকা, নাইজেরিয়া, তাজা খবর, নাগরিক মাধ্যম

নাইজেরীয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন;বোকো হারামের [1] জঙ্গিরা; ইয়োবে রাজ্যের কৃষি কলেজের ছাত্রাবাসে ঘুমন্ত ছাত্রদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে ১৮ থেকে ২২ বছরের বেশ কয়েকজন ছাত্রকে, খুন করে [2]
এ্যাসোসিয়েট প্রেসের [2] সংবাদ অনুসারে, এই ঘটনায় প্রায় ৫০ জনের বেশী ছাত্র নিহত হয়েছে এবং জঙ্গিরা এই হামলা শ্রেণীকক্ষগুলোতে আগুনও দিয়েছিল।

বোকো হারাম হচ্ছে জিহাদপন্থী একটি সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি সংগঠন, যাদের অবস্থান নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্ব অঞ্চল, উত্তর ক্যামেরুন এবং নাইজারে। ২০০১ সাল থেকে সংগঠনটি নাইজেরিয়া একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। এখানে নাইজেরিয়ায় (যদিও এটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নয়) বোকো হারামের হামলা এবং নিহতের তালিকার [3] এক সময়সূচী প্রদান করা হল:

  • ২৪ ডিসেম্বর, ২০০৩: ইয়োবে প্রদেশের কানামা ও গেইদাম এলাকায় বড়দিনের আগের দিনের সন্ধ্যায় হামলা
  • ২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৪: কানো এলাকার পানসেকারা পুলিশ থানায় হামলা।
  • ২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৪: বামা ও গোয়ারজো পুলিশ থানায় হামলা।
  • ৩১ ডিসেম্বর, ২০০৭:প্রেসিডেন্সিয়াল হোটেল পোর্ট/হারকোর্টে হামলা
  • ২৬ -৩০ জুলাই,২০০৯: বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ার পর বানুচির এক পুলিশ থানায় হামলা, যা পরে কানো, ইয়োবে এবং বারনো প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
  • ৭ সেপ্টেম্বর ২০১০: বানুচির এক কারাগারে হামলা চালানো এবং বোকা হারেমের সদস্য সহ অজস্র কারাবন্দীকে মুক্ত করে দেওয়া।
  • ৬ অক্টোবর, ২০১০:মাইদুগুরিতে এনপিপির নেতা আওয়েনে নাগালাকে হত্যা
  • ৯ অক্টোবর,২০১০:মাইদুগুরি এলাকায় মুসলমান ধর্মীয় নেতা বশির কাশাহারা এবং তাঁর এক ছাত্রকে হত্যা।
  • ৩১ ডিসেম্বর, ২০১১:মাইদুগুরিতে এনপিপির গভর্নর পদপ্রার্থী মদু ফাননামি গুইবো সহ আট জন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড, যা মোগাদিসু হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত
  • ৬ জুন, ২০১১:মাইদুগুরিতে মুসলমান ধর্মীয় নেতা ইব্রাহিম বাইরুকুতুর হত্যাকাণ্ড
  • জুন ১৬, ২০১১:আবুজায় পুলিশ বাহিনীর সদর দপ্তরের বোমা বর্ষণ
  • ২৬ আগস্ট, ২০১১: আবুজায় জাতিসংঘ ভবনে হামলা
  • ২২ সেপ্টেম্বর,২০১১:শত শত কয়েদিকে মুক্ত করার উদ্দেশ্য মাইদুগুরির কারাগারে হামলা
  • ২০ .ডিসেম্বর,২০১১: মাইদুগুরির গোলা বর্ষণের ঘটনায় ডজন খানেক নিহত
  • ২৫ ডিসেম্বর,২০১১:নাইজারে এবং প্লাটু প্রদেশে বড়দিনে সিরিজ বোমা হামলায় ডজন খানেক নিহত
  • ২২ জানুয়ারী, ২০১২:কানোর পুলিশ স্থাপনা এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের দপ্তরে নানান ধরনের বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো: এই ঘটনায় ২১৫ জনের মৃত্যু।
  • ৯ এপ্রিল,২০১২: কাদুনায় ইস্টার সানডের বিস্ফোরণ। ৩৮ জনের মৃত্যু।

মে ২০১৩-এ, রাষ্ট্রপতি গুডলাক জোনাথান, বোরনো, ইয়োবে এবং আদামাওয়া প্রদেশে রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেন [4], যে সব এলাকায় সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে বেশী হামলা চালিয়েছে। নাইজেরীয় রাষ্ট্রপতি তখন এই প্রতিজ্ঞা করেন যে: 

…তারা যেই হোক না কেন, তারা যেখানে যাক, আমরা তাদের পাকড়াও করব, আমরা তাদের আলাদা করে ফেলব, এবং তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসব। যে কোন মূল্যে আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করব।

তবে, ঘুমন্ত এই সমস্ত নিষ্পাপ শিক্ষার্থীদের উপর চালানো নোংরা গণহত্যায় নাইজেরীয় ব্লগস্ফেয়ারে শোকের মাতম নেমে আসে;

লাগোসের সোশালমিডিয়া উইক-এর চেয়ারম্যান ওবি আশিকা শোকার্ত;

কেন আমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা করছি, এখনো উন্মত্ততার কারণ, আর এর থেকে কে লাভবান হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছি না? আজ সকালে ইয়োবোর ঘটনা শোনার পর আমার মন অত্যন্ত বিষণ্ণ

এক গণ মন্তব্যকারী মার্ক আমাজা অত্যন্ত ক্রুদ্ধ :

যেমনটা দেখা যাচ্ছে নাইজেরিয়ায় জীবন খুব কঠিন, ইয়োবে, বোরনো, দক্ষিণ কাদুনা, প্লাটুর অংশ বিশেষ, নাসারাওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ প্রাপ্তির এক এলাকা

সাংবাদিক আবাং মারসি জুলাই ২০১৩-এ বোকো হারেমের একই ধরনের মৃত্যু উল্লাসের কথা স্মরণ করছেন :

জুলাই মাসে একই ইয়োবো প্রদেশে মামুদো শহরে বন্দুকধারীরা ঝড়ের বেগে সরকারের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশে করে ২৯ জন ছাত্র এবং একজন শিক্ষককে হত্যা করে।

এনোদিম ব্লসম একজন লেখক, ব্লগার এবং উপস্থাপক, তিনি নিহতদের জন্য প্রার্থনার আয়োজন করতে ইচ্ছুক :

ইয়োবোর সকল শোকার্ত পরিবারকে নিয়ে আমার চিন্তা। এই সকল বিশ্বস্ত বিদেহী আত্মারা যেন এখন একেবারে শান্তিতে ঘুমায়। আমিন

 হেনরি ওকেলুয়ে প্রশ্ন করেছে: 

কি ভাবে, ইয়োবে সহ তিনটি প্রদেশে, যেখানে বাধ্যতামূলক ভাবে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে, সেই রাষ্ট্রে নিষ্পাপ নাগরিকদের মৃতদেহ গণনা বন্ধ হচ্ছে না।

  অনেকের মনে উত্থাপিত প্রশ্নটি এসেছে ওপেলু আবিওদুন এর কাছ থেকে:

আজ ইয়োবো প্রদেশে বোকো হারামের হাতে নিহত নিষ্পাপ এই সব নাগরিকের নিহতের ঘটনায় আজ আমি সত্যিই দুঃখিত,আর কতকাল আমাদের এই ভাবে বেঁচে থাকতে হবে।

  নাইজেরিয়ার এক লেখকের কাছ থেকে শব্দ ধার করে চিয়াগোজিয়ে নাওয়ানু লিখেছে :

বোকো হারামের বন্দুক আবার আঘাত হানল। এখন মায়েরা সেই সকল সন্তানের জন্য বিলাপ করবে, যারা আর গৃহে ফিরে আসবে না।