প্রচার মাধ্যমে বিদেশী খবরের উদ্ধৃতি দেয়া নিষিদ্ধ করল চীন

খবর প্রচার কেন্দ্র এবং অন্যান্য সংস্থাকে অনুমতি ছাড়া বিদেশী প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে রিপোর্ট করা বন্ধ করতে চীনের প্রচার মাধ্যম কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়মনীতি ঘোষণা করেছে।

প্রেস, পাবলিকেশন, রেডিও, চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণকারী উর্ধ্বতন প্রশাসন গত ১৬ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে আরো কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা প্রকাশ করেছে। দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস যেদিন ঘোষণা করেছে যে তাঁরা পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছে, ঠিক তাঁর এক দিনেরও কম সময়ের মধ্যে এই বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়। চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের পরিবারের লুকায়িত সম্পদের ওপর পত্রিকাটি একটি রিপোর্ট করায় তাঁরা এই পুরস্কারটি জিতে।

২০১২ সালের অক্টোবরের একটি রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় চীনের সরকার দ্যা নিউইয়র্ক টাইমসের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। এর সাথে সাথে সিনা ওয়েইবোতে ওয়েন জিয়াবাওয়ের নামটিও বন্ধ করে দেয়া হয়।

তাঁর পাশাপাশি বিদেশী প্রচারমাধ্যমের প্রচার সূচী ব্যবহার করার অনুমোদন পাওয়া চীনের প্রচারমাধ্যমের জন্য আবশ্যক। নিয়ম নীতিটি সংস্থাগুলোর এবং সাংবাদিকেরা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তথ্য আদান-প্রদান করছেন। এসব সামাজিক মাধ্যমের মধ্যে আছে জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইট সিনা ওয়েইবো। এধরনের মাধ্যমগুলো সাধারণত প্রকাশনীর আওতায় পড়বে না।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া, বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেছে, যাতে বলা [ম্যান্দারিন] হয়েছেঃ

各类新闻单位均不得擅自使用境外媒体、境外网站新闻信息产品。坚决制止和依法查处采编人员以网络为平台牟取非法利益等行为。新闻单位设立官方微博须向其主管单位备案并指定专人发布权威信息,及时删除有害信息。

অনুমতি ছাড়া সকল সংবাদ কেন্দ্রকে বিদেশী প্রচার মাধ্যম বা বিদেশী ওয়েবসাইটগুলো থেকে খবরের তথ্য ব্যবহার করতে অনুমোদন দেয়া হয়নি। সাংবাদিক এবং সম্পাদকদের কোন ধরনের অবৈধ সুবিধা আদায়ের জন্য ইন্টারনেটকে তথ্য প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে এটি কড়াকড়িভাবে নিষেধ করে দিয়েছে; এধরনের ব্যবহারের সম্বন্ধে তদন্ত করা হবে এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে। একটি দাপ্তরিক ওয়েইবো একাউন্ট খুলতে বার্তা সংস্থাগুলোকে প্রথমে নিবন্ধনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে হবে। এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পোস্ট করতে এবং উপযুক্ত সময়ের জন্য ক্ষতিকারক কোন তথ্য মুছে ফেলতে এই একাউন্টের জন্য একজন কর্মী নিয়োগ করতে হবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পত্রিকার বিদেশের পাতার বেশিরভাগ খবর আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো থেকে সংগ্রহ করা হয়। দ্যা টেলিগ্রাফের মতে, বিদেশী গণমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারনে চীনের পত্রিকাগুলোর উপর একটি মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

খবরটি অনলাইনে অনেক উইবো ব্যবহারকারীদের মাঝে চূড়ান্ত অবমাননার প্রকাশ করেছে। বিশেষকরে সাংবাদিকদের মাঝে। বেইজিং ভিত্তিক সাংবাদিক “কিন্ডেং জিয়াজিয়াংমিংবিয়ান” [ম্যান্দারিন] লিখেছেনঃ 

Internet in China by Karen Roach via Shutterstock

চীনের ইন্টারনেট। ছবিঃ শুটেরস্টক হতে কারেন রোচ 

青灯下香茗边:舆论监督是一个健康社会的必需品,批评的尺度就是民主的尺度,‘若批评不自由,则赞美无意义’。正确结论来自多元化的声音,而不是权威的选择。

একটি স্বাস্থ্যকর সমাজের জন্য জনগনের মতামতের পর্যবেক্ষন করা অত্যন্ত জরুরী। সমালোচনার মাত্রাই হচ্ছে গণতন্ত্রের মাত্রা। “যদি মুক্তভাবে সমালোচনা না করা যায়, তবে প্রশংসার কোন অর্থ নেই”। কর্তৃপক্ষ যাকে পছন্দ করে তাঁর কাছ থেকে নয়, বরং একটি ব্যাপক পরিধির কণ্ঠস্বর থেকে সঠিক পরিসমাপ্তি আসে।

ওয়েব বযবহারকারী “লিডা সুইবি” প্রশ্ন [ম্যান্দারিন] করেছেন, এ ধরনের কঠোর মুষ্টি বদ্ধতা কি আদৌ প্রচারমাধ্যমের জন্য সুদূর প্রসারী কোন ফলাফল বয়ে আনবেঃ

什么是有害信息?我觉得,信息只有真假之分。新闻的唯一目的是转播真相,这是人类社会的基本需求。在新中国历史上,被宣传管理部门定义为有害信息的绝大部分信息,事后都被证明是正确的。思想屏蔽也许有效一时,但掩耳盗铃之策非长久之道。

ক্ষতিকর তথ্য কি ? আমি মনে করি তথ্য শুধুমাত্র সত্যি এবং মিথ্যা হয়। সংবাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যের প্রচার করা। এটিই একটি সমাজের প্রধান চাহিদা। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ইতিহাস জুড়ে প্রপাগান্ডা বিভাগ কর্তৃক সংজ্ঞায়িত বেশিরভাগ ক্ষতিকর তথ্যই সঠিক বলে প্রমানিত হয়েছে। তথ্য ও মতামতের ওপর নিষেধাজ্ঞা সাময়িক সময়ের জন্য ফলদায়ী হলেও এধরনের আন্ত-অস্বীকারকারী নীতি দীর্ঘায়িত করলে তা আর কার্যকর থাকবে না।

আরেকজন ওয়েব ব্যবহারকারী “ইয়ুন মু” একটি চীনা প্রবাদ দিয়ে একই আবেগ প্রতিধ্বনিত [ম্যান্দারিন] করেছেনঃ

欲盖弥彰!

যত বেশি লুকাতে চাইবে, তত বেশি প্রকাশিত হয়ে পড়বে।

“ইয়ে লাওডি আইলভিস” বিদ্রুপ করে [ম্যান্দারিন] লিখেছেনঃ 

这要变朝鲜了吗?

আমরা কি উত্তর কোরিয়া হতে চলেছি ?

সাংবাদিক লিউ জিয়াংগিয়ান চীনে একটি নতুন প্রচার মাধ্যম আইনের অভাব তুলে ধরেছেন [ম্যান্দারিন]:

是法律法规严重落后于事物的发展!互联网到目前为止还不被认为是法律意义上媒体,何况自媒体!

আইন এবং নিয়মনীতির কারনে উন্নয়ন মারাত্মকভাবে পিছিয়ে পড়ছে! আইনি অর্থে, সিটিজেন মিডিয়া হিসেবে উল্লেখ না করে ইন্টারনেটকে প্রচার মাধ্যম বলে বিবেচনা করা হয় না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .