তিউনিসিয়াঃ ঈদ ক্ষমা অস্বীকার করল কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নেটিজেনরা

তিউনিসিয়ার টুইটার ব্যবহারকারীরা তাঁদের হতাশা ব্যক্ত করেছে, যখন তাঁরা জানতে পেরেছে যে ঈদ উৎসব উপলক্ষে তাদেরকে একটি সাম্প্রতিক রাষ্ট্রপতি ঘোষিত ক্ষমা প্রদান করা হয়েছে। কারণ, তাঁদের মধ্যে কারাদণ্ড প্রাপ্ত নেটিজেন জাবিউর মেজরি নেই। ফেসবুকে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) – এর কার্টুন প্রকাশের অপরাধে মেজরিকে গত বছর সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। তাঁর বন্ধু গাজী বেজি “ইলুশন অব ইসলাম” নামে একটি বিদ্রুপাত্মক বই ডকুমেন্ট-শেয়ারিং ওয়েবসাইট স্ক্রাইবড – এ প্রকাশ করার দায়ে অনুপস্থিতিতে একই দণ্ডে দন্ডিত হন। বেজি অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে তিউনিশিয়া থেকে পালিয়ে যান এবং ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন। ‘জনগণের শৃঙ্খলা বা সুনীতি কে ক্ষতিগ্রস্ত করতে নানা জিনিস প্রকাশের’, ‘গণ যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে অন্যদের অপমানের’ জন্য এবং ‘জনগণের নৈতিকতায় প্রচন্ড আঘাত করার’ জন্য তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

গত এপ্রিলে ক্যাসেশন কোর্ট (তিউনিসিয়ায় আপিলের সর্বোচ্চ কোর্ট) মেজরির রায় নিশ্চিত করে। তাঁর প্রতিরক্ষা দল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমার আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেভাবেই হোক, ৮ আগস্ট তারিখে ইস্যুকৃত ক্ষমাপ্রাপ্ত কারাবন্দীদের তালিকায় মেজরির নাম ছিল না।

Photo via Facebook Page 'Pour la grâce présidentielle de Jabeur et Ghazi'

ছবিটি ‘Pour la grâce présidentielle de Jabeur et Ghazi’ ফেসবুক পাতা থেকে পাওয়া। 

মেজরি ও বেজির সমর্থনকারি কমিটি একটি বক্তব্য প্রকাশ [ফ্রেঞ্চ] করেছেঃ

La présidence a annoncé une grâce présidentielle pour une liste de 343 prisonniers ainsi qu'une grâce spéciale de 20 autres prisonniers mais le nom de Jabeur Mejri ne figure pas sur aucune de ces listes.

Nous avons espéré que le président se rappellerait que lui même, un jour a été à la place de Jabeur Mejri et refuserait de voir des prisonniers d'opinion, durant son mandat mais … malgré les promesses qui ont été faites à demi mots à sa famille, le résultat est là : Jabeur reste en prison !

Jabeur Mejri ne passera pas l'Aid avec les siens ! Même si Jabeur n'est ni un terroriste, ni un violeur, ni un criminel ! Jabeur est un jeune qui a cru en une Tunisie nouvelle et a cru avoir le droit de s'exprimer librement !

Jabeur Mejri n'aurait jamais du être en prison! (…) Après un jugement inéquitable, il est accusé pour trouble à l'ordre public pour un message sur Facebook sur une page où il avait 16 fans !

রাষ্ট্রপতির দপ্তর ৩৪৩ জন কারাবন্দীকে এবং আরো ২০ জন কারাবন্দীকে বিশেষভাবে ক্ষমা করে রাষ্ট্রপতির সাধারন ক্ষমা ইস্যু করেছে। কিন্তু সে তালিকায় জাবিউর মেজরির নাম নেই।

আমরা আশা করেছিলাম যে রাষ্ট্রপতি এটা স্মরন করবেন, তিনিও জাবিউর মেজরির মতো কিছু সময় আগে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কারাবন্দী ছিলেন। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি [অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি মোন্সেফ মারজুকি] তার হুকুমের সময় মতামত বন্দীদের দেখতে অস্বীকার করবেন। কিন্তু তার পরিবারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও মেজরি কারাগারে রয়ে যায়।

এমনকি যদিও জাভিউর মেজরি কোন সন্ত্রাসী, ধর্ষণকারী অথবা কোন অপরাধী নন। তবুও তিনি তাঁর পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন না। একজন তরুণ জাবিউর নতুন তিউনিসিয়ায় বিশ্বাস করেছিলেন এবং ভেবেছিলেন নিজেকে স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার পূর্ণ অধিকার তাঁর আছে।

জাবিউর মেজরির কখনই জেলে যাওয়া উচিৎ হয় নি! (…) একটি অযৌক্তিক বিচার অনুসারে, তাঁর ফেসবুক পেজে তিনি একটি বার্তা প্রকাশ করে জন শৃঙ্খলার ক্ষতি সাধনের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং যেখানে তাঁর ভক্ত সংখ্যা মাত্র ১৬ জন!

'Express yourself, Freedom' via Amnesty Tunisia Facebook page

‘ নিজেকে প্রকাশ করুন, 
মুক্তি’ আমনেস্টি তিনিশিয়া ফেসবুক পাতা থেকে 

ইন্টারনেটবাসীরা টুইটারে তাঁদের ভয়জনিত অবসাদ ব্যক্ত করেছেন।

আজ ৩ শতেরও বেশী কারাবন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে কিন্তু জাবিউর তাঁর একটি ধারনার জন্য জেলে বন্দী। আসুন আমরা যেন এটা ভুলে না যাই।

@মোন্সেফ_মারজুকি জাবিউরকে মুক্তি দাও, সে জনগণের জন্য বিপদজনক নয়।

আপনি ঈদ উদযাপন করছেন আর আপনার বিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করার স্পর্ধা দেখানোর কারণে একজন তরুণ জেলে পোঁচে মরছে।

৩৪৩ জন অপরাধীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু একটি ক্যারিক্যাচারের কারণে জাবিউর জেলে রয়েছে !

.@প্রেসিডেন্সটিএন তাঁর অপরাধ কি? একটি ধারনার প্রকাশ ঘটানো! পুরস্কার হিসেবে সাড়ে সাত বছরের কারাদন্ড। জাবিউর কোন সন্ত্রাসী নয়!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .