- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

@ইনসাকাচ্যাটঃ সামাজিক বিষয়ে কাথা বলার জন্য জাম্বিয়ানদের টুইটার ভিত্তিক প্ল্যাটফরম

বিষয়বস্তু: সাব সাহারান আফ্রিকা, জাম্বিয়া, নাগরিক মাধ্যম, ব্লগার প্রোফাইল

সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা এবং একে অপরের নিকট থেকে যাতে শিক্ষা লাভ করতে পারে সে উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী জাম্বিয়ান লেখক ও ব্লগার বেওয়ালিয়া চিলেয়া স্থানীয় ও প্রবাসী জাম্বিয়ানদের জন্য টুইটার ভিত্তিক একটি প্ল্যাটফরম তৈরি করেছেন।

সম্প্রতি গ্লোবাল ভয়েসেস অনলাইন চিলেয়ার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে এবং কিভাবে এই প্ল্যাটফর্ম জাম্বিয়ানদের সত্য প্রকাশের নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করে।

গ্লোবাল ভয়েজেস অনলাইন (জিভি): আপনার সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু বলুন

বেওয়ালিয়া চিলেয়া  (বিসি): আমার নাম বেওয়ালিয়া চিলেয়া , এছাড়া টুইটারে ও আমার ব্লগে আমি @মিসবেওয়ালিয়া [1] ও আমার ব্লগে আমি মিস বেওয়ালিয়া রাইটস [2] নামে পরিচিত। আমি একজন জাম্বিয়ান লেখক ও ব্লগার, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। পেশাগতভাবে আমি অর্থনীতিতে পড়াশুনা করে প্রকল্প ব্যবস্থাপকের কাজ করছি। আমি লিলঙ্গওয়ে, মালাওয়ী ও জাম্বিয়ার লুসাকাতে বড় হয়েছি।

জিভিঃ ইনসাকাচ্যাট-এর প্রকৃত অর্থ কি? ইনসাকার মানে কি?

বিসিঃ সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ইনসাকা চ্যাট হচ্ছে একটি প্ল্যাটফরম। এটা এমন একটা স্পেস যেখানে মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে, ভাবনাগুলো শেয়ার করে এবং সর্বোপরি একে অন্যের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। রাজনীতি ও রাজনীতিবীদরা যে বিষয়গুলোর উপর খুব একটা আলোকপাত করেন না সেই বিষয়গুলো নিয়ে টুইটারে জাম্বিয়ানদের আলোচনা করা দরকার- মূলতঃ এ ভাবনাই এ প্ল্যাটফর্মের জন্ম দিয়েছে।

MissBwalya

জাম্বিয়ান লেখক ও ব্লগার মিসবেওয়ালিয়া

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমরা পৃথক হলেও আমাদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। কাজেই যখন আমরা কোন বিষয় বা সমস্যা সমাধানের ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবো তখন সেটা আমাদের অনেককেই প্রভাবিত করবে, আমরা অনেক ভালো করতে পারব।

আফ্রিকার কেন্দ্রীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রতি রবিবার ইনসাকা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাম্বিয়ান শ্রোতাদের জন্য বেশ কিছু বিষয় সুনির্দিষ্ট করা হয়। যে কাউ কোন একটা বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলে আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই।

বেম্বা ভাষা (জাম্বিয়ার উত্তরাঞ্চলের ভাষা) থেকে ইনসাকা শব্দটি এসেছে এর মানে হল জমায়েতের স্থান। ইসা ক্রিয়াপদ থেকে এ শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ হল আস”।

জিভিঃ এ উদ্যোগের সাথে কে কে জড়িত?

বিসিঃ প্রাথমিক পর্যায়ে আমিই এ প্ল্যাটফর্মটি চালাতাম। জাম্বিয়ার প্রখ্যাত সাংবাদিক লরা মিটি (@লরামিটি [3]) আমাকে সহায়তা করেছেন, প্রয়োজন অনুসারে তিনি সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন।

জিভিঃ আপনি কিভাবে ইনসাকা পরিচালনা করেন? আলোচনার জন্য কে বিষয় নির্ধারন করেন?

বিসিঃ সাধারণতঃ মঙ্গলবার বা বুধবারে আমি বিষয় সম্পর্কে ঘোষনা করি এবং অপেক্ষা করি পরবর্তীতে রবিবারে বিজ্ঞাপন দেই আর আমার নিয়মিত অংশগ্রহণকারীদের চিন্তা ভাবনা করার জন্য এবং তৈরি হয়ে আসার জন্য স্মরণ করিয়ে দেই।

রবিবারে আমি আলোচনা সঞ্চালনার জন্য ১.৫- ২ ঘন্টা সময় ব্যয় করি। প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, বিভিন্ন বিষয়ের ফ্লো-আপ নিয়ে এবং যে বিষয়ের উপর আলোচনা শুরু হয়েছিল সে বিষয়ের দিকে আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে  সাধারণতঃ এ কাজটি করা হয়। স্টোরিফাই এ প্রাপ্ত টুইটগুলোকে সন্নিবেশ করে বাছাই করি। স্টোরিফাই খুব কাজের জিনিস কারন যারা আলোচনায় অনুপস্থিত থাকেন তাঁরা পরবর্তীতে আলোচনা ধরতে পারেন এবং ইনসাকাতে আমরা যে সেবা দেই তাঁরা সে অনুযায়ী জনগণকে শিক্ষিত করে তোলে।

টুইটারে জনগণের ক্রাউড সোর্সিং থেকে সাধারণতঃ আলোচনার বিষয়গুলো নির্ধারন করা হয় ; ইমেইল, হোয়াটসআপ এবং সরাসরি ম্যাসেজের মাধ্যমে বার্তাগুলোকে প্রেরণ করা হয়। আমার ভাবনার সাথে মিলিয়ে আমি বিষয়গুলোকে তালিকায় সন্নিবেশ করি।

জিভিঃ এ পর্যন্ত কতগুলো বিষয় আপনি আলোচনা করেছেন?

বিসিঃ ১৪ জুলাই পর্যন্ত আমরা দশটি ইনসাকা আলোচনা করেছি।

জিভিঃ এ উদ্যোগের জন্য টুইটার ছাড়া অন্য কোন উপকরণ ব্যবহার করেন কি?

বিসিঃ প্রকৃত আলোচনার জন্য প্রাথমিক উপকরণ হিসেবে আমরা টুইটার ব্যবহার করি, স্টোরিফাই [4]য়ে আমরা টুইটগুলোকে সন্নিবেশ করি এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি।

জিভিঃ এ পর্যন্ত সবচাইতে জনপ্রিয় আলোচনার বিষয় কি?

বিসিঃ এ পর্যন্ত সবচাইতে জনপ্রিয় আলোচনার বিষয় হল দুই-অংশ [5] সিরিজ [6]। আমরা জাম্বিয়ার প্রথাগত বিবাহ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছি। আমরা লোবোলা [যৌতুক]-এর প্রচলন নিয়ে আলোচনা করি এবং বিয়ের জন্য অন্যান্য যে অনুষ্ঠান যেমন ইকিলাংগামুলিলো (কনের বাড়িতে প্রথাগতভাবে তৈরি খাবার দিয়ে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে বরকে স্বাগত জানানো হয়) এবং বিয়ে নিয়েও আলোচনা হয়। এ ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে অনেক সময় ব্যয় হয়, প্রচলিত মূল্যবোধের পরিবর্তন সম্পর্কে লোকজন কি ভাবে সেটাই দেখার বিষয়।

জিভিঃ অংশগ্রহণকারীরা কি বেশিরভাগ জাম্বিয়াতে বাস করেন নাকি প্রবাসী?

বিসিঃ প্রথমদিকে এটা ছিল বিভক্ত-৫০/৫০। এটা একদিক থেকে ভাল কারন দেশে বিদেশে এই অনুষ্ঠানটি জাম্বিয়ানদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যা থেকে আমরা শিখতে পারি এবং নিজেদের মধ্যে শেয়ার করতে পারি।

জিভিঃ এ উদ্যোগকে সফল কয়ার জন্য আপনার অভিপ্রায় কি?

বিসিঃ ইনসাকার কাছে আমার প্রত্যাশা এই যে আমি আশা করি এটা জনগণকে সত্য প্রকাশের একটা নিরাপদ স্থান করে দেবে। কিছু কিছু বিষয় আমাদের সংস্কৃতিতে খুবই বিতর্কিত যেমন গৃহকর্মীদের সাথে আচরণ [7], এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সবসময় যে একমত হই বিষয়টি তেমন নয় কিন্তু নিদেনপক্ষে সৎ থেকে আলোচনা শুরু করা যায়।

যে বিষয়টিকে আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করি সেটা হল পরবর্তি পদক্ষেপ কি? আমাদের কথাগুলোকে কাজে পরিণত করার জন্য কার্যবিবরনী নিয়ে আমরা কী করতে পারি? জাম্বিয়ায় আমার প্রজন্মের কথা বলিয়ে হওয়ার চাইতে সমাজ পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে কাজ করার জন্য সুনির্দিষ্ট আগ্রহ রয়েছে, আমি মনে করি ইনসাকা হল চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করার, সহযোগিতা করার এবং বাস্তবিক প্রকল্প শুরু করার একটা মাধ্যম।

>জিভিঃ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

বিসিঃ ইনসাকাকে রেডিও প্ল্যাটফর্মে নেওয়ার জন্য সম্প্রতি আমি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। রেডিওর মাধ্যমে আরো বিস্তৃত শ্রোতাদের আলোচনার আগ্রহ সৃষ্টি হবে। অনেকগুলো বিষয়, যেমন- অনলাইন স্ট্রিমিং ও একই সঙ্গে রেডিওতে লাইভ সম্প্রচারের জন্য উপযুক্ত অনুষ্ঠান ফরম্যাট এবং এর কারিগরি দিক, কার্যকর আলোচনা, সময়সুচী ইত্যাদি দিকেই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। এটা সফল হলে রেডিও অনুষ্ঠান টুইটার প্ল্যাটফর্মের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

অনুসরন করুন টুইটারের @ইনসাকাচ্যাট [8] ( # ইনসাকা [9]) এবং স্টোরিফাই [4]