- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

হালকা অস্ত্র: সিরিয়ার জীবন্ত ছবি

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সিরিয়া, নাগরিক মাধ্যম, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, শিল্প ও সংস্কৃতি

বিগত দুই বছরে সিরিয়া থেকে ইন্টারনেটে ৫০০,০০০ হাজার ভিডিও আপলোড হয়েছে। এতে অনেকে বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, এদিকে অন্যরা যোদ্ধা, বিক্ষোভকারী, শান্তি আন্দোলন এবং সাধারণ নাগরিকদের মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে যারা এই ঘটনার চাক্ষুস স্বাক্ষী। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভুরি ভুরি দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন সত্ত্বেও সিরিয়ার এই সংঘর্ষের ঘটনা সারাবিশ্বের প্রচার মাধ্যম খুব সামান্যই উপস্থাপনা করা হয়েছে। এর আংশিক কারণ হচ্ছে সহজে ভালো এবং মন্দ, ঠিক এবং ভুলের মাঝে খুব সহজেই খাপ খায় না। একই সাথে এর আরো কারণ হচ্ছে, যে সব ভিডিও প্রকাশিত হচ্ছে তা বিষয়বস্তু, সম্পাদনা অথবা ব্যাখ্যা ছাড়াই প্রকাশিত হয়েছে।

যখন ব্যাক্তিরা আপলোড করা অনেক ভিডিওর নির্মাতা, তখন কয়েকজন মিলে অথবা কোন সংগঠন সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, সেটার পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই, এবং সাবটাইটেল প্রদান করছে, এবং উক্ত উপাদান সবার সমানে তুলে ধরছে। এই ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি দল ভার্চুয়াল সংবাদ সংস্থা হিসেবে কাজ করছে, তারা একই সঙ্গে সংবাদ অনুসন্ধান এবং এ সবের সুত্রের নিশ্চয়তা প্রদান করছে এবং গণ প্রচার মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া, যেমন ফেসবুক, টুইটার এবং বিশেষ করে ইউটিউবে জন্য এবং একই সাথে সরাসরি প্রচার করা সাইট যেমন বাম্বুসের এবং ইউস্ট্রিমের জন্য ভিডিও একত্রিত করছে। ক্রমেই জোরালো হতে থাকা সংগঠনগুলো ভিডিও বিতাড়নের কাজ করছে, যার মধ্যে আনা নিউজ মিডিয়া চ্যানেল [1] এবং শাম নিউজ নেটওয়ার্ক [2] অর্ন্তভুক্ত। সিরিয়া ডিপলি [3], সিরিয়া সংক্রান্ত যে কোন সংবাদ চিহ্নিত এবং সংগঠিত করে এবং একই সাথে সেগুলোর মৌলিক বিশ্লেষণ তৈরী করে। সংবাদ মাধ্যমে কম আলোচিত শান্তি আন্দোলন নথিভুক্ত করেছে সিরিয়া আনটোল্ড [4], যা কিনা যুদ্ধ ক্রমশ জোরালো হওয়া সত্ত্বেও তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গ্লোবাল ভয়েসেস [5]-এর, সিরীয় নাগরিক প্রচার মাধ্যম বিষয়ক একটি বিশেষ সংবাদের [6] পাতা সক্রিয় রয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস এই চলমান ঘটনাবলীর বিষয়ে এক বিশেষ সঙ্কলন প্রকাশ করে যাচ্ছে, যার শিরোনাম সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবলোকন করা [7]

নীচে সিরিয়ার দুটি সাম্প্রতিক নাগরিক ভিডিওর সঙ্কলন তুলে ধরা হল, যা জরুরী এই সময়ের নানাবিধ দিককে আলাদা এবং উল্লেখ করার এক প্রচেষ্টার অংশ। এই সমস্ত ভিডিও করোকোরান গ্যালারী অফ আর্ট-এর [8]-এ প্রদর্শিত হয়েছে, যা একই সাথে যুদ্ধ/ফটোগ্রাফি: সশস্ত্র সংঘর্ষের ছবি এবং এর পরবর্তী অবস্থা [9] নামক প্রদর্শনীতেও প্রদর্শিত হয়েছে , যার আয়োজক ছিল হিউস্টন ও ওয়াশিংটনের মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস, আর এই প্রদর্শনী ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে প্রদর্শিত হয়। এগুলো গ্লোবাল ভয়েসেস [5] এবং উইটনেসে [10] এর যৌথ উদ্যোগে তৈরী করা হয়েছে।

প্রথম ভিডিওর নাম, হালকা অস্ত্র [11], যা যুদ্ধকালীন সময়ে জীবন কেমন তার বিস্তারিত দিক উন্মোচন করেছে: একটি হেলিকপ্টারের এলামেলো ভাবে ওড়া, সুদৃঢ় রাতের মাঝে একটি গাড়ির হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যাওয়া, দুলতে থাকা একদল জনতা। রাস্তা জুড়ে নাগরিকদের উল্লাসধ্বনি দিতে দিতে এগিয়ে যাওয়া। এই সমস্ত দৃশ্য কেবল বিক্ষোভ, পুলিশের হামলা, বোমা বর্ষণ এবং প্রতিদিনের আতঙ্ক প্রদর্শন করে না, অথবা সিরিয়ায় প্রতিদিনের অজস্র টিকে থাকাকে সংজ্ঞায়িত করে না, একই সাথে উন্মোচিত করে ঘটনাক্রম, পরিবেশগত পারিপার্শ্বিকতা: যুদ্ধের উত্তজনা এবং একই সাথে এর বাস্তবতা।

দ্বিতীয় ভিডিও, দুর্বলের উপর সবলের আইন [12], স্বাক্ষ্য এবং সাক্ষাৎকারের সারাংশ। যে সমস্ত ব্যক্তি নানাভাবে তাদের উপলব্ধি এবং অভিজ্ঞতাকে অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছে,এই সমস্ত টুকরো ভিডিও তাদের প্রতিনিধিত্ব করছে। এতে আমরা, ঘটনার বর্ণনা, আবার নতুন করে ঘটনার বর্ণনা, জিজ্ঞাসাবাদ আবিস্কার করব। এখানে এক শিশু তার এলাকা ধ্বংস হবার ঘটনা আবার বর্ণনা করছে; শঙ্কিত, হাসি মুখের এক ব্যক্তি বর্ণনা করছে, কি ভাবে একজন দূরপাল্লার বন্দুকধারী একটি সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত করেছে; এক ব্যাক্তি তার ভাইয়ের মৃত্যুতে তীব্রভাবে শোক প্রকাশ করছে, যে কিনা ছিল একজন ফটোগ্রাফার। এই সমস্ত ভু-রাজনৈতিক ও জাতীয় আগ্রহের প্রতি তৈরী বিমূর্ত ভাষার বদলে আমাদের অনুমতি প্রদান করে ব্যক্তিগত কাহিনীর প্রেক্ষাপটে যুদ্ধের প্রতি মনোভাব গঠন করার। তারা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে সবার আগে এই যুদ্ধ হচ্ছে শত শত, হাজার হাজার ব্যক্তি এবং পরিবারের জন্য বিশাল এক বিপর্যয় এবং এখানে উঠে আসা খুব সামান্য কয়েকটি কাহিনী অন্যদের এ রকম অগুনতি ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে।