নিজেদের “ভি ফর থাইল্যান্ড” নাম দেওয়া একটি গ্রুপ, এ মাসেই থাইল্যান্ডের রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার উচ্ছেদ চেয়ে [1] ইতোমধ্যে তিনটি জনসভার আয়োজন করেছে।
অকুপাই আন্দোলনে [2] ৯৯% – রা ব্যপকভাবে যে সাদা গাই ফোকিস মুখোশ ব্যবহার করেছিল, সেটি পড়ে [3]থাইল্যান্ডের প্রতিবাদকারীরা সরকারের অভিযুক্ত দুর্নীতির নিন্দা করছে। অতীতে থাইল্যান্ডের সরকার-বিরোধী আন্দোলনে বর্শার ফলা দিয়ে আঘাত করেছিল রাজতন্ত্রের স্বপক্ষ শক্তি “হলুদ শার্ট”, যাদের পেছনে দেশটির উচ্চবিত্ত শ্রেণী বা ১% – এর সমর্থন ছিল।
ব্যাংককে এ পর্যন্ত গ্রুপটি সবেমাত্র এক হাজারের [4] কিছু বেশি লোককে একত্রিত করতে পেরেছে, যদিও তাঁরা দাবি করছে বিভিন্ন প্রদেশে তাঁদের প্রচুর সমর্থক রয়েছে। লুন্ঠনের দায়ে অভিযুক্ত, উচ্ছেদকৃত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোট বোন ইংলাক। তিনি ভাইয়ের হাতের পুতুল বলে সমালোচনাকারীরা তাঁর প্রতি অভিযোগ করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন গ্রুপ কর্তৃক আয়োজিত গণ সড়ক র্যালীগুলো থাই রাজনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বড় গ্রুপগুলোর মধ্যে রয়েছে “হলুদ শার্ট” (থাকসিন-বিরোধী এবং রাজতন্ত্র-সমর্থক) এবং “লাল শার্ট” (মূলত থাকসিন –সমর্থক)।
নিউ মান্ডালার জন্য লিখতে যেয়ে নিক নসটিজ ব্যাংককে সাম্প্রতিক প্রতিবাদ নিয়ে তন্ন তন্ন করে তদন্ত করেছেনঃ [9]
ইংলাক সরকারকে বর্তমানে যদিও বিভিন্ন গ্রুপের ছুড়ে ফেলে দেয়ার লক্ষ্য কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে, যদিও তাঁদের প্রতিবাদে জনসমাগম (এখনও ?) তেমন উল্লেখযোগ্য নয়, তা সত্ত্বেও এই প্রতিবাদগুলোকে অবহেলা করা যাবে না।
বর্তমানের এই প্রচেষ্টাকে প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা ধীরে ধীরে আরো উত্তপ্ত হতে পারে, বিশেষকরে আগস্টে যখন সংসদ অধিবেশন শুরু হবে। এবং সে সময় চরম বিতর্কিত কিছু ইস্যু নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতে পারে।
এখন পর্যন্ত এই আন্দোলনের ফলাফল দেখা অসম্ভব। তবে এটা পরিষ্কার, থাই সড়ক রাজনীতি এখনও ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে এবং এ সম্পর্কে আগে থেকে ধারনা করা যাচ্ছে না।
অতঃপর, এন্ড্রু ম্যাকগ্রেগর মারশাল মনে করেন সাদা মুখোশ আন্দোলনটি প্রধানত একটি সিনাওয়াত্রা – বিরোধী আন্দোলন।
এটি একটি সিনাওয়াত্রা – বিরোধী আন্দোলন, খাঁটি ও সরল এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ও থাইল্যান্ডে ভালো শাসনকে উৎসাহিত করা এর উদ্দেশ্য নয়। এসবের পেছনে এই ইস্যুগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারকে বেত্রাঘাত করার ছড়ি হিসেবে।
দ্য ডিপ্লম্যাটের জন্য লিখতে যেয়ে স্টিভ ফিঞ্চ একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, [10] যিনি গাই ফকিস চিহ্ন ব্যবহার নিয়ে মন্তব্য করেছেনঃ
যখন সাদা-মুখোশ অকুপাই এবং নামহীন আন্দোলনগুলোকে কাঠামোহীনের আওতায় ফেলা হচ্ছে, তখন কমিউনিস্ট-চালিত অরাজক সমবেদনার লক্ষ্য ক্ষমতা ও অর্থ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে। আন্দোলনটির থাইল্যান্ড সংস্করন রাজতন্ত্রকে রক্ষার জন্য উচ্চবিত্তের নামে একই চিহ্ন ব্যবহার করছে।
“অতি-রাজতন্ত্র” [11]এর সমর্থকরা গাই ফকিস মুখোশ ব্যবহার করায় জাশনাইন জায়নালও বিস্মিত হয়েছেনঃ
অতি-রাজতন্ত্রের একজন সমর্থক পাইসাল পুয়েকমংকল গাই ফকিস মুখোশের ব্যবহার শুরু করেছেন, যা সাধারনত বিশ্বের বিভিন্ন বেনামী আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত। সম্পূর্ণ কিম্ভূতকিমাকার একটি প্রতিমূর্তি, পাইসাল যে গাই ফকিস মুখোশ এবং বাস্তব জীবনের নায়কের ঐতিহাসিক প্রতিমূর্তি বেছে নিয়েছেন, তা বোধ হয় ইচ্ছাকৃত। ইংরেজ রাজাকে হত্যাচেষ্টার দায়ে গাই ফকিসকে প্রাণদণ্ড দেয়ার আগেই ১৬০৬ সালে ইংল্যান্ডে তিনি মারা যান।
থাই বিপ্লবের অবশ্যই একটি অভিব্যক্তি আছে। অনস্বীকার্যভাবে এর রঙ ও মতভেদের একটি বিশৃংখল অবস্থা।
জাতিসংঘের সরকারী সংবাদের জন্য লিখতে যেয়ে, ফেইন গ্রিনউড লক্ষ্য করেছেন র্যালীতে [12] অংশগ্রহণকারীদের মাঝে তরুণ ও বৃদ্ধরাও আছেঃ
আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় গাই ফকিস মুখোশটির উৎস যাই হোক থাইল্যান্ডে এ পর্যন্ত এ মাসে ঘটে যাওয়া তিনটি প্রতিবাদ কর্মসূচীসহ অদূর ভবিষ্যতে পরিকল্পিত আরো কিছু প্রতিবাদে এটি বেশ আগ্রহের সাথে ব্যপকভাবে ব্যবহারের ঝোক বাড়ছে।
প্রতিবাদকারীদের মধ্যে শুধুমাত্র তরুণ এবং মোহমুক্তরাই ছিল তা নয়, বরং অনেক মধ্যবয়সী ও এমনকি অনেক বৃদ্ধও বিভিন্ন প্রতিকৃতি উপরে ধরে এবং তাঁদের হাতের মুষ্টি উপরে তুলে, সময়ের সাথে তালে তালে “সিনাওয়াত্রা নিপাত যাক” বলে চিৎকার করে স্লোগান দিয়েছে।
এই লেখাটির মতো গ্রুপটির ফেসবুক পেজটি [5]ও ৯০ হাজারেরও বেশি লাইক পেয়েছে।