বাহরাইনে একটি নতুন আইন চালুর পিছনে “নিরাপত্তা বিবেচ্য বিষয়” কারণ হিসাবে উদাহৃত হচ্ছে, যেটি সেখানে স্কাইপি, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার এবং ট্যাঙ্গোর মতো ইন্টারনেটের জনপ্রিয় সেবাগুলোর ব্যবহার বন্ধ করে দিতে পারে।
সংবাদপত্রগুলো যোগাযোগ মন্ত্রী ফায়াজ বিন মোহাম্মদ আল খলিফাকে উদ্ধৃত করে বলছে [1], নতুন আইনটি ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) অ্যাপ্লিকেশন এর জন্য চালু হচ্ছে, যেটি উপসাগরীয় অঞ্চল জুড়ে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীরা খবর, মতামত, ছবি, এবং দৈনন্দিন তুচ্ছ তামাশা/ রসিকতা শেয়ার করছেন। সেই সাথে বিনামূল্যে ফোন করা এবং বন্ধু ও পরিবারের সাথে সংযোগ রক্ষার কাজেও এগুলো ব্যবহার করছেন।
আল খলিফাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে:
এই আইনটি নিশ্চিত করছে যে, এতে বাড়তি হিসেবে নিরাপত্তা বিবেচনা যোগ হবে, কিন্তু দেশের ঐতিহ্য এবং আচার ব্যবস্থার সাথে কোন সংঘর্ষিক কিছু থাকবে না। এগুলো উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের (জিসিসি) প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তৈরি, যা অপারেটরদের অধিকার সংরক্ষণের প্রবিধানের অস্তিত্ব নিশ্চিত করে এবং যোগাযোগ অ্যাপ্লিকেশনের অপব্যবহার রোধ করে।
তিনি বলেন, এই পদক্ষেপটি দেশের যোগাযোগ খাতকে রক্ষা করার জন্য। পাশাপাশি একটি সমীক্ষা দেখিয়েছে, “বাহরাইনে গত চার দিনে প্রায় ১,০০,০০০ জন মানুষ ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেছে”।
সম্ভবত সৌদি আরব থেকে বাহরাইন এই সূত্র পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রাষ্ট্রটি ইতিমধ্যে সেখানে ভাইবার ব্যবহার নিষিদ্ধ [2]করেছে। ব্যবহারকারীদের উপর গুপ্তচর বৃত্তির অনুমতি প্রদান করা না হলে এনক্রিপ্ট যোগাযোগ সফ্টওয়্যার ব্লক করা হবে এমন হুমকির পর গত ৫ জুন, ২০১৩ তারিখে সৌদি আরব ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করে দেয়। এছাড়াও সৌদি কর্তৃপক্ষ স্কাইপি এবং মোবাইল মেসেজিং এর মতো অন্যান্য সেবাও ব্লক করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। [3]
একটি যাচাইকৃত টুইটার একাউন্ট @কমস_বিএইচ [4]অনুযায়ী, যেটি নিজেকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট হিসেবে বর্ণনা করেছেঃ
@কমস_বিএইচঃ [4] মন্ত্রিঃ যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ভিওআইপি প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের উদ্দেশ্যে একটি গবেষণা শুরু করেছে #বাহরাইন
@কমস_বিএইচঃ [4] বাহ্যিক নৈতিক মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের ভঙ্গ প্রতিরোধ করা এবং সেই সাথে নিরাপত্তা বিবেচনার জন্য পদ্ধতিটি চালু করা হয়েছে।
@কমস_বিএইচঃ [4]তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত এবং আন্তর্জাতিক কল এবং টেলিকম নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা প্রদানই হচ্ছে এই আইন এবং নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য।
নেটিজেনরা অনলাইনে এই খবরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আহমেদ রইদ জিজ্ঞেস করেছেনঃ
@আল্বস্তাঃ [5] আমরা কি বিনামূল্যে ভিওআইপি’র বিদায় চুম্বন করব ? #বাহরাইন #স্কাইপি #চিহ্ন #পূর্বের টুইট #ভাইবার
এবং রাশা ইউসুফ আরও বলেছেনঃ
@রাশাইউসুফঃ [6]যদি @কমস_বিএইচ ভাইবার, ট্যাঙ্গো বা স্কাইপি বন্ধ করে দেয় আমি টায়ার পোড়াব #বাহরাইন
টায়ার পোড়ানো এবং রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া বাহরাইনে প্রতিবাদের একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি, যা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ সাল থেকে প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভে প্রত্যক্ষীকরণ হয়ে আসছে।
সাইবার নিষেধাজ্ঞা বিরুদ্ধে বিশ্ব দিবসে গত মার্চের ১২ তারিখে রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারস ইন্টারনেট পাঁচ শত্রু রাজ্যের একটি হিসেবে বাহরাইনকে চিহ্নিত [7]করেছে এভাবে – “গুপ্তচর রাষ্ট্র, যার অনলাইন নজরদারি আচরণের কারণে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।” অন্য চারটি রাষ্ট্র হচ্ছে সিরিয়া, চীন, ইরান ও ভিয়েতনাম।