ব্রাজিলের ‘ভিনেগার বিপ্লব’-এ সোশ্যাল মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে

A faixa "Somos a Rede Social" na manifestação no Rio de Janeiro no dia 17 de junho. Foto de Arthur Bezerra usada com permissão/Facebook

জুন মাসের ১৭ তারিখে রিও ডি জেনেরিও'র বিক্ষোভের দিনের একটি ব্যানার। সেখানে লেখা- আমরা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। ছবি আর্থার বেজেরা'র। তার অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে/ ফেসবুক।

[উল্লেখ ব্যতীত পোস্টের সব লিংকই পর্তুগীজ ভাষার।]

জুনের ১৩ তারিখে সাও পাওলোতে প্রতিবাদ [ইংরেজি] কর্মসূচী শুরু হয় বাস ভাড়া কমিয়ে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার দাবিতে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই দাবি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কর্মসূচী চলার সময়েই এর প্রতি দেশজুড়ে সমর্থন তৈরি হয়। নতুন নতুন ওয়েবসাইট, টুলস এবং ব্লগও কর্মসূচীকে অনলাইন থেকে অফলাইন সবখানেই ছড়িয়ে দেয়।

সব আন্দোলনই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। এখানে প্রতিবাদের সময়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং স্থান যেমন সবার সাথে শেয়ার করা যায়, তেমনি রাস্তায় কীভাবে নিরাপদ থাকা যাবে, কাউকে শেল্টার দিতে কী করতে হবে কিংবা কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে রিপোর্ট করা যাবে, সে বিষয়ে বাস্তবিক পরামর্শও পাওয়া যায়। ব্রাজিল থেকে সহিংসতার সময়ে কীভাবে ভিডিও এবং ছবি দিয়ে রিপোর্ট করা যাবে তা-সহ অ্যাক্টিভিজমের সম্পূর্ণ পরামর্শ পাওয়া যায়।

যেমন উশাদিহি প্লাটফর্মের কথাই ধরুন, এটা ব্রাজিলের প্রতিবাদ কর্মসূচীর একটি সহযোগিতামূলক ব্লগ। ‘ভিনেগার বিপ্লব‘ [ইংরেজি] চলার সময়ে ঘটা বিভিন্ন সহিংসতা ও সংঘর্ষের অভিযোগগুলো এখানে লিপিবদ্ধ করে রেখে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।

print screen do mapa colaborativo #protestobr

#প্রতিবাদীব্রাজিল সহযোগিতামূলক ব্লগের একটি স্ক্রিন শট।

সহযোগী ওয়েবসাইট নো মোভিমেন্টো (আন্দোলন)-এ ব্রাজিলের সব জায়গার আন্দোলনের খবর এবং ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আইনি সহযোগিতা প্রদান করার জন্য একদল স্বেচ্ছাসেবী আইনজীবীর তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। যারা পর্তুগীজ ভাষা জানেন না, তাদের কাছে ইংরেজিতে প্রকৃত সত্য প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান প্রটেস্ট নামের একটি ব্লগ। vemprarua.org (গন্তব্য রাস্তা) নামের একটি ওয়েবসাইট ব্রাজিলে ছড়িয়ে পড়া প্রতিবাদ কর্মসূচীর তথ্য খুঁজে একত্র করে vemprarua.com এর কোলাবরেটিভ ম্যাপে দিচ্ছে।

একটি ভিডিও সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানে দর্শকদের শেখানো হচ্ছে- “কীভাবে বিপ্লব তৈরি হয়”:

অনলাইনে সক্রিয় এবং অফলাইনে স্থবির?

এই আন্দোলনের জন্ম ভার্চুয়াল বিশ্বে। এখন সেখানে সবাইকে ইন্টারনেট ছেড়ে #vemprarua হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে রাস্তায় আসতে বলা হচ্ছে।

অনলাইনে প্রতিবাদ সম্ভব কি সম্ভব নয়, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এরমধ্যেই ২০১১ সালে মিশর বিপ্লবের [ইংরেজি] মতো আন্দোলন পৃথিবীবাসী দেখছে। আর এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, নাগরিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সোশ্যাল মিডিয়ার সক্ষমতা রয়েছে।

Foto da manifestação de São Paulo no dia 13 de junho. Foto amplamente divulgada por blogs e contas de twitter coletada por @NoMovimento na cobertura colaborativa dos protestos em Sao Paulo

১৩ জুনের আন্দোলন কর্মসূচীতে সাও পাওলোর একজন বাসিন্দা ফেসবুক ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন। এই ছবি ব্লগ এবং টুইটারের মাধ্যমে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাও পাওলোর প্রতিবাদ কর্মসূচীর ছবি কাভার করতে গিয়ে @NoMovimento এটা সংগ্রহ করেছেন।

জাতীয় প্রতিবাদ আন্দোলনে অনলাইন নেটওয়ার্ক কীভাবে ভূমিকা রাখে, তার অভিনব শিক্ষা দেখিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রাজিলের বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি রয়েছে

এটা যেমন অনলাইন ব্যবহারকারীদের বিস্মিত করেছে, তেমনি বিতর্কও তৈরি করেছে। ফেসবুক ব্যবহারকারী ইতিহাসবিদ ফ্রেড কোয়েলহো অবজেক্ট ইয়েস, অবজেক্ট নো ব্লগে লিখেছেন, বিপদের সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিবাদের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে (তার অনুমতি নিয়ে প্রকাশিত):

Hoje foi um dos dia mais bem informados da história do facebook – ao menos, da minha timeline. A quantidade de artigos, links e videos que coletei sobre os eventos de ontem, textos do mundo inteiro, sem ter que sequer sair da rede do zuckberg foi sensacional.

আজকে ফেসবুকের ইতিহাসে সবচে’ তথ্যবহুল দিন, বিশেষ করে আমার টাইমলাইনে। গতকালের ঘটনার বিভিন্ন প্রবন্ধ, লিংক, ভিডিও, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজনের লেখা আমি সংগ্রহ করেছি। এটা জুকারবার্গের নেটওয়ার্ক ছাড়া সম্ভব হতো না। বেশ রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার।

জনগণকে একত্রিত করতে অনলাইন কী করে টুলস হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তা রাজনীতিবিদদের পক্ষে বোঝা কষ্টকর। লিওনার্দো সাকামটো ব্লগে তাই নিয়ে আলোচনা হয়:

 Os políticos tradicionais têm dificuldade em assimilar como movimentos utilizam ferramentas como Twitter e Facebook. Acreditam que são apenas um espaço para marketing pessoal ou, no máximo, um canal para fluir informação ou atingir o eleitor. Há também os que creem que redes sociais funcionam como entidades em si e não como plataformas de construção política onde vozes dissonantes ganham escala, pois não são mediadas pelos veículos tradicionais de comunicação. Ou seja, onde você encontra o que não é visto em outros lugares, por exemplo.

টুইটার, ফেসবুক কীভাবে আন্দোলনের পক্ষে ব্যবহার করা যায়, তা আয়ত্ত্ব করা মূলধারার রাজনীতিবিদদের পক্ষে বেশ কষ্টসাধ্য। তারা বিশ্বাস করে, এগুলো শুধুমাত্র ব্যক্তিগত যোগাযোগের কাজের জন্য। অথবা বড়ো জোর ভোটারদের তথ্য পেতে ব্যবহার করা যায়। এদের মধ্যে আরো কিছু রাজনীতিবিদ আছে, যারা বিশ্বাস করে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তাদের নিজেদের সত্ত্বা না, একে রাজনীতির প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা যায় না, এটাকে সম্মিলিত কণ্ঠস্বর তৈরির ভিত্তিভুমি হিসেবেও ব্যবহার করা যায় না। নেট ব্যবহারকারীরা প্রথাগত মিডিয়ার মাধ্যমে ফিল্টার না হওয়ায় তারা এমনটা মনে করেন। অন্যদিকে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি এক জায়গায় যা পাবেন, সব জায়গায় তা পাবেন না।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়াকে সোশ্যাল পার্টিসিপেশন বা সামাজিক অংশগ্রহণের ফর্ম বা ধরন হিসেবে উল্লেখ করেছে:

Essas tecnologias de comunicação não são ferramentas de descrição da realidade, mas sim de construção e reconstrução desta. Quando a pessoa está atuando através de uma dessas redes, não reporta simplesmente. Inventa, articula, muda. Vive. Isso está mudando aos poucos a forma de se fazer política e as formas de participação social. O poder concedido a representantes, tanto em partidos, como em sindicados, associações, entre outros espaços, tende a diminuir e a atuação direta das pessoas com os desígnios da sua polis, consequentemente, aumentar.

এই যোগাযোগ প্রযুক্তির টুলসগুলো বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে না, কিন্তু বাস্তবকে গড়ে তুলতে বা পুনর্নিমাণ করতে পারে। এই নেটওয়ার্কে একজন ব্যক্তি যখন অভিনয় করবে, তা রিপোর্ট হবে না। তিনি আবিষ্কার, গ্রন্থনা, পরিবর্তন করলে তা হবে। আস্তে আস্তে এই পরিবর্তনগুলো রাজনীতি এবং সামাজিক অংশগ্রহণের ধরনেও পরিবর্তন আনবে। এই শক্তিকে প্রতিনিধি, পার্টি, ইউনিয়ন, অ্যাসোসিয়েশন স্বীকার করে নেবে। এবং জনগণের সরাসরি কর্মকাণ্ডকে হ্রাস করে নিজস্ব রাজনৈতিক বাস্তবতার কাঠামোকে দিন দিন বৃদ্ধি করবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .