আফ্রিকান ইউনিয়নের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

আফ্রিকার দেশগুলোর একমাত্র বৃহত্তম সংস্থা আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। প্রতিষ্ঠানটি এর সদরদপ্তর ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় গত ২৫ থেকে ২৭ মে, ২০১৩ তারিখ পর্যন্ত ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করেছে। কিন্তু পাশাপাশি সারা মহাদেশজুড়ে আফ্রিকানদের মধ্যে সংস্থাটির কার্যকারিতা ও প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

আফ্রিকার একতার সংস্থা হিসেবে এইউএর সূচনা, যা ৩২ টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে ২৫ মে, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সাহায্য করার মাধ্যমে মহাদেশটিতে ঔপনিবেশিক শাসনের সমাপ্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যদিও সিদ্ধান্ত প্রয়োগের অক্ষমতার কারণে এটি প্রায়ই সমালোচিত হয়।

২০০১ সালে সংস্থাটি আফ্রিকান ইউনিয়ন হিসেবে পুনঃস্থাপনের পর বেশ কিছু সমালোচনার সম্মুখীন – এই মহাদেশটিতে দারিদ্র এবং যন্ত্রণাদায়ক সংঘাত সামলানোর মতো ক্ষমতা সংস্থাটির খুবই সীমিত । বর্তমানে এইউ – এর সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ৫৪ টি।

African Union 50th anniversary logo. Image from African Union Website: http://www.au.int/

 আফ্রিকান ইউনিয়ানের ৫০ তম বার্ষিকীর লোগো। আফ্রিকান ইউনিয়ানের ওয়েবসাইট http://www.au.int/ থেকে ছবিটি নেওয়া 

অনলাইনে ঘটনাটি অনুসরণ করা আফ্রিকানরা এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজ ও তরুণদের মাঝে বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানটি আলোচনার ঝড় তুলেছে। এইউ যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে এবং যেসব ক্ষেত্রে সফল হয়েছে, সেসব এই আলোচনার মাধ্যমে উঠে এসেছে।

ফাঁদে পরা স্বাধীনতা- এর ব্লগ পোস্টে ওয়েবস্টার মাদানহি এইউ- এর সফলতা নিয়ে মন্তব্য করেছেনঃ

বেশীরভাগ আফ্রিকানদের কাছে ৫০ বছরে ধরে সংস্থাটির সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে একতাবদ্ধ হয়ে থাকা। ব্যস, এতোটুকুই। যদি কেউ মনে করেন আমার কথাটি একটি কর্কশ রায়, তবে আমাকে মনে করিয়ে দিতে দিন। আফ্রিকানদের এখনও ভিসা লাগে – মাঝে মধ্যে আমাদের একে অন্যের দেশে যাওয়াটা খুব ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ।

সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের একটি অংশ হিসেবে শিশু ও তরুণদের জন্য আন্তঃপ্রজন্ম কথোপকথনের ওপর একটি অধিবেশন চলে। এ সময় জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট মাইকেল সাটা আফ্রিকান অধিবাসীদের জন্য একটি পাসপোর্ট ধারণার বিরোধীতা করেন। তিনি মনে করেন, এ ব্যাপারটি মহাদেশটিতে অপরাধ প্রবণতাকে আরো উৎসাহিত করবে।

আফ্রিকান ইউনিয়নের সফলতা ও চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলার জন্য বিপুল সংখ্যক আফ্রিকান টুইটার ব্যবহার করেছেন।

একজন শিক্ষার্থী ও শখের ফটোগ্রাফার আব্দুল শরিফ (@আফ্রিকাথিংকার) সাধারণ আফ্রিকান পাসপোর্টের বিষয়ে অবাক হয়েছেনঃ

@আফ্রিকাথিংকারঃ সাধারন আফ্রিকান পাসপোর্ট এবং মুদ্রা থাকার কথা কল্পনা করেন ? #AUat50#Africaday #Panafricanism

লেখক, শিক্ষক এবং বক্তা সানি বিন্দ্রা (@সানিসানওয়ার্ডস) লিখেছেন, প্যানআফ্রিকানিসম বলতে কনফারেন্সের জন্য একত্রিত হওয়ার চেয়েও আরো বেশিকিছু বোঝায়ঃ

@সানিসানওয়ার্ডসঃ #প্যানআফ্রিকানিসম বলতে বেশী বেশী কনফারেন্স বোঝায় না; এটি বলতে বোঝায় আরো কম নিয়ন্ত্রণ, জ্ঞান, মূলধন ও দ্রব্যের বেশী বেশী আদান প্রদান।

বিশ্লেষক আব্দি হাকিম (@আব্দিহাকিম) খন্ডন করে দাবি করেছেন যে এইউ কিছুই অর্জন করতে পারেনিঃ

@আব্দিহাকিমঃ দৃঢ়তার সাথে বলা উক্তিটি “@AUC_DPA কিছুই অর্জন করেনি” মিথ্যা প্রমাণ করুন। সোমালিয়াকে দেখুন, এটি মূলত প্রমাণ থেকে দ্বৈবক্রমে লাভ করেছি। গর্বিত #panafricanism

যাইহোক, আরও একজন ফিন্যান্সিয়াল কনসালট্যান্ট গারাওয়া গিচুম্বি স্যাম (@গিচুম্বিস্যাম) এইউ – এর সমালোচনা করে বলেছেনঃ

@গিচুম্বিস্যামঃ আমার কাছে, এইউ সর্বোত্তম সংস্থা যা আফ্রিকাকে প্যান-আফ্রিকানিসমের আদলে আনতে পেরেছে। কিন্তু করণীয় কার্যসূচী নির্ধারণ করতে [আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত] আদ্দিস আবাবায় আজকের সম্মেলন একটি ভুল স্থান নির্ধারণ।

আফ্রিকান নেতাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত করতে এই আদালত, কিছু আফ্রিকান নেতার এই অভিযোগ উত্তাপনের পর তিনি এই টুইট করেনঃ

@আইএ্যামএটিক্সঃ এইউ নেতারা #আইসিসি কে জাতি শিকারি বলে অভিযোগ করেছেন……

আফ্রিকান নেতারা আইসিসিকে এর নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ মামলা কেনিয়াতে পাঠিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে জোর সমর্থন দিয়েছেন। আইসিসির প্রেসিডেন্ট স্যাং-হিউন সোং জোর সমর্থন দিয়ে দাবি করেছেন যে, আদালতটি আফ্রিকান নেতাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত করে কাজ করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একজন অধিবাসী সাংবাদিক মাইকেল রোজেনটাল নিচের ভিডিওটি অনুষ্ঠান উদযাপনের সময় দেখানোর জন্য আফ্রিকান ইউনিয়নে পাঠিয়েছেনঃ

“রেনেসাঁর জন্য আফ্রিকাকে একটি সুযোগ দান এবং ২০৬৩ সালের জন্য এর ভিশন ও মিশনের রূপরেখা তৈরি”- প্যান-আফ্রিকানিসম এবং আফ্রিকার নবজাগরণ এর ক্ষেত্রে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ। এইউ এই উদযাপন নিয়ে গর্ব করে।

শুধুমাত্র সময়ই বলে দেবে আফ্রিকান ইউনিয়ন আফ্রিকার জনগণের জন্য একটি সুন্দর জীবন অর্জন করতে একতা, দৃঢ়তা ও আফ্রিকান দেশগুলোর পারষ্পরিক সহযোগিতাকে আরো উন্নীত করতে পারবে কিনা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .