- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

“ধর্ম অবমাননা”র দায়ে সৌদি যুবক গ্রেপ্তার

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সৌদি আরব, ধর্ম, নাগরিক মাধ্যম, মানবাধিকার

সৎগুণ উন্নীতকরণ এবং পাপ প্রতিরোধকরণ কমিটি (সিপিভিপিভি) [1] রাজধানী রিয়াদে দু’জন সৌদি যুবককে ধর্ম অবমাননার [2] দায়ে গ্রেপ্তার করেছে। বদর আল-রশীদ @বিআলরশীদ [3] এবং আব্দুল্লাহ আল-বিলাসি @৩বিডিএলএলএ [4]টুইটারে তাঁদের ঘটনাটি শেয়ার করেছেন।

আল-রশীদের মতে, সন্ধ্যাকালীন নামাজ আদায়ের জন্য লোকেদের এলাকা ত্যাগের কথা বলতে সিপিভিপিভি’র গাড়ি যখন তাঁদের অতিক্রম করছিল তখন তাঁরা একটি ক্যাফের বাইরে বসেছিল। তিনি বলছেন, তিনি সিপিভিপিভি’এর সদস্যদের সাথে তর্ক করেছিলেন যে নামাজের সময়ে পাবলিক প্লেসে বসে থাকাটা অবৈধ কিনা।

এরপরে আল-রশীদ টুইট করেছেন [আরবি]:

@BAlrasheed: [5] لأني أول مرة أسمع بهذا النظام ولعلمي بأن الهيئة ومعظم الأجهزة الأمنية أحياناً يتصرفون حسب مزاجهم ويختلقون لك قوانين غير موجودة
رحت للجمس وسألت: هل هناك قانون يمنع الجلوس في الأماكن العامة وقت الصلاة؟

@বিআলরশীদঃ [6]“এই আইন এবং হেয়া (সিপিভিপিভি অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে যেটার সাথে যুক্ত) মাঝে মাঝে ইচ্ছেমতো প্রয়োগ করা হয়। একারণে এটা সম্বন্ধে আমি প্রথম শুনলাম। তাই আমি তাঁদের গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম এবং জিজ্ঞাসা করলামঃ এমন কি কোন আইন আছে যে নামাজের সময় জনসম্মুখে বসে থাকা নিষিদ্ধ?”

কর্মচারীদের উত্তর ছিল এরকম যে, এটি হারাম (ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ), কিন্তু আল-রশীদ বাধা দিয়ে বললেনঃ

@BAlrasheed: [7] قاطعته وقلت: لا تقول لي يقول الرسول صلى الله عليه وسلم، فيه قانون؟ الحديث نصيحة وأنا حر أعمل بها أو لا و(لا إكراه في الدين) أما القانون فهو عقد اجتماعي بين المواطن والحكومة وهذا الشي اللي أنا ملزم به فقط.

@বিআলরশীদঃ [8] “ধর্ম কি বলে, তা আমাকে বলবেন না। এমন কোন আইন কি আছে? ধর্ম ব্যক্তিগত একটি পছন্দের বিষয়। আর আমি যা মানতে বাধ্য, তা হচ্ছে আইন”।

আল-রশীদের মতে, কর্মচারীটি তাঁর কথা শুনে খুব বিরক্ত হয় এবং তাঁর ও তাঁর বন্ধুর পরিচয়পত্র দেখতে চায়।

এরপর, সিপিভিপিভি সদস্যটি তাঁদের ধমকাতে শুরু করল এবং পুলিশ কর্মকর্তাটিকে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উৎসাহ দিচ্ছিল। কয়েক মিনিট পর, আরেকটি সিপিভিপিভি’এর গাড়ি ও একটি পুলিশের গাড়ি তাঁদের গ্রেপ্তার করতে এল এবং তাঁদের আল-সুলাইমানিয়া পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হল।

আল-বিলাসি সেলের অমানবিক অবস্থার কথা বলেছেনঃ “এটি খুব ছোট এবং মানুষে ভর্তি ছিল। সেখানে কোন বিছানা বা ম্যাট্রেস ছিল না”। তিনি আরো বলেছেন, “আমরা মেঝেতে ঘুমিয়েছি। আমি একজন কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছিলাম, আমাকে যেন হলরুমে ঘুমাতে দেওয়া হয়, কিন্তু সে আমাকে শুধুই অভিশাপ দিল”।

পরদিন সকালে তাঁদেরকে হাতকড়া পরিয়ে তদন্ত ও অভিযোগ ব্যুরোতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁদেরকে একটি ছোট ছোট ঘরে ঢোকানো হয়, যেখানে তাঁরা পৃথকভাবে তদন্তের জন্য ডেকে নেওয়ার আগে কয়েক ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহকে বলেন যে পুলিশ কর্মকর্তা ও সিপিভিপিভি সদস্যদের সাথে “তর্ক করা যাবে না, বরং মেনে নিতে হবে”।

তাঁদের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটে যখন তাঁদের বাবা-মা তাঁদের জামিনের ব্যবস্থা করেন এবং তাঁরা মুক্তি পান। যদিও তদন্তকারী কর্মকর্তাটি একে “ভুলবোঝাবুঝি” বলে আখ্যায়িত করেছেন। ধর্মীয় পুলিশেরা এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি এবং তাঁরা দু’জন লোকের শাস্তি দাবি করেন।

আরো উদ্ভট ব্যাপার এই যে, আল-বিলাসি এবং আল-রশীদ একজন লেবানিজ লোক সম্পর্কে একটি অদ্ভূত ঘটনা বলেছেন [9]। লোকটির সাথে তাঁদের আল-সুলাইমানিয়াহ পুলিশ স্টেশনে দেখা হয়েছে। লোকটিকে “ধর্মীয়ভাবে অশ্লীল হাসির”! জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

من أظرف القصص في التوقيف.. لبناني يعمل في السواني في الفيصلية محكوم عليه بخمس أيام. التهمة: “ابتسامة غير شرعية”

@বিআলরশীদঃ [9]আটক অবস্থায় সবচেয়ে উদ্ভট যে ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা জেনেছি তা হল একজন লেবানিজ বিক্রেতার ঘটনা, যাকে পাঁচ দিনের কারাদন্ড দেয়া হয়েছিল। তাঁর অপরাধ ছিলঃ “একটি অ-শরিয়া শিষ্ট হাসি”।

২৫ শে মার্চ, ২০১৩ ঘটনাটি ঘটেছে।