রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীর প্রতি ইরানের শাসকদের লৌহ মুষ্টি বিন্দুমাত্র শিথিল হয়নি। তবে ভার্চুয়াল জগতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সেরা বলে বিবেচিত হয়ছে নতুন এক গ্রাফিক উপন্যাসের চরিত্র [ছবিতে উপন্যাসের কাহিনী তুলে ধরা]।
মাহমুদ আহমাদিনেজাদের পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি হবার লক্ষ্যে ইরানের আশাবাদী শত শত নাগরিক, ১৪ জুন ২০১৩ তারিখের আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম নিবন্ধন করেছে । ইরানের রক্ষণশীল গার্ডিয়ান কাউন্সিল এখন প্রার্থীর এই তালিকা থেকে কয়েকজনকে বেছে নেবে, যারা মূলত এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
রাষ্ট্রপতি পদে যাহ্রা
২০০৯ সালের নির্বাচনের পর যে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল অনেকে এখনো সে কথা স্মরণ করতে পারে। ইউনাইটেড৪(ফর)ইরান নামক একটি একটিভিস্ট ওয়েবসাইট এবং ধারাবাহিক ওয়েব কমিক সাইট যাহরা প্যারাডাইজ মিলে এক ভার্চুয়াল প্রচারণা শুরু করেছে যার নাম ২০১৩ সালের রাষ্ট্রপতি পদে যাহরা, যা কিনা বিদ্রূপের মাধ্যমে ইরানের রাজনৈতিক দুর্নীতি উন্মোচন করছে।
যাহ্রা হচ্ছেন এই গ্রাফিক উপন্যাসের মূল চরিত্র,যার সন্তান মেহেদি ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পর থেকে নিখোঁজ। ভোট৪(ফর)যাহ্রা.অর্গ নামক ওয়েব সাইটে সাপ্তাহিক ভাবে যাহরার বার্তা ছাপা হয়।
এখানে তার ভার্চুয়াল প্রচারণার বার্তা তুলে ধরা হল:
২০০৯ সালে, লক্ষ লক্ষ ইরানী নাগরিকের সাথে যাহ্রা এবং তার পরিবার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। নির্মমভাবে দমন করা সত্ত্বেও ইরান বসন্তের প্রতিশ্রুতি ছিল–গণতন্ত্র, মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার–যা এখনো ইরান থেকে অনেক দূরে। যাহ্রা এবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে এক নতুন দিনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে, আসুন আমরা তার সাথে যোগ দেই। আসুন আমরা আমাদের সেই ইরনাকে আবার জিতিয়ে আনি।
অবাধ এবং নিরপেক্ষ এক নির্বাচনের অধিকার
যাহ্রা প্যারাডাইজের ফেসবুকের পাতায় ইরান সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা তাদের ছবি আপলোড করেছে ।
ফেসবুকের এই পাতায় কেউ কেউ খুব সাধারণ, কিন্তু অর্জন করা কঠিন এমন এক স্লোগান পোস্ট করেছে, আর তা হচ্ছে “ অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অংশ নেওয়া আমার অধিকার।”
যাহ্রা, ব্লগারদের ভুলে যায়নি
যাহ্রা উল্লেখ করেছে যে নিরাপত্তা বাহিনী ব্লগার, সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারের লোকজনদের জেলে দিয়েছে এবং এদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে।
যাহরার প্রচারণা আমাদের এক বেদনাদায়ক সত্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। চার বছর আগে লক্ষ লক্ষ ইরানি নাগরিক পরিবর্তনে বিশ্বাস করে, সত্যিকারের একজন প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়। এমনকি এদের মধ্যে কেউ কেউ নিজের জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করেছে। এখন এমন এক কার্টুন চরিত্রের আবির্ভাব ঘটেছে, কারো কারো কাছে যে কিনা সবচেয়ে আকর্ষনীয় প্রার্থী।