- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

পাকিস্তানের প্রগতিশীল ফ্যাশনশিল্পের এক দুর্লভ মুহূর্ত

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, পাকিস্তান, নতুন চিন্তা, নাগরিক মাধ্যম, লিঙ্গ ও নারী, শিল্প ও সংস্কৃতি

পাকিস্তানে ধর্মীয় সহিংসতা আর মার্কিন ড্রোন আক্রমণ চলছেই। তবে সাম্প্রতিক ফ্যাশন সপ্তাহ এই অশান্তির মধ্যেও দেশটিতে কিছুটা হলে শান্তি বয়ে এনেছিল।

ফ্যাশন পাকিস্তান [1] সপ্তাহের লাইভ-স্ট্রিমিং [2] প্রচারিত হয় এপ্রিল মাসের ৯-১০ তারিখে। করাচি থেকে। এতে পাকিস্তানের ২৭ জন ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাক প্রদর্শনী হয়েছে।

বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ জানেই না যে, পাকিস্তানীদের জীবনে ফ্যাশনের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

পাকিস্তান ফ্যাশন সপ্তাহ

২০০৯ সাল থেকে পাকিস্তানে অসংখ্য ফ্যাশন সপ্তাহের [3] আয়োজন হয়েছে। আর এই ফ্যাশন সপ্তাহ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তান বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে এই শিল্পে তাদের পেশাগত দিক ও বিকাশমান ধারাকে। এতে অবশ্য পাকিস্তানের মানুষদের সাংস্কৃতিক বিশ্বাস বা রক্ষণশীলতা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

এপ্রিলে করাচিতে অনুষ্ঠিতব্য ব্রাইডাল কোচার সপ্তাহ এবং লাহোরে অনুষ্ঠিতব্য অন্য একটি ফ্যাশন সপ্তাহের পরেই ফ্যাশন পাকিস্তান উইকের স্প্রিং/সামার ২০১৩ পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ব্রাইডাল ফ্যাশন সপ্তাহ থাকবে বিয়ের পোশাকের জমকালো প্রদর্শনী।

গ্লোবাল ভয়েসেস-এর পক্ষ থেকে প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া তিনজন ফ্যাশন ডিজাইনারের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। সাক্ষাৎকারে তারা তাদের দেশের পরিস্থিতি, নতুন নতুন ফ্যাশনের উদ্ভাবন ও তৈরির বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন:

ফ্যাশনাবলি ইউরস অনুষ্ঠানে জারি ফয়সাল [4]ফয়সাল কাপাডিয়ার [5] ভিমিও [6] থেকে নেয়া।

ফ্যাশনাবলি ইউরস অনুষ্ঠানে হাসিনা খানানি [7]ফয়সাল কাপাডিয়ার [5] ভিমিও [8] থেকে নেয়া।

ফ্যাশনাবলি ইউরস অনুষ্ঠানে মোনা ইমরান [9]ফয়সাল কাপাডিয়ার [5] ভিমিও [8] থেকে নেয়া।

ফ্যাশন সপ্তাহে ডিজাইনাররা গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারও করেছিলেন। এক্ষেত্রে দারুণ একটা উদাহরণ হলো এই ই-স্টোরটি [10]। এখানে র‌্যাম্পে হেঁটে বেড়ানো পোশাকগুলো ঘণ্টাখানেক মধ্যেই যে কেউ পৃথিবীর যে কোনো জায়গা থেকে কিনতে পারেন।

ফ্যাশন পাকিস্তান উইক সোশ্যাল মিডিয়াতেও রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। শুধু লাইভ-স্ট্রিমিং-ই হয়নি, ফ্যাশন ব্লগার নাইদা মোঘল [11] এটা নিয়ে লিখেছেন। টুইটারেও অনুষ্ঠানের প্রচারণা চলেছে। যদিও ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কারণ দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে সংযুক্ত রাখার সাবমেরিন ক্যাবলের চারটির মধ্যে দুইটিই নষ্ট [12] ছিল।

ফ্যাশনের সাথে তালেবানের বিরোধ

পাকিস্তানের প্রথম ফ্যাশন সপ্তাহ পালিত হয় ২০০৯ সালে [13]। তালেবানরা হুমকি দিয়ে এটি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। এই হুমকিই জন্ম দিয়েছিল তালেবান বিরোধী ফ্যাশন আন্দোলনের [14] (#FAT)। এই ঘটনা পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের যুদ্ধ প্রতিনিধিদের পাকিস্তানে টেনে নিয়ে এসেছিল ফ্যাশনের বিষয়টি কাভার করার জন্য। একই সঙ্গে এটি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যঙ্গ টুইট [15], মিম এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাল্টদের মতো স্ট্যাটাস [16] দেয়ার উৎস হয়েছিল।

Untitled-1-01

পাকিস্তানী ফ্যাশন ডিজাইনার দীপক পারওয়ানি। ছবি অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

সাবাহাত জাকারিয়া ( সাবিজ্যাক [17])একজন টুইটার ব্যবহারকারী। তিনি তার টুইটার প্রোফাইলে লিখেছেন, সামাজিক শ্রেণী ব্যবধানের নিকুচি করি, দিনযাপনের সবকিছু নিয়েই টুইট করি।তালেবানবিরোধী ফ্যাশন আন্দোলন নিয়ে তার মন্তব্য হলো:

সাবিজ্যাক [18] (সাবাহাত জাকারিয়া): #FAT [19]@ [20] তাম্মিহক [20]: ফ্যাশন সপ্তাহ ভালোয় ভালোয় শেষ হওয়ায় ধন্যবাদ। একটার পর একটা ফ্যাশন সপ্তাহ আমাদের নির্বাচনের দিকে অতি মনোযোগ থেকে রেহাই দিবে।“

একাধিক উপলক্ষে পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের কাছে খোঁচা দেয়ার মতো একটা মজার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মোশাররফজায়েদী [21]) নামের একজন আমলা এবং কলামলেখক সরস মন্তব্য করেছেন:

মোশাররফজায়েদী [22] (মোশাররফ জায়েদী): পুরাই তালেবান! আরটি হল্যান্ড_টম [23]: “চমৎকার ডাইনিং আর আবেশ মিলে ফ্যাশন রাষ্ট্রের অসুস্থতার চিহ্ন দেখিয়ে দিচ্ছে।“ সেনেকা। #FAT [19]

অনুসন্ধানী ব্লগার এবং টুইটার ব্যবহারকারী শহীদ সাঈদ ( শহীদসাঈদ [24]) কিম্ভূত চুলের রঙের জন্য পরিচিত এক পাকিস্তানী রাজনীতিবিদের ছবি টুইট করেন:

শহীদসাঈদ [25] (শহীদ সাঈদ): শিরীন মাজারির চুল #FAT [19] হতে পারে! twitter.com/afi_alikhan/st… [26]

FPWcoverphoto2 (2)

ফ্যাশন পাকিস্তান উইকের মিম। অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

সামরামুসলিম [27]) একজন আত্মস্বীকৃত জুতো প্রেমিক। একই সঙ্গে বিপণন পেশায় জড়িত। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যাশন পাকিস্তান উইক ঘিরে যেসব আলোচনা সেগুলো তিনি টুইট করেন:

সামরামুসলিম [28]: #এফপিডব্লিউ [29]এর কাছ থেকে উত্তর আশা করছি। এটা #পাকিস্তানের [30] #সোশ্যালমিডিয়ার [31] উপর চমত্কার একটি #কেসস্টাডি [32] হতে পারে। শুভকামনা #ফ্যাশনপাকিস্তান [33]ডিপারওয়ানি [34]

উমাইরমির্জা [35]) “ডিজিটাল যুগে” যোগ দেয়ার মাধ্যমে ফ্যাশন সপ্তাহ উদযাপন করছেন:

উমাইরমির্জা [36]: #এফপিডব্লিউ [29] এর সবচেয়ে ইন্টারঅ্যাকটিভ আয়োজন বোধহয় এবারই হলো! আপনার দেখে মনে হবে যেন আপনি অনুষ্ঠানস্থলেই আছেন! ধন্যবাদ #ফ্যাশনপাকিস্তান [33]। এটাই বোধহয় ডিজিটাল যুগের ভালোবাসা!

পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই অনুষ্ঠান দেখা যাবে। দেখতে চাইলে এখানে ঢু মারুন:

পোস্ট লেখক ফয়সাল কাপাডিয়া ফ্যাশন উইকের সোশ্যাল মিডিয়া এবং লাইভ-স্ট্রিমিংয়ের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।