এই পোস্টটি আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কভারেজের অংশ।
বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় মাঝে মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা অস্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকায় কিছু সামুদ্রিক সীমানা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রয়ে গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বিগত কয়েক বছর ধরে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বাদ পাওয়া প্রতিবেশী চিলি এবং পেরু তাদের সামুদ্রিক সীমানা বরাবর অবস্থিত আনুমানিক ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র নিয়ে ঝামেলায় রয়েছে।
১৯৮০ সালে দেশ দু’টির মধ্যে প্রথম দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু তারা কোন চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি। ২০০৮ সালে পেরু মামলাটি নিয়ে যায় আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে (আইসিজে) যেখানে এর গণশুনানি হয় ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। আইসিজে ২০১৩ সালের মধ্যভাগে বিরোধটির বিষয়ে একটি রুলিং জারি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এদিকে, পেরু শুধুমাত্র মাছ ধরার এলাকায় প্রবেশাধিকারের বিষয়ে ১৯৫০ সালে স্বাক্ষরিত নথি-পত্রের উপর ভিত্তি করে তর্ক চালিয়ে যাচ্ছে এই বলে যে কোনো চুক্তি এখনো সামুদ্রিক সীমানা নির্ধারণ করেনি। লিমা (পেরুর রাজধানী) আরও দাবি করছে যে সামুদ্রিক সীমানা হওয়া উচিৎ স্থলভাগের সীমানা থেকে আড়াআড়ি দক্ষিণ-পশ্চিম বরাবর।
অন্যদিকে, চিলি যুক্তি করছে ১৯৫২ এবং ১৯৫৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির পরে সামুদ্রিক সীমা মেনে নেওয়া হয়েছে। এসব থেকে সিদ্ধান্ত টানা যায় যে সামুদ্রিক সীমানা হওয়া উচিৎ নিরক্ষীয় রেখার সমান্তরাল – সান্তিয়াগো (চিলির রাজধানী) দাবি অনুসারে এই ব্যবস্থাটি পেরু বিগত ৬০ বছর ধরে সম্মান করে এসেছে।
চিলির অবস্থান সমর্থন করে একজন নেটনাগরিক জুয়ান ভার্গাস পেরু এই সপ্তাহে মন্তব্য করেছেন:
১৯৫২ এবং ১৯৫৪ সালের চুক্তি পরিষ্কারভাবে [চিলি এবং পেরু মধ্যে] একটি সামুদ্রিক সীমানা নির্দেশ এবং স্থাপন করে। এগুলোর ইংরেজি অনুবাদ পাওয়া যাবে: http://www.state.gov/documents/organization/58820.pdf”
পেরুর সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী অস্কার মাউরতুয়া দে রোমানা উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক এল মিরাডোর একটি ব্লগ পোস্টে বর্ণনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে:
El Perú y Chile, pese a las diferencias históricas, comparten un destino común. Un fallo equitativo por parte del tribunal permitirá poner fin al “único asunto” fronterizo que genera una sombra en nuestras relaciones bilaterales. Resulta tranquilizador el hecho de que el presidente Humala y el presidente Piñera, 72 horas antes de iniciarse la fase oral hayan hecho una declaración conjunta, en la cual se comprometieron ambos a acatar y ejecutar la sentencia de la Corte Internacional de La Haya.
ঐতিহাসিক পার্থক্য সত্ত্বেও পেরু এবং চিলি একটি সাধারণ পরিণতি ভাগাভাগি করে। আদালতের একটি ন্যায্য রায় আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সমঝোতা করে “অবশিষ্ট একমাত্র সীমানা সমস্যা”টির অবসান ঘটাবে। শুনানি শুরুর ৭২ ঘন্টা আগে (পেরুর) রাস্ট্রপতি হুমালা এবং (চিলির) রাষ্ট্রপতি পিনেরা একটি যৌথ বিবৃতিতে উভয়েই হেগের আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া এবং অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবার ভরসা সৃষ্টি করেছেন।
সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ভূমি পরিবেষ্টিত বলিভিয়া
চিলি এবং পেরু মধ্যে বিবাদ এ অঞ্চলটির চারপাশের দেশগুলোর উপর সরাসরি প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে, বলিভিয়া ঘনিষ্ঠভাবে আইনি প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছে এবং আগেই বলেছে [ইংরেজি ভাষায়] যে এটি চিলিকে ১৮৭৯-১৮৮১ সালে তাদের হারিয়ে ফেলা দু'দেশের মধ্য দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে যাওয়ার পথটি করে দেওয়ার জন্যে আইসিজে’তে একটি মামলা করার পরিকল্পনা করেছে। আইসিজে’তে করা মামলাটির চূড়ান্ত ফলাফল বলিভিয়াকে দীর্ঘদিনের এই সমস্যাটির একটি কূটনৈতিক সমাধান চাওয়ার প্রচেষ্টায় শক্তি যোগাতে পারে।
আইসিজে’র সিদ্ধান্তের কথা বাদ দিলেও, সকল পক্ষের গণতান্ত্রিক এবং কূটনৈতিক বিবৃতিগুলো পক্ষগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে একটি সশস্ত্র সংঘর্ষের ঝুঁকি হ্রাস করেছে।
আরেকভাবে, এটা সংকটটি অবসানের লক্ষ্যে আরো সৃজনশীল সমাধান তৈরী করার ভিত্তি প্রদান করেছে। এতে জিলমার ময়সেস কর্ডোভা প্রস্তাবিত “দ্বিপক্ষীয় অংশগ্রহণের একটি সামুদ্রিক অঞ্চল” রয়েছে। যাতে যুক্তি করা হয়েছে যে:
La controversia marítima de Perú y Chile, puede llegar a una posible solución instaurándose […] la Zona Marítima de Participación Bilateral la cual dividiría los mares de ambos Estados y que sería destinada a la pesca, […] es decir, la explotación de los recursos vivos por embarcaciones de hasta cierto tonelaje de los pueblos del Perú y Chile. Por ejemplo Argentina y Uruguay mantienen un tratado parecido a esta forma que delimita sus mares soberanos.
পেরু এবং চিলির সামুদ্রিক বিবাদটি নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতার নৌযানের মাধ্যমে মাছ ধরা, […] সম্পদ আহরণের উদ্দেশ্যে দুই দেশের মধ্যে সমুদ্র বিভক্ত করে দিয়ে একটি তথাকথিত দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা বা অংশগ্রহণের সামুদ্রিক অঞ্চলের মাধ্যমে একটি সম্ভাব্য সমাধানে পৌঁছাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের মধ্যে তাদের সার্বভৌম জলসীমা সীমায়িত করা একটি চুক্তি রয়েছে।
কর্ডোভা আরো মনে করেন যে এধরনের একটি বিকল্প উভয় দেশকে খনিজ, তেল এবং অন্যান্য সম্পদ অন্বেষণ এবং এসব থেকে উপকার লাভের একটি সুযোগ করে দিতে পারে। তিনি আরো নিশ্চিত যে সামুদ্রিক অঞ্চলটির দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা বলিভিয়ার উপকূল প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষার একটি বিকল্প সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
এই পোস্ট এবং এর স্প্যানিশ, আরবি এবং ফরাসি অনুবাদের দ্বায়িত্ব বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা বিষয় সম্পর্কে নাগরিক কণ্ঠস্বর অন্বেষণের অংশ হিসাবে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (আইএসএন) এর। এই পোস্টট প্রথমে আইএসএন ব্লগে প্রকাশিত, একই ধরনের আরো গল্পের জন্যে এখানে দেখুন।