
কার্টুনিস্ট মানা নেইয়েস্তানি তার এক কার্টুনে প্রদর্শন করছেন ইরানের নেতা আলি খামেনি আহমাদিনেজাদ এবং লারিজানির মাঝে লড়াই-এর মাঝে পড়ে গেছেন। [ মার্দোমাক-এর মাধ্যমে পাওয়া]।
ইরানের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আহমাদিনেজাদ আরো একবার হঠাৎ করে খবরের শিরোনাম হওয়ার বিষয়ে তার প্রতিভার প্রমাণ প্রদান করেন, যখন ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে তিনি সংসদে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সরকারী পদে আসীন কয়েকজন কর্মকর্তার দূর্নীতি উন্মোচন করা ভিডিও প্রদর্শন করেন।
আহমাদিনেজাদ, তার মন্ত্রীসভার শ্রমমন্ত্রীকে অভিশংসনের হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্য সংসদে ভাষণ প্রদান করার সময়, আইনপ্রণেতার সামনে ফাজেল লারিজানির রহস্যময় এক কথোপকথন যুক্ত ভিডিওর প্রদর্শন করে তাকে আক্রমণ করেন। উক্ত ফাজেল ইরানি সংসদের চেয়ারম্যান আলি লারিজানি এবং প্রধান বিচারপতি সাদেঘ লারিজানির ভ্রাতা। তিনি বলেন, ‘সমগ্র পরিবারটি দুর্নীতিগ্রস্ত’।
আহমাদিনেজাদ প্রদর্শিত এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত ফাজেল লারিজানি তেহরানের প্রাক্তন প্রসিকিউটার জেনারেল সাইদ মোরতাজাকে বলছেন যে তিনি পেট্রোকেমিকেল ও অন্যান্য ব্যবসায় গোপন চুক্তিতে তার ভ্রাতাদের যুক্ত করবেন।
উন্মোচন করা ভিডিও
সাংবাদিকসহ অনেক নাগরিকের গ্রেফতারের দায়িত্ব যার উপর বর্তায় সেই মোরতাজাভি নামক ব্যক্তিটি আহমাদিনেজাদের ভিডিও উন্মোচন করার পর ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে গ্রেফতার হন, এদিকে আলি লারিজানি পাল্টা অভিযোগ করেন।
দৃশ্যত শাসক দলের একটি অংশ ইউটিউবকে আশীর্বাদ হিসেবে আবিস্কার করছে (অন্যথায় তা বন্ধ হয়ে যেত) এবং ছদ্মনামে তারা ফাজেল লারিজানির সাথে মোরতাজাভির আলোচনার ভিডিও আপলোড করেছে। সব মিলিয়ে মোরতাজাভির গ্রেফতারের ঘটনার পর এ বিষয়ক মোট চারটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
কে এই মিঃ জি??
ইরানের জনপ্রিয় লিঙ্ক শেয়ার করা সাইট বালাতারিয়ান ব্যবহারকারীরা দূর্নীতির কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত ভিড়িওতে উপস্থিত বাবাক জানজানি নামক এক “ব্যবসায়ীর” উপর মনোযোগ প্রদান করেছে। ইউরোপিয় ইউনিয়ন সরবরাহকৃত ডকুমেন্টে জানজানিকে “ইরানের তেল চুক্তি এবং এই সংক্রান্ত অর্থ স্থানান্তর করার মূল হোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে”। বেশীরভাগ সাইট তাকে জনাব.জি বলে অভিহিত করেছে, কিন্তু ইরান ভিত্তিক (ইরানে নিষিদ্ধ) ওয়েবসাইট বাজতাব বাবাক জানজানি সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করেছে, কোন একজনের মতে সে রাতারাতি কোটিপতিতে পরিণত হয়েছে, যার জন্য তেল ব্যবসাকে ধন্যবাদ।
কার স্বার্থে ন্যায়বিচার?
ফারইয়াদ২২ তার ব্লগে লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]:
প্রধান বিচারপতি সেদাঘ লারিজানি, বছরের পর বছর ধরে শরিয়া আইন এবং আদেশ অনুশীলন করে এসেছে, যার ফলে [চুরির] দায়ে অনেক তরুণের হাত এবং পা কর্তন করা হয়েছে,, আপনি গুগলে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন কতগুলো মানুষের হাত এবং পা কর্তন করা হয়েছে। যদি সকল প্রমাণ সাদেঘ লারিজানির সামনে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে কি তিনি তার ভাইয়ের হাত কর্তন করবেন? সে ক্ষেত্রে কি আজাদি স্টেডিয়ামে তার হাতের আঙুলগুলো ছিন্ন করা হবে? নাকি ইসলামে কোটি টাকা চুরি করা চোরদের জন্য কোন শাস্তির বিধান নেই কেবল ছোটখাট চোরদের উপর সে বিধান রাখা হয়েছে?
আনাদ্রাবাব, লারিজানি ভ্রাতাদের পাঁচটি ছবি প্রকাশ করেছে এবং তাদের লাকি লিউক কমিকস–এর কাল্পনিক চরিত্র ডাল্টন ভ্রাতাদের সাথে তাদের তুলনা করেছে। ব্লগার সেই একই প্রশ্ন করেছেঃ
ফাজলে লারিজানিকে কি শাস্তি প্রদান করা হবে এবং অন্যদের মত তার কি আঙ্গুল কাটা হবে, নাকি ছোটখাট চোরদের মত তাকেও শাস্তি প্রদান করা হবে?