- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

শান্তি মিছিলঃ ‘উত্তর মায়ানমারের সহিংসতা বন্ধ হোক’

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, মায়ানমার (বার্মা), নাগরিক মাধ্যম, প্রতিবাদ, মানবতামূলক কার্যক্রম, মানবাধিকার, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ

গত ২১শে জানুয়ারী তারিখে সন্নাসিসহ ৫০ জনের শান্তি মিছিলকারীদের একটি দল সাবেক রাজধানী ইয়াংগুন হতে পায়ে হেঁটে উত্তর মায়নমারের অন্তর্গত কাচিন শহরের [1] উদ্দেশে তাদের ১,৩০০ কিলোমিটার পথ যাত্রা শুরু করেছে। প্রচারকার্যের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে সরকারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাচিন স্বাধীনতা সৈন্যবাহিনীর (কেআইএ [2]) বিদ্যমান সংঘাত সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং তা বন্ধের দাবি। মিছিলকারীদের প্রায় ২৫ জন আগামী দুই মাসের মধ্যে তারা তাদের গন্তব্য অর্থাৎ লাইজা শহরে অবস্থিত কেআইএ-র হেডকোয়ার্টারে পৌঁছানোর আশা করছেন।

মিয়া থিয়েন লুথুরথান [3] [বর্মী ভাষায়] ব্লগে লিখেছেন যে

…৬০ বছর আগে থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের কারণে জাতি এবং জনগণ অনেককিছুই হারিয়েছে। যুদ্ধটির কারণে অনেক ভোগান্তি হয়েছে; ভোগান্তির শিকার এই শিশু, বয়স্ক এবং নিরপরাধ জনগণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যে এবং আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিষণ্নতার একটি চিহ্ন।

[4]

ইয়াংগুনে শান্তি মিছিলকারীরা। ছবিটি ফেসবুকের ফ্রিডম নিউজ গ্রুপ (বার্মা) থেকে নেওয়া।

গোষ্ঠীটির একজন সংগঠক ইয়ান নাইং তুন বলেন [5] যে

আমরা গাড়ি কিংবা বাইসাইকেলে ভ্রমণ বেছে নিতে পারতাম; কিন্তু যেহেতু আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছি তাই এটার জন্য আমরা আমাদের সহিষ্ণুতার প্রমাণ দিচ্ছি

সরকার গত সপ্তাহে একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও কাচিনরা দাবি করেছে যে যুদ্ধ চলছে। খোন জা [6] নামের কাচিন জাতি গোষ্ঠীর একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন যে

২৩শে জানুয়ারী ২০১৩

লাজা ইয়াং এবং লাইজার মধ্যবর্তী হকা ইয়া-তে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।

৫নং এবং ৬নং সীমান্ত চিহ্নের আইডিপি ক্যাম্পের নিকটবর্তী পাং ওয়ার কাছাকাছি লুপিতে ২টি হেলিকপ্টার অবতরণ করে সৈন্য ও অস্ত্র নামিয়েছে।

পশ্চিম বানমাও (ইরাবতী নদীর পশ্চিম তীর) এবং উত্তর শ্বেগু’র  গাও গয়াই উপত্যকার মোট ১২টি গ্রামের ১৩৩৯ জন গ্রামবাসী আটকা পড়েছে।

এছাড়াও পাদাং হই তার স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেছেন।.

রাষ্ট্রপতি থেইন সেইন এবং ইয়ে হতুত ১৮-০১-২০১৩ তারিখে অনাক্রমণ ঘোষণা করেছেন, তাহলে বার্মার সেনাবাহিনী কেন কায়ারে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং আজকেও পাঙওয়াতে কমপক্ষে ৭টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে… এর মানে কী?…

[7]

শরণার্থী শিশুরা। ন্যাশনাল লীগ ফর অল বার্মিজ রিফিউজিস থেকে নেওয়া চিত্র

২০১১তে সরকার এবং বিদ্রোহী দলের মধ্যে নতুন করে সৃষ্ট সহিংসতায় ৯০, ০০০-এর চেয়েও বেশি বেসামরিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ন্যাশনাল লীগ ফর অল বার্মিজ রি্ফিউজিস [বর্মী ভাষায়] রিপোর্ট করেছে যে এই সংঘর্ষের জেরে কাচিন উদ্বাস্তু শিশুরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না  এবং তাদের একটি শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

সরকারী অনুমতিপত্র না নেওয়ায় এবং আইন ভঙ্গের দায়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ শান্তি মিছিলকারীদেরকে বাঁধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অং মিন নাইং নামের একজন মিছিলকারী কর্তৃপক্ষকে জবাব [8] দিয়েছেন যে

আমরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছি না। আমরা এখানে মায়ানমারের জনগণের শান্তির এবং দেশের ভিতরে যুদ্ধ বন্ধের জন্যে এসেছি… আর একারণেই আমরা সরকারী অনুমতিপত্রের জন্যে আবেদন করিনি; কিন্তু আমরা রাষ্ট্রপতিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অবগত করে তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছি।