গ্লোবাল ভয়েসেস সম্প্রদায় যখন কোন দেশে ভ্রমন করে তখন তাঁরা স্বভাবতই ওই দেশের দু’ একজন ‘জিভিয়ার্স’ (গ্লোবাল ভয়েসেস এর সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি) এর সাথে সাক্ষাত করেন। কিছুদিন আগে গ্লোবাল ভয়েসেসের স্বেচ্ছাসেবক জ্যানেট গুন্টার পেরুর লিমাতে ছিলেন, আমি তাঁর জন্য গতানুগতিক পিসকো সোর পানীয়ের আয়োজন করি এবং গ্লোবাল ভয়েসেসে তাঁর সম্পৃক্ততার বিষয়ে আলোচনা করি।
আমাদের আলাপচারিতার কিছু প্রশ্ন ও উত্তর এখানে দেওয়া হল; বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জ্যানেটের ভিডিও দেখতে পারেন (ইংরেজি সাবটাইটেল সহ)
হুয়ান আরেল্লানো (জে এ): জিভির সাথে আপনি কিভাবে যুক্ত হলেন?
জ্যানেট গুন্টার (জে জি): সারিতা [ পর্তুগীজ ভাষাভাষী দেশসমূহের জিভি সম্পাদক], এবং পূর্ব তিমোর সংক্রান্ত আমাদের ব্লগের মাধ্যমে। আসলে আমরা পূর্ব তিমোরে প্রথমবারের মত সাক্ষাত করি। এরপর আমি এখানে লন্ডনে পাওলার [ জিভি বহুভাষিক সম্পাদিকা] সাথে দেখা করি। জিভি সবসময়েই আমাকে ভালো লোকের সাথে সাক্ষাত করার ও কাজ করার সুযোগ করে দেয়। জিভি পর্তুগীজ ই-মেইল তালিকার মাধ্যমে আমি অনুভব করি যে একই আগ্রহ ও মূল্যবোধের অনেক মানুষ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে। এটা সত্যি আমার জন্য দুষ্প্রাপ্য।

জ্যানেট গুন্টার, ছবি পাট্টামানুচ.কম, অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত।
জে এ: আপনি কি পর্তুগীজ অনুবাদিকা, লেখক অথবা দুভাবেই জিভিতে অবদান রাখতে শুরু করেন?
জেজিঃ লেখক হিসেবে আমি পর্তুগীজ ভাষী আফ্রিকাকে কাভার করি। এরপর লোকজন যখন পর্তুগীজ ভাষায় লিখতে শুরু করলো তখন আমি সেগুলোকে ইংরেজিতে ভাষান্তর করা শুরু করি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমি আমাদের আফ্রিকান লেখকদের লেখা ভাষান্তর করি।
জে এঃ জিভির বিশেষ কাভারেজ “সংকটে ইউরোপ” বিষয়ে আপনার ভূমিকা নিয়ে যদি কিছু বলতেন
জে জিঃ আমি প্রণোদনা দানকারী/ উৎসাহ দানকারী নেতা! তিন বছর ধরে আমি পর্তুগালে বাস করি এবং আমি মনে করি এখানে যা কিছু ঘটছে সে বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ রয়েছে। সারা আর আমি ঠিক করি যে ২০১১ সালে ইউরোপের গভীর সঙ্কটে নাগরিক কণ্ঠের ব্যাপক কাভারেজের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করি এবং এভাবেই আমরা আমাদের বিশেষ কাভারেজ পাতা শুরু করি। লেখক, অনুবাদক এবং এ বিষয়ে আমাদের শ্রোতাদের কাছ থেকে অভাবনীয় সাড়া পাই। এছাড়াও স্প্যানিশ, পর্তুগীজ এবং ফ্রেঞ্চ জিভি সাইটগুলোর সম্পাদকেরাও এতে যুক্ত হন। ইউরোপ জুড়ে সবার সাথে সংযুক্ত হবার জন্য এবং প্রত্যেককে জানার জন্য এটা ছিল সত্যিই আনন্দের একটা ব্যাপার। বর্তমানে আমরা ৬০-৭০ জন লেখক, অনুবাদকেরা পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করি ও যোগাযোগ রাখি।
জে এঃ ইউরোপের (সঙ্কটে) জিভি কাভারেজ উন্নত করার বিষয়ে নতুন কিছু চিন্তা করেছেন কি?
জে জিঃ আমাদের একটা আর এস এস ফিড দরকার এবং সত্যিকার অর্থে আমাদের একজন সম্পাদকও দরকার কিন্তু এ সব কিছুর জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক স্পন্সরশীপ।
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি এন জি ওতে কাজ করেন আবার একই সঙ্গে অন্যান্য ক্ষেত্রেও বিচরন করেন। এ দুই ভিন্নধর্মী জগতের সাথে আপনি কি করে সমন্বয় সাধন করেন?
জেজিঃ আমার টুইটডেক এ ৩০ কলাম লেখার পর “ব্যক্তিগত জীবন” বলতে আর কিছু থাকে না! আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি যে আমার অনেক এক্টিভিস্ট কার্যক্রম- যেমন নেটওয়ার্কিং ও যোগাযোগ কেন্দ্রিক কার্যক্রম আমার পেশাগত জীবনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। “পেশাগত পরিমণ্ডলে” আমার বর্ণনা অনুযায়ী আমাকে অনেক কিছুই আমার পক্ষে সাড়া প্রদান করে যা সত্যিই আমার মত মানুষকে প্রণোদিত করে। এটা ব্যক্তি আমি ও পেশাগত আমিকে সমন্বয় করে। এটা তখনই সত্যি হয় যখন আমি আমার আগ্রহগুলোকে ম্যাপ করি।)
জে এঃ তাহলে দুটো প্রশ্ন আপনার জন্য সত্যিকার অর্থে কী আপনাকে প্রণোদিত করে? এবং বিভিন্ন ধরনের কাজে কি কি চ্যালেঞ্জ আপনি মোকাবেলা করেন?
জে জিঃ কি আমাকে প্রণোদিত করে? প্রথমতঃ অন্যান্য মানুষ! আমি প্রগতিশীল ভালো মানুষদের সাথে কাজ করতে চাই, এছাড়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্রিয়াশীল, সৃজনশীল মানুষের সাথে কাজ করতে চাই। সাম্প্রতিক বিষয়, অকার্যকর শাসন ব্যবস্থা অথবা প্রকৃত জনগণের জন্য অকার্যকর শাসন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থাপনাকে ঝুঁকি নিতে বোঝানো এ সব কিছুই আমার কাছে চ্যালেঞ্জ বলে মনে হয়।
জে এঃ আপনি বলেছেন যে আপনি একজন খারাপ পর্যটক কিন্তু এটা ঠিক যে আপনি অনেক ভ্রমন করেন। এ বিষয়ে যদি কিছু বলেন।
জেজিঃ মূল কারন হল অর্থ বা সম্পদের জোগান এবং তার পর অভিজ্ঞতার জন্য তা ব্যয় করা! আমার নিজের কোন গাড়ি বাড়ি নাই, তেমন বেশি কিছু নাই। আমি কাজের জন্য ভ্রমন করি। আমি ধীর গতির ট্রেনে ভ্রমণ করতেও ভালবাসি এবং দূর-দূরান্তের বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পছন্দ করি।
জে এঃ আপনি কি আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আমাদের জানাবেন?
জে জিঃ অনেক- বলতে গেলে একটা বই হয়ে যাবে! গত শীতে ক্যালিফোর্নিয়ায় আমার পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পশ্চিম টেক্সাসের ভ্রমণ বন্ধ করে আমি বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য লস এঞ্জেলস থেকে ট্রেনে করে নিউ অরলিন্সে ভ্রমন করি। এটা ছিল ধীর গতির, ঐন্দ্রজালিক ও ধ্যানমগ্ন এক সফর। আমি ফাঁকা জায়গা পছন্দ করি কাজেই পশ্চিম টেক্সাস ছিল একটা চমৎকার যাত্রা বিরতি। পরিবার ও বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য স্বল্প সময়ের একাকি ভ্রমণের মত আর কিছুই হতে পারে না, পরিশেষে দীর্ঘদিনের পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা করি। নিউ অর্লিন্স আমার কাছে অনেক কিছু। এর আগে আমি ব্রাজিল ও অন্যান্য দেশে কাজ করি ও ভ্রমণ করি। এরপর আমি নিউ অর্লিন্সে জন্মগ্রহণ করা ৯৪- বছর বয়স্ক দাদাকে দেখতে যাই এবং এর পর দুদিন গাড়ি চালিয়ে আমি আমার জন্মস্থান সেন্ট লুইসে এসে টর্নেডো সতর্কতাকে ফাঁকি দিয়ে বাবার সাথে এ এম রেডিওতে লোক সঙ্গীত শুনতে শুনতে মায়ের হাতের রান্না করা রাতের গরম সুপ খেতে হাজির হই। এ ধরণের ভ্রমণ আমার ভাল লাগে।
এ সব কিছু ছাড়াও বর্তমানে জ্যানেট তাঁর ব্যক্তিগত প্রকল্প: দি রিস্টার্ট প্রজেক্ট এ কাজ করছেন। নিচের এ ভিডিওটিতে এ প্রকল্প সম্পর্কে তিনি আলোচনা করেনঃ
জ্যানেটকে আপনারা এখানে অনলাইন এ পাবেন এবং টুইটারেও (@জ্যানেটগুন্টার) পাবেন।