- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সৌদি এক্টিভিস্ট: “প্রকাশ্য বিচারে তাদের মানসিকতা এবং প্রমাণের অভাব উন্মোচিত”

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সৌদি আরব, আইন, নাগরিক মাধ্যম, প্রতিবাদ, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার

আজ [৮ই ডিসেম্বর, ২০১২] রিয়াদ অপরাধ আদালতে সৌদি আরবের দু’জন বিশিষ্ট মানবাধিকার এক্টিভিস্ট মোহাম্মদ মোহাম্মদ আল-কাহতানি এবং আব্দুল্লাহ আল-হামিদের প্রথম একটি প্রকাশ্য বিচারের অষ্টম শুনানি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ শুনানি অধিবেশনে [1] সরকারী আইনজীবী তাদের পক্ষের জবাব দিয়েছে এবং আজকে আসামীরা অতিরিক্ত সাফাই দিয়েছে। অধিবেশনে তিনজন নারী এবং আল জাজিরা ও স্কাই নিউজের সংবাদদাতাসহ নব্বই জন সমর্থক উপস্থিত ছিল।

অধিবেশনের একেবারে শুরুতে বিচারক “আদালতে মিথ্যা তথ্য প্রদান”-এর জন্যে মহিলা সাংবাদিক ইমান আল-কাহতানি [2]কে গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়। পূর্বের অধিবেশনে তিনি যেখানে কাজ করেন সেই আল-হায়া [3] সংবাদপত্রের একটি সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেখিয়েছিলেন। বিচারক বলেছেন যে আল-হায়া’র সংবাদদাতা উপস্থিত হয়ে তাকে তাকে বলেছেন যে তিনি (ইমান) এখন আর সেখানে কাজ করেন না। তিনি (ইমান) উত্তর দেন যে তিনি আল-হায়ার প্রতিনিধিত্ব করার জন্যে তার উপস্থিতির দাবি করেননি, তবে তিনি তার আইডি (পরিচয়পত্র) তাদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। ড. আল-কাহতানি  বলেছেন যে গত অধিবেশনে বিচারক গোপন পুলিশের দেওয়া জাল টুইট উপস্থাপন করেছেন এবং এজন্যে প্রথমে তার নিজেকে শাস্তি দেওয়া উচিৎ। অধিবেশনের শেষের দিকে একটি দীর্ঘ বিতর্কের পর বিচারক গ্রেপ্তারের আদেশ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন।

আল-হামিদ (বাম থেকে দ্বিতীয়) অধিবেশনের পরে কথা বলছেন। মাধ্যম @আলআজমি০১ [4]

এছাড়াও অধিবেশনের শুরুতে বিচারক আদালত কক্ষের কোনো শৃংখলা ভঙ্গ করা হলে এক্টিভিস্ট দু’জনকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছিলেন। গত শুনানি অধিবেশনে আল-হামিদের মন্তব্যের উষ্ণ করতালি দেয়ার পর এই আদেশটি আসে। ড. আল-হামিদ আপত্তি করলে বিচারক বলেন, “তারা সবাই আপনার সমর্থক!”

বিচারক ড. আল-কাহতানিকে তার কয়েকটি টুইটের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করলে তিনি উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। বিচারক বলেন যে তার কাছে প্রমাণ আছে যে এটা আসলেই তার টুইটার অ্যাকাউন্ট: “এতে আপনার নাম এবং ছবি রয়েছে [5]।”

آرائي واضحة، لكن لا تطلب مني الإفصاح عن حسابي على توتير لأن هذا ينتهك حرية التعبير…أنا لا أعترض من أجل نفسي ولكن من أجل الشباب الذين سيختطفون غدًا من أجل كتابة

আমার মতামতগুলো স্পষ্ট, তাই আমাকে আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট প্রকাশ করতে বলবেন না। কারণ এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা লংঘিত হয়… আমি আমার নিজের সুবিধার জন্যে আপত্তি করছি না। বরং তরুণ জনগণের সুবিধার জন্যে করছি, তা না হলে কিছু লেখা-লেখির জন্যে তাদেরকে অপহরণ করা হবে।

তারপর ড. আল-হামিদ তার সাফাই পড়তে শুরু করেন। “ভুল অভিযোগ”-এর (পূর্ববর্তী অধিবেশন সম্পর্কিত পোস্টে [1] বিস্তারিত রয়েছে) জবাবে তিনি বলেছেন যে এক্টিভিস্টদের বিক্ষিপ্ত করার একই কৌশল ব্যবহার করা “নিপীড়নকারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মী হিসেবে” সরকারী আইনজীবীর জন্যে স্বাভাবিক। “তাদের মানসিকতা এবং দুর্বল প্রমাণ উন্মোচিত করে দেওয়া প্রকাশ্য বিচারটির জন্যে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।” এছাড়াও তিনি বলেন যে একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে ব্যর্থ হওয়া যে কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে “প্রশ্নবিদ্ধ করা আবশ্যক।”

المُلك السعودي جائر لأنه جبري مستبد، أما الملك فقد ورث نظاما مستبدا وأملنا بعد وفاة وزير الداخلية: إن أوفى بوعده بأنه “سيضرب الظلم بسيف العدالة” فهو عادل، وإن أخلف فهو سلطان جائر.

সৌদি রাজত্ব নিপীড়ন এবং দমনমূলক। তবে শুধু রাজা একাই উত্তরাধিকারসূত্রে এই নিপীড়ণমূলক শাসনটি পেয়েছেন এবং আমাদের আশা স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুর পরে [6]। তিনি তার “ন্যায়বিচারের তরবারি দিয়ে অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার” প্রতিশ্রুতি ঠিক রাখলে তিনি ন্যায় পরায়ণ। সেটা না করলে তিনি অন্যায়কারী।

সৌদি বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে তার মতামত:

إن القضاء السعودي لا ينصف الناس حقوقهم، ولا سيما الحقوق السياسية. هذا غير متوقع، لكنه مأمول. وهذا رأي، هل تحاكمون الناس على آرائهم؟

সৌদি বিচারব্যবস্থা মানুষের অধিকার এবং বিশেষ করে তাদের জন্যে রাজনৈতিক অধিকার প্রদান করে না। আমরা এটা প্রত্যাশা করি না, তবে এটা চাই। এটা একটা মতামত। তাদের মতামতের জন্যে আপনি কী জনগণের বিরুদ্ধে মামলা করবেন?

তিনি শেষ করেন এই বলে যে:

التهم سخيفة…لكني رددت ليعرف الناس أسلوب المدعي العام في الغرف المظلمة وتركيزه على الثانويات وابتعاده عن الأساسيات.

অভিযোগগুলো অবাস্তব… তবে আমি জবাব দিচ্ছি যাতে জনগণ দেখতে পারে সরকারী আইনজীবী অন্ধকার [গোপন] আদালতকক্ষগুলোতে কী করেন এবং যে তার মনযোগ আসল বিষয়ে নয়, অপ্রধান বিষয়ে।

এক্টিভিস্ট দু’জন সাফাইগুলো পড়ে শুনালে সরকারী আইনজীবী কয়েকটি মন্তব্য করেন। ড. আল-হামিদকে করতে নির্দেশ করে তিনি বলেন, একজন স্বীকৃত ধর্মীয় পণ্ডিতই কেবল রাষ্ট্রীয় উলেমা পর্ষদের সমালোচনা করতে পারেন, একজন সাহিত্যের স্নাতক নন।

অধিবেশন শেষে আসামীরা আরো সাফাই প্রদানের জন্যে আরো সময় প্রার্থনা করলে বিচারক অস্বীকৃতি জানিয়ে [7] আগামী শনিবার ১৫ই ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি অধিবেশনের তারিখ নির্ধারণ করেন।