আন্তর্জাতিক দলিত সংহতি নেটওয়ার্ক (আইডিএসএন) হিন্দু পত্রিকা, আইবিএন (ভারতীয় সম্প্রচার নেটওয়ার্ক), ইন্ডিয়ান টাইমস এবং কাউন্টারকারেন্টস (প্রতিকূল স্রোত) এর বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে ৭ই নভেম্বর, ২০১২ তারিখে প্রায় ২,০০০ জনতা ভারতের তামিলনাড়ুর ধর্মপুরী জেলার তিনটি দলিত বসতি আক্রমণ করেছে।
সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনূসারে, একজন বান্নিয়ার (শুদ্র) সম্প্রদায়ের নার্সিং ছাত্রী নাথাম কলোনীর আদিদ্রাবিড় (দলিত) সম্প্রদায়ের একজন পুরুষকে বিয়ে করে। এতে মেয়েটির পিতা অপমানিত বোধ করে আত্মহত্যা করলে ক্ষুদ্ধ জনতার দলিত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়। আইডিএসএনের ভাষ্যমতে, বিকালে বিশাল সংখ্যক ক্ষুদ্ধ জনতা এসে দলিত বাড়ি-ঘর লুট-পাট করে পেট্রল বোমা দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। শত শত বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১,৫০০ দলিত এখন আশ্রয় এবং সহায়-সম্বলহীন।
সামাজিক এবং মানবাধিকার কর্মী বিদ্যা ভূষণ রাওয়াত (@ফ্রিটুহিউম্যানিটি) কাউন্টারকারেন্টস-এ বর্ণ ও মর্যাদা শিরোনামের একটি পোস্টে যেমন লিখেছেন:
তামিলনাড়ুর ধর্মপুরী জেলায় দলিতদের বিরুদ্ধে সহিংসতা আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন সামাজিক কুসংস্কারের এবং মর্যাদা আমাদের জাত্যাভিমানের সঙ্গে কতটা ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত তারই একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক স্মৃতিচিহ্ন।
রাওয়াতের ভাষ্য অনুযায়ী, “সংবাদপত্রগুলো সম্পূর্ণ ঘটনা রিপোর্ট করেনি এবং যারা আক্রমণ করেছে তাদের ব্যাপারটি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছে। এটা সম্প্রদায়টিকে সনাক্ত করা জরুরী। এটা পরিষ্কার এবং অবিতর্কিত যে এটি তামিলনাড়ুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে দুটি প্রধান শুদ্র সম্প্রদায় – থেবার এবং বান্নিয়ার – সংঘটিত দলিতদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম সহিংসতা।” সংবিধানে এই ধরনের সহিংসতা অনুমোদিত না হলেও নয়, “দলিতদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সাধারণ আইনের শাসনে উবে যাবে না।”

গুড়িয়া এবং দেশি লালরা দলিত অর্থাৎ অস্পৃশ্য, হরিজনদের অংশ –যারা রাস্তা-ঘাট পরিষ্কারের কাজ করে। ছবি ইয়ান সেইলার। সর্বস্বত্ত ডেমোটিক্স (২৭/৯/২০১১)
সংবাদপত্রগুলোতে এছাড়াও বলা হয়েছে যে এই গ্রামে বান্নিয়ার এবং দলিতদের মধ্যে প্রায় দশটি বিয়ের নজির রয়েছে, যার মানে হলো একটি গোছালো এবং ‘সুসংগঠিত’ আক্রমণের মাধ্যমে এই সহিংসতাটি এই ধরনের ঘটনা বেড়ে যাওয়া হুমকি প্রতিরোধের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আইডিএসএনের মতে, পরিস্থিতি মূল্যায়নের এবং শিশুদের সহায়তা প্রদানের জন্যে এলাকাটি পরিদর্শন করে এসে মানবাধিকার সংস্থা পিপলস ওয়াচ (একটি আইডিএসএন সহযোগী) এর নির্বাহী পরিচালক হেনরী টিপাইনে যেমন বলেছেন, “এটা এপর্যন্ত আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে বেদনাদায়ক জাতিগত পাশবিকতার ঘটনা, যে পুলিশের জ্ঞাতসারে এবং পাহারায় হওয়া একটি অসবর্ণ বিয়ে ৪৩০টি বাড়ি-ঘর আক্রমণের সহিংসতায় পর্যবসিত হয়েছে।”
টুইটারে:
@রাইটসফরএডু (শিক্ষার জন্যে অধিকার): ধর্মপুরীতে #দলিত ছাত্র-ছাত্রীরা বৈষম্যের শিকার @thehindu হয়ে http://thne.ws/WxZYiZ #অন্তর্ভুক্ত শিক্ষা
@মীনাকান্ডস্বামী (মীনা কান্ডস্বামী): ধর্মপুরীতে। #লজ্জা #পাশবিকতা #দলিত
@ধিলীপইয়ো (ধিলীপ জো রামকি): শরথ কুমার: সাম্প্রতিক দলিতদের বিরুদ্ধে ধর্মপুরীর সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছি http://dlvr.it/2WbNK3
@কোট্রাভাই _এন (কোট্রাভাই) অনুসারে, সাথী আথিক্কা এথিরপ্পু কুটিয়াক্কাম ৩০শে নভেম্বর তারিখ বিকেল ৪ টায় মেমোরিয়াল হল এলাকায় একটি বিক্ষোভ সংগঠিত করেছে।
ধর্মপুরীর ঘটনাটি সম্পর্কে সংহতিতে “বাংলা এবং এর বাইরে নব্যউদারনীতিবাদ মোকাবেলা” শিরোনামের একটি পোস্টে অতিরিক্ত তথ্য পেতে পারেন।