সৌদি আরবঃ সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার উইমেন২ড্রাইভ

মানাল আল-শারাইফ একজন সৌদি নারী অধিকার কর্মী, যিনি উইমেন২ড্রাইভকে সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের জন্য সুপরিচিত। নারীদের গাড়ি চালনার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করে ২০১১ সালের মে মাসে তিনি নিজের একটি ভিডিও আপলোড করেন। ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যায় যে তিনি গোপন পুলিশের হাতে নয় দিনের জন্য গ্রেফতার হন। সেই সময়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ,অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো তার মুক্তি চায়।

উইমেন২ড্রাইভ যার পরিবর্তিত নতুন নাম রাইট২ডিগনিটি (মর্যাদার অধিকার), বেশ কিছুদিন ধরে নারীদের গাড়ি চালনার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রচারাভিযান চালাচ্ছে। এর পেছনে মূলত নারীরাই চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে। নারীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অস্বীকৃতির বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোকেও তাঁরা সমর্থন জানিয়েছে। সংস্কারের আশা নিয়ে তাঁরা সৌদি বাদশাহ কিং আব্দুল্লাহর কাছেও আপিল পাঠিয়েছে।

যাহোক, খুব সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত তারা একটি বিষয় স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে নিঃ স্বেচ্ছাচারী রাজতান্ত্রিক সরকারকে দোষারোপ করা। যেটি প্রকৃত অর্থেই একমাত্র পথ যেটি সরকারের জোর করে চাপিয়ে দেয়া বৈষম্যকে দুর করতে সক্ষম।

২৮ সেপ্টেম্বর সানফ্রানসিস্কো মুক্তি ফোরাম ২০১২ তে আল-শরিফ তার বক্তব্যে বলেছেনঃ

আরও গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হচ্ছে, সাধারণ জনগণ যে পরিবর্তন আশা করছে তা এই স্বেচ্ছাচারী রাজতান্ত্রিক শাসকদের দ্বারা মোটেও সাদরে গৃহিত হয়নি। এই পরিবর্তন নাগরিকদের কাছ থেকে আনুগত্য দাবি করে যারা মুক্ত কণ্ঠে স্বীকার করে নিবে যে তাদের বিশ্বাস ও কল্যাণের একমাত্র রক্ষক হবে। […] আমি একটি মিথ্যা বিশ্বাসের মধ্যে ছিলাম যে সৌদি সমাজ উদার হচ্ছে এবং এর ফলে সরকারও নারীদের অনেক বেশী সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় আমার হিসেব ভুল ছিল।

এই মন্তব্যগুলো ৩১ শে আগস্ট প্রকাশকৃত রাইট২ডিগনিটির বিবৃতির সাথে ঐকমত্যে পৌছেছে যা প্রথম নারীদের গাড়ি চালনা থেকে প্রতিরোধের জন্য সরকারকে স্পষ্টভাবে দোষারোপ করেছেঃ

দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সরকার তার নিজস্ব মৌলিক শাসন আইনের সাথে অসঙ্গতি করেছে। রাষ্ট্র বৈষম্যের মূল ভিত্তি হচ্ছে লিঙ্গ, আর এ কারণে পুরুষরা স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার পায় এবং এমনকি তরুণ ও শিশু কর্তৃক গাড়ি চালনা সহ্য করা হলেও নারীদের গাড়ি চালনার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটা খুবই অনৈতিক। এটা দেশটির মৌলিক শাসন আইন সম্মতও নয় ।

সৌদি নারী ও উইমেন২ড্রাইভের সমর্থকদের এবং পরবর্তিতে রাইট২ডিগনিটিকে সংঘবদ্ধ ও সোচ্চার করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একটি বড় ভুমিকা পালন করছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .